-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও আঞ্চলিক পারমাণবিক নিরাপত্তাকে কেন্দ্র করে অনিশ্চয়তার মাঝেও দক্ষিণ কোরিয়া পারমাণবিকীকরণের প্রচেষ্টায় অটল রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের অন্বেষণ এমন এক প্রাচীন বিতর্ক, যা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বিবাদের প্রতিটি পর্যায়ে উত্থিত হয়। তবে গত কয়েক বছরে দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র সঞ্চয় করার আহ্বান বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জনসাধারণ এবং বুদ্ধিজীবী উভয়ের মধ্যে বিষয়টি বৃহত্তর সমর্থন কুড়িয়েছে। উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান যুদ্ধবাজ আচরণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে এই পরিবর্তন ঘটছে, যা সকল আলোচনার অংশ হয়ে উঠেছে। এই নতুন চালিকাশক্তি হল দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাড়তে থাকা অবিশ্বাস।
প্রাথমিক বছরগুলিতে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনায় এই অবিশ্বাস দৃশ্যমান ছিল, যা ২০২৩ সালে ওয়াশিংটন ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরের মাধ্যমে চূড়ান্ত হয়েছিল। সেখানে উভয় পক্ষই ‘পারমাণবিক ‘প্রতিরোধ’ বিষয়ে গভীর, সহযোগিতামূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এই বিষয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে এবং প্রতিদিনই তা জোরদার হচ্ছে। অতএব, এই বিতর্ককে রূপদানকারী অন্তর্নিহিত চাপানউতোরের দরুন দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিকীকরণের সম্ভাবনা ও পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া যে চ্যালেঞ্জগুলির সম্মুখীন হতে পারে… তা বাস্তবসম্মত ভাবে মূল্যায়ন করা জরুরি।
পারমাণবিক অস্ত্রের অন্বেষণ ও কৌশলগত যুক্তি
দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের আকাঙ্ক্ষা নতুন নয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই যুদ্ধের ভয়াবহ আতঙ্ক সিওলকে তাড়া করে এসেছে। ১৯৫০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার অ্যাচেসন লাইনের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সিওল সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধারাবাহিক ভাবে নিরাপত্তা উদ্বেগের সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কোরিয়ায় মার্কিনবাহিনী (ইউএসএফকে) প্রত্যাহারের জন্য মার্কিন প্রশাসনের প্রচেষ্টা।
দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগের মূলে রয়েছে পরিত্যক্ত হওয়ার সম্ভাবনা, যা তার কূটনৈতিক ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত নয়।
তার পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগের মূলে রয়েছে পরিত্যক্ত হওয়ার সম্ভাবনা, যা তার কূটনৈতিক ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত নয়। একটি অ-পারমাণবিক রাষ্ট্র হওয়ায় কোরিয়ানদের মনের গভীরে এই মৌলিক অথচ সুপ্ত প্রশ্নটি উঠে এসেছে: ‘প্যারিসের জন্য কি আমেরিকা নিউ ইয়র্ককে ত্যাগ করবে?’ এই ধরনের সন্দেহ এই ধারণা থেকে উঠে আসে যে, উত্তেজনা বৃদ্ধি না পেলে ওয়াশিংটনের স্বার্থ আরও ভাল ভাবে চরিতার্থ হয়। অন্য কথায় বললে, একটি প্রচলিত অস্ত্রভিত্তিক প্রতিক্রিয়া আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের ঊর্ধ্বে উঠতে বাধা দেবে। তাই পিয়ংইয়ং দক্ষিণ কোরিয়ার উপর পারমাণবিক হামলা চালালেও আনুপাