Expert Speak Health Express
Published on Nov 29, 2022 Updated 19 Days ago

২০২৩ সালে তার জি২০ প্রেসিডেন্সি-র সুযোগ ব্যবহারের জন্য উন্মুখ ভারত আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্কারকে ত্বরান্বিত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধির ভূরাজনীতি এবং আই এইচ আর সংস্কারে ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সির ভূমিকা
আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধির ভূরাজনীতি এবং আই এইচ আর সংস্কারে ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সির ভূমিকা

ঐতিহাসিক ভাবে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্বেগ রাষ্ট্র দ্বারা রাজনৈতিক পদক্ষেপের সূচনা করেছে। এক দিকে যখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্বেগগুলির মোকাবিলা করার জন্য একটি অপরিহার্য বিষয় হয়ে উঠেছে, তখন রাষ্ট্র এই কাজকে সহজতর করে তোলার ভূমিকা পালন করেছে এবং চিকিৎসা পরিকাঠামো, সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি-সহ নাগরিকদের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধ থেকেছে। বিশ শতকের পর থেকে বিশ্ব প্রযুক্তিগত উন্নতি এবং পণ্য, পরিষেবা ও মানুষের চলাচল বৃদ্ধির সঙ্গে আরও বেশি আন্তঃসংযুক্ত হয়ে পড়েছে। প্রধানত দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বায়নের প্রভাব বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য-প্রশাসনের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। মানুষের চলাচল এ কথাই তুলে ধরে যে, দেশগুলি আগের তুলনায় জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আশংকা  এবং দুর্বলতার সামনে আরও বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে। এটি ভবিষ্যতে যে কোনও আন্তর্দেশীয় জনস্বাস্থ্য উদ্বেগের জন্য একটি সমন্বিত ও সম্মিলিত প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়া নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছে। ১৯৪৮ সালে স্থাপিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) দেশগুলির জন্য তাদের নাগরিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্বেগগুলি নিয়ে আলোচনা এবং সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হয়ে উঠেছে। এই আলোচনার এক গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য প্রবিধান (আই এইচ আর) প্রণয়ন, যা আজও কার্যকর।

আই এইচ আর ১৯৬৯ সাল থেকে আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য উদ্বেগগুলির প্রতিক্রিয়ার একটি অপরিহার্য অংশ। ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি কলেরা, প্লেগ, পীত জ্বর, গুটিবসন্ত, রিল্যাপসিং ফিভার এবং টাইফাসের মতো স্বাস্থ্য সুরক্ষা উদ্বেগগুলি মোকাবিলা করার জন্য এটির সূচনা করেছে। যদিও প্রবিধানগুলি ১৯৭৩, ১৯৮১, ১৯৯৫ এবং অবশেষে ২০০৫ সালে রোগের আন্তর্জাতিক বিস্তারের উত্থান এবং পুনরুত্থানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংশোধন করা হয়েছিল। বছরের পর বছর ধরে মানবসভ্যতা ২০০৯ সালে এইচ১এন১ ইনফ্লুয়েঞ্জা অতিমারি, ২০১৪ সালে বন্য পোলিওভাইরাস ও ইবোলা ভাইরাস এবং সাম্প্রতিকতম কোভিড-১৯ ও মাঙ্কিপক্সের মতো অসংখ্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য উদ্বেগের সম্মুখীন হয়েছে।

সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ অতিমারি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এবং বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বিধিগুলির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরেছে।

এই ধরনের স্বাস্থ্য উদ্বেগ মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বেশ কয়েক বছর ধরে বিদ্যমান থাকলেও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি প্রায়শই এ হেন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে সমস্যার মুখোমুখি হয়। সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ অতিমারি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এবং বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বিধিগুলির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরেছে। যদিও এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই সংস্থাগুলি এবং প্রবিধানগুলি সাইলোগুলিতে কার্যকর নয়, বরং সেগুলি একটি গতিশীল এবং অস্থির ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে কার্যকর। কোভিড-১৯ কর্তৃত্ববাদী নেতাদের দ্বারা শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে, যেখানে চিনের ব্যাপক নজরদারি কৌশল ব্যবহার এবং রুশ সরকার পুতিনের প্রেসিডেন্সির সীমা বাড়ানোর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বন্ধ করা মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

