Author : Jhanvi Tripathi

Published on Jun 17, 2024 Updated 0 Hours ago

অর্থনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং এর সংস্কারের বিষয়ে অগ্রগতির অভাব শুধুমাত্র এর মধ্যে বিভাজনকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

ডব্লিউটিও একটি বিশৃঙ্খল বাড়ি

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের (এমসি১৩) রেশ শেষ হওয়ার পর শীর্ষ বাণিজ্য সংস্থার এই বছরের দ্বিবার্ষিক বৈঠকে কী বলা হয়েছিল এবং কী বলা হয়নি তা পর্যালোচনা করা এবং প্রতিফলিত করার সময় এসেছে। ডব্লিউটিও এমসি১৩ সম্ভবত একটি ব্যাপক নির্বাচনী বছরে ৬৪টি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় যা যা করতে পারে তা করেছে। এটি এমসি১৩ যে সামান্য অগ্রগতি দেখেছিল তাতে অবদান রাখতে পারে, যদি তেমনটা বলা যেতে পারে। চারটি প্রধান উন্নয়ন, বা অগ্রগতির অভাব, আমাদের এই মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন মূল্যায়ন করতে সাহায্য করতে পারে।

প্রথমত, ডব্লিউটিও সদস্যদের এখনও বহুপাক্ষিক নিয়ম প্রণয়নের ক্ষুধা রয়েছে। আসন্ন দুই বছরের জন্য কাজের কর্মসূচিতে স্পষ্টতা অর্জনের জন্য এমসি১৩-র একদিনের বর্ধিতকরণ দ্বারা এটি নির্দেশিত হয়। কোনও ঘোষণা বা ঐকমত্য ছাড়াই সম্মেলন শেষ করা সহজ হত, যেমনটি সাত বছর আগে এমসি১১-এ দেখা গিয়েছিল। সম্মেলনের সম্প্রসারণ অবশ্যই রীতির বাইরে, এবং বাণিজ্য সমস্যাগুলির জন্য বহুপাক্ষিক সহযোগিতার সামগ্রিক প্রতিশ্রুতি এবং মূল্যের একটি প্রমাণ।


প্রাথমিক গ্যাট-‌এর অভিজ্ঞতা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ইতিহাসে একটি মাইলফলক হলেও তা তথাকথিত গ্লোবাল সাউথের বেশ কয়েকটি দেশের জন্য একটি খারাপ স্বাদ রেখে গেছে।



দ্বিতীয়ত, বৃহৎ উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলি বুলডোজড হতে অস্বীকার করে, যার ফলে একটি উত্তেজনাপূর্ণ ঐকমত্য হয়। প্রাথমিক গ্যাট-‌এর অভিজ্ঞতা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ইতিহাসে একটি মাইলফলক হলেও তা তথাকথিত গ্লোবাল সাউথের বেশ কয়েকটি দেশের জন্য একটি খারাপ স্বাদ রেখে গেছে। তাই, অন্যদের মধ্যে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলি সবুজ বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সুবিধার মানগুলির মতো নন-দোহা ইস্যুজ-‌এর নামে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন বাধাগুলিকে প্রতিহত করছে৷ জয়েন্ট স্টেটমেন্ট ইনিশিয়েটিভস (জেএসআই), যা 'সমমনা' অংশীদারদের মধ্যে নন-দোহা ইস্যুজ নিয়ে আলোচনার জন্য একটি ফোরাম হয়ে উঠেছে, একইসঙ্গে একটি সমস্যা এবং সমাধান। জেএসআই হল ডব্লিউটিও-র মধ্যে একটি ছোট গোষ্ঠী যারা ২০১৭ সালে ডব্লিউটিও –র ১১ তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের সময় একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেছিল, এবং সেই সময়ে বেশিরভাগ সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করতে রাজি ছিল না এমন বিষয়গুলিতে একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ঘোষণা করেছিল।