অতিমারির ভূ-রাজনীতি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সহযোগিতার ক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি করেছে, ক্ষমতার ভারসাম্যের খেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিন হয়ে উঠেছে প্রধান শক্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যিক যুদ্ধের প্রভাব এবং ডব্লিউ এইচ ও-র অর্থায়ন বন্ধ করার জন্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমূল নীতিগত সিদ্ধান্তের ফলে তহবিল বন্ধ করা ও ত্যাগ করার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিন দ্বারা ডব্লিউ এইচ ও-র নিয়ন্ত্রণ এবং আই এইচ আর (২০০৫) লঙ্ঘনের তদন্ত করার দাবি তুলেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সহযোগিতার ক্ষেত্রেও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে যেখানে দেশগুলি লিথুয়ানিয়া এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অন্যদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার জন্য টিকাকে একটি কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছে। আই এইচ আর এবং ডব্লিউ এইচ ও চিন-তাইওয়ান দ্বন্দ্বেরও সাক্ষী থেকেছে যেখানে তাইওয়ানের ভূ-রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা – যা ডব্লিউ এইচ ও-র মতো একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার অংশগ্রহণেই স্পষ্ট – একটি সংগ্রামে পরিণত হয়েছে, যদিও কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ে জনস্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে শ্রেষ্ঠ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল তাইওয়ান। যেহেতু স্বাস্থ্য একটি রাজনৈতিক উদ্বেগ, তাই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় স্তরেই ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশের আত্মবীক্ষণ এখানে এই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এবং প্রবিধানগুলির কার্যকারিতার ক্ষেত্রে অপরিহার্য হয়ে ওঠে।

পৃথিবীতে আই এইচ আর-এর সূচনা তখন হয়, যখন সব উদ্যোগকে একজোট করাই ছিল সময়ের দাবি। নির্দিষ্ট জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে একটি সম্মিলিত পদক্ষেপ সম্পদের আন্তঃনির্ভরশীলতা এবং দেশগুলির মধ্যে পুঁজি ও অর্থের প্রবাহকে উত্সাহিত করেছে। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশগুলির মধ্যে কৌশলগত বিন্যাস এবং বিশ্বায়ন ও বিশ্বনাগরিকতার ধারণা বিশ্ব জুড়ে পরিবর্তিত হয়েছে। বেশির ভাগ রাষ্ট্রীয় শক্তি, বিশেষ করে যারা মুক্ত অর্থনীতির সুবিধা এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচার চালিয়েছিল, তারা এখন জনপ্রিয়তাবাদের সঙ্গে জাতীয়তাবাদের যৌথ ধ্বজা ওড়াচ্ছে। স্বল্পমেয়াদি অর্থনৈতিক স্বার্থ-চালিত রাজনৈতিক কর্মসূচির বাস্তব রাজনৈতিক পদ্ধতির ক্ষেত্রে কাজ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিধিগুলি ক্রমবর্ধমান ভাবে খারিজ করা হয়েছে ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছে। সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ অতিমারিও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ‘কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন’-এর প্রবাহকে জোরদার করেছে। অর্থাৎ একটি দেশের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা শুধু মাত্র তার জাতীয় স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, তার অবস্থানের প্রতি অন্যান্য সরকারের প্রতিক্রিয়াকে গ্রাহ্যের মধ্যেই আনা হচ্ছে না। এ ভাবেই বর্ধিত জাতীয়তাবাদ এবং জনপ্রিয়তাবাদ-সহ ভূ-রাজনৈতিক চাপানউতোরের যুগে কৌশলগত বিন্যাস থেকে শুরু করে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য উদ্বেগগুলির প্রতি মনোভাবের পরিবর্তন মানবিক ও অতিমারি সংক্রান্ত সমস্যাগুলি মোকাবিলায় আই এইচ আর-এর সংস্কারকে অপরিহার্য করে তোলে।