এটা সমস্যাযুক্ত যে ভারত, যে পরিষেবা বাণিজ্য, ই-কমার্স, বিনিয়োগ ও এমএসএমই-‌গুলির উপর আলোচনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতি, সে এই আলোচনার অংশ নয়৷ জেএসআই-এর প্রতি দেশটির অসন্তোষের শক্ত আইনি ও অর্থনৈতিক ভিত্তি রয়েছে। জেএসআই-এর বৈধতা ক্ষীণ। নিয়ম প্রণয়ন যদি কিছু পক্ষের হাতে যায়, তাহলে তা ডব্লিউটিও-র বাইরেই করা ভালো, এবং জোর ডব্লিউটিও-র সদস্যদের হাত বেঁধে না দেওয়া উচিত, যারা এই বিষয়গুলিতে নিয়মের বাধ্যবাধকতা নিয়ে সন্দিহান। উল্টো দিকে, জেএসআই-‌গুলি যে গতি সংগ্রহ করেছে তা বজায় থাকলে ভারতকে অবশ্যই দুটি জিনিস তাড়াহুড়ো করে করতে হবে — এই বিষয়ে অভ্যন্তরীণ নীতির স্থান পূরণ করতে হবে, এবং তারপরে ডব্লিউটিও-তে আলোচনার জন্য এগিয়ে যেতে হবে। দেশীয় স্বচ্ছতা মুখ্য হবে, যাতে আমরা আন্তর্জাতিক নিয়মের জোয়ারে ভেসে না যাই এবং অপ্রস্তুত অবস্থায় না-‌থাকি।।

তৃতীয়ত, জেনেভায় যা ঘটে তা প্রায়শই বাইরে ব্যাহত হয়। কৃষি ও মৎস্য ভর্তুকির বিষয়গুলি বৈশ্বিক ঢেউয়ের প্রভাব তৈরি করত; এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে বেশ কয়েকটি দেশ তাদের সমর্থন স্থগিত করে দিয়েছে। ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়টি সব সময় একটি সংবেদনশীল বিষয়, বিশেষ করে যখন কৃষির মতো সংবেদনশীল ক্ষেত্র জড়িত থাকে। বেশিরভাগ উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে এই বিষয়গুলিতে বাধ্যতামূলক নিয়ম গ্রহণ করার প্রয়াস স্বাগত হবে না। ই-কমার্সে স্থগিতাদেশের মেয়াদবৃদ্ধি সম্ভবত সর্বনিম্ন, যা আমরা আশা করতে পারি। স্থগিতাদেশ দেশগুলিকে ডিজিটাল ট্রান্সমিশনে শুল্ক বসানোর অনুমতি দেয় না। এটি ডব্লিউটিও-র মধ্যে একটি মেরুকরণের সমস্যা, যেখানে ভারতের মতো দেশগুলি স্থগিতাদেশ তুলে নিতে চায়, কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো অন্যরা স্থায়ী স্থগিতাদেশ চায়।


এটা সমস্যাযুক্ত যে ভারত, যে পরিষেবা বাণিজ্য, ই-কমার্স, বিনিয়োগ ও এমএসএমই-‌গুলির উপর আলোচনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতি, সে এই আলোচনার অংশ নয়৷



বাণিজ্য ও প্রযুক্তির স্থানান্তর সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপে আগ্রহের পুনরুজ্জীবন একটি আকর্ষণীয় অগ্রগতি যা উল্লেখযোগ্য। জুলাই, ২০২৩ সালে আফ্রিকা গ্রুপের জমা দেওয়া একটি প্রস্তাব 
এমসি১৩ ঘোষণায় উল্লিখিত একটি অনুচ্ছেদের জন্য অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছে।