বেশির ভাগ রাষ্ট্রীয় শক্তি, বিশেষ করে যারা মুক্ত অর্থনীতির সুবিধা এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচার চালিয়েছিল, তারা এখন জনপ্রিয়তাবাদের সঙ্গে জাতীয়তাবাদের যৌথ ধ্বজা ওড়াচ্ছেন।

বিশ্বায়ন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিধিবিধানের মতো এর ফলাফলের প্রতি অসন্তোষ বৃদ্ধি রাজনৈতিক পরিবেশের পরিবর্তনকে ইন্ধন জুগিয়েছে। সমস্যাগুলি মোকাবিলা এবং নিয়ন্ত্রণে কার্যকারিতার অভাব ডব্লিউ এইচ ও এবং আই এইচ আর-এর কাজকর্ম নিয়ে মানুষের মনে সংশয় বৃদ্ধি করেছে। আই এইচ আর (২০০৫) অনুসারে, দেশগুলিকে এমন কোনও ঘটনা সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অবহিত করতে হবে, যা আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করার মতো জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা তৈরি করতে পারে এবং এই ঘটনাগুলি সম্পর্কে তথ্য যাচাই করার অনুরোধের প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে আর্থ-সামাজিক, জনসংখ্যা এবং স্বাস্থ্যের স্তরের পার্থক্য থাকার কারণে, আক্ষরিক এবং রাজনৈতিক স্বচ্ছতার অভাব আই এইচ আর-এর বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হু-এর ১৯২টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে মাত্র ৪২টিই (২২ শতাংশ) ২০১২ সালের জুন মাস অবধি ধার্য করা অন্তিম সময়সীমার মধ্যে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে। সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থা, সব জাতীয় অংশীদার ও ডব্লিউ এইচ ও-র মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি জাতীয় লক্ষ্যবিন্দু নির্মাণে সামান্য অগ্রগতি এবং ঘটনার প্রতিবেদন সংক্রান্ত স্বচ্ছতার বৃদ্ধি হলেও ১৯২টি দেশের মধ্যে ১২৭টি দেশ ২০১৫ সালের শেষের মধ্যে আই এইচ আর (২০০৫) কোর ক্যাপাসিটি স্ট্যান্ডার্ডের সব মান মেনে চলতে সক্ষম হয়নি। পূর্বোল্লিখিত ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে পরিবর্তনের পাশাপাশি আই এইচ আর সংস্কার আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সঙ্গত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

আই এইচ আর-এর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা এবং এর বাস্তবায়ন স্বীকৃত হয়েছে। তাই তা অর্জনের উপায়গুলিও অন্বেষণ করা প্রয়োজন। একটি সঙ্কট-সমাধানকারী গোষ্ঠী হওয়ার দরুন জি২০-কে অবশ্যই তার ঐতিহ্য অটুট রাখতে হবে এবং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য প্রশাসন সংক্রান্ত সমস্যাগুলি সমাধানের নির্দেশিকা দিতে  হবে। ২০২৩ সালে তার জি২০ প্রেসিডেন্সি-র সুযোগ ব্যবহারের জন্য উন্মুখ ভারত আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্কারকে ত্বরান্বিত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ২০২১ গ্লোবাল হেলথ  সিকিউরিটি ইনডেক্স অনুসারে, আই এইচ আর রিপোর্টিং কমপ্লায়েন্স এবং দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে ১৯২টি দেশের মধ্যে ভারত প্রথম ৪৯টি দেশের মধ্যে রয়েছে। এর নেপথ্যে প্রধান কারণ হল দেশটির স্বল্প মূল্যের সুদক্ষ মানবসম্পদ এবং সুপ্রতিষ্ঠিত উত্পাদন ভিত্তি যা তাকে একটি ঔষধ নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য কূটনীতির আলোচনায় একটি প্রধান শক্তি করে তোলে। ভারত তার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং বহুপাক্ষিক বিন্যাসগত পদ্ধতির কারণে আই এইচ আর-এ সংস্কারের জন্য একটি আদর্শ প্রতিনিধি, যার মধ্যে ‘তার পক্ষে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সমস্ত প্রধান শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করার সময় স্ট্র্যাটেজি হেজিং প্রয়োজনীয়। অর্থনৈতিক ভাবে উন্নয়নশীল এবং ভূ-রাজনৈতিক ভাবে বহুপাক্ষিকতাবাদের সঙ্গে সংযুক্ত একটি দেশ হিসাবে জি২০ প্রেসিডেন্সি ভারতের কাছে ন্যায়সঙ্গত আই এইচ আর সংস্কারগুলিকে সহজতর করে তোলার এক সর্বোচ্চ সুযোগ করে দেবে।