চতুর্থত, কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এখন সময় এসেছে যখন ডব্লিউটিও সদস্যদের বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়াকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য দোষ স্বীকার করা উচিত। এটি একটি বিশৃঙ্খল বাড়ির লক্ষণ। এমসি১৩ সিদ্ধান্তের অংশ হিসাবে প্রকাশিত বিরোধ-মীমাংসা সংস্থা (ডিএসবি) সংস্কারের সিদ্ধান্তটি নিষ্প্রভ। সংস্থাটি আপিল বডি (ডিএসবি-এর স্থায়ী বাহু) হিসাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে, এবং ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে এর কোনও বর্তমান সদস্য নেই৷ এটি একটি অদ্ভুত অচলাবস্থা তৈরি করেছে, কারণ দেশগুলি ডব্লিউটিও-‌তে আপিল ফাইল করা থেকে বিরত হয়নি৷ এটা বিচার বিভাগ ছাড়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাজ করার মতো — সন্দেহজনকভাবে।

ডব্লিউটিও সংস্কারের 'স্টেট অফ প্লে' নথিটি একটি ব্যবস্থাগত সমস্যার কথা বলছে। এর শিরোনাম 'কাজ করার মাধ্যমে সংস্কার', এবং আদর্শ প্রত্যাশা হল ডব্লিউটিও -‌কে আরও প্রতিক্রিয়াসম্পন্ন এবং বৈধ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলি দেখা। এটি দেশগুলির মধ্যে বিভিন্ন স্তরের ডিজিটালাইজেশন সহ ডব্লিউটিও নিয়মগুলির সমন্বয় ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ডব্লিউটিও কাউন্সিলের মুখোমুখি হওয়া আরও কিছু গুরুতর সমস্যা চিহ্নিত করে। যাই হোক, এটি বিভিন্ন কাউন্সিলের অভ্যন্তরীণ কার্যপ্রণালীতে নির্দিষ্ট পদ্ধতিগত পরিবর্তনগুলিকে তালিকাভুক্ত করে, কিন্তু প্রকৃত পরিবর্তনের উল্লেখ এতে নেই।


এর শিরোনাম 'কাজ করার মাধ্যমে সংস্কার', এবং আদর্শ প্রত্যাশা হল ডব্লিউটিও -‌কে আরও প্রতিক্রিয়াসম্পন্ন এবং বৈধ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলি দেখা।



এই নথি অনুসারে, এমসি১২ এবং এমসি১৩-র মধ্যে ডিএসবি-র জন্য সবচেয়ে বড় অগ্রগতি হল "এয়ারগ্রামে হাইপারলিঙ্ক ডকুমেন্ট" করার পদ্ধতিগত ক্ষমতা। ডিএসবি থেকে আপডেট হল যে সময়ের সঙ্গেসঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার ফলে একটি ৫০ পৃষ্ঠার সংস্কার নথির খসড়া তৈরি হয়েছে, যা পঞ্চম পুনর্লেখনের পরিনাম, এবং এখন ষষ্ঠবার লেখার কাজ চলছে। সদস্যরা সময়মতো এ বিষয়ে একমত হতে পারেনি যে কখন এবং কোথায় এমসি১৩ আনুষ্ঠানিক ট্র্যাকে যাবে। ফলে সংস্থাটির সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রকৃত অগ্রগতি কী ঘটেছে তা নিয়ে আমরা অন্ধকারেই আছি।।

সদস্যদের অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে যে কথা বিবেচনা করতে হবে তা হল, প্রক্রিয়াটিকে পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে অগ্রগতির অভাব ডব্লিউটিও-র মধ্যে বিভাজনকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। সদস্যদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে এমন একটি শক্তিশালী আপিল বডি ছাড়া দেশগুলি নতুন, বাধ্যতামূলক, আন্তর্জাতিক নিয়মের প্রতি দায়বদ্ধ হওয়া নিরাপদ বলে মনে করবে না।




জাহ্নবী ত্রিপাঠী অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন অ্যাসোসিয়েট ফেলো

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.