একটি সঙ্কট-সমাধানকারী গোষ্ঠী হওয়ার দরুণ জি২০-কে অবশ্যই তার ঐতিহ্যের সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে  মেনে এবং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য প্রশাসন সংক্রান্ত সমস্যাগুলি সমাধানের নির্দেশিকা প্রদান করতে হবে।

২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিধিগুলির সংস্কারের জন্য ভারতের চেষ্টা তীব্রতর হয়, যখন দেশটি সংস্থার কার্যকারিতা, অর্থায়ন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং কোভিড-১৯ টিকার ‘মুক্ত, সুলভ ও ন্যায়সঙ্গত লব্ধতা সুনিশ্চিত করতে’ হু-এর সংস্কারের জন্য একটি ন’দফা কর্মসূচি পেশ করে। নয় দফা সুপারিশের মধ্যে আই এইচ আর বাস্তবায়নে উন্নতি ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। ভারত সরকার আই এইচ আর বাস্তবায়নের ক্রমাগত স্বেচ্ছামূলক পর্যালোচনা, উন্নয়নশীল দেশগুলিকে সহায়তা প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানো, জনস্বাস্থ্যকে একটি বৈশ্বিক উপকারিতা হিসাবে চিহ্নিত করা এবং স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার আঞ্চলিক ঘোষণার জন্য একটি ব্যবস্থা প্রণয়নের সুপারিশ করে। ১৩তম আই এইচ আর ইমার্জেন্সি কমিটির বৈঠকের বিবৃতিগুলি ভারত সরকারের দেওয়া সুপারিশগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় স্বাস্থ্যের বৈশ্বিক প্রশাসন এবং আই এইচ আর সংস্কারের অংশগ্রহণে এই প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা প্রভাব ফেলেছে। জেনেভায় অনুষ্ঠিত ৭৫তম বিশ্ব স্বাস্থ্য সমাবেশও আই এইচ আর-এ সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে এবং আই এইচ আর-এর (২০০৫) রাষ্ট্রীয় পক্ষগুলির কাছে প্রস্তাবের আহ্বান জানিয়েছে। যেহেতু আই এইচ আর সংস্কারগুলি ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা, তাই ভারতকে জি২০ সদস্যদের মধ্যে বিদ্যমান ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কট সত্ত্বেও কার্যসিদ্ধির জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে এবং একই সঙ্গে ভবিষ্যতের অতিমারি প্রতিরোধে একটি সুদৃঢ় প্রক্রিয়া নির্মাণে অন্য দেশের সঙ্গে নিজেকেও সেই প্রচেষ্টায় সামিল করতে হবে।

মতামত লেখকের নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Aniruddha Inamdar

Aniruddha Inamdar

Aniruddha Inamdar is a Research Fellow at the Centre for Health Diplomacy, Department of Global Health Governance, Prasanna School of Public Health, Manipal Academy of ...

Read More +
Helmut Brand

Helmut Brand

Prof. Dr.Helmut Brand is the founding director of Prasanna School of Public Health Manipal Academy of Higher Education (MAHE) Manipal Karnataka India. He is alsoJean ...

Read More +
Rohit Raj

Rohit Raj

Dr. Rohit Raj is Dentist and Public health professional with expertise in Health Policy. Currently working as a field Investigator at Prasanna School of Public ...

Read More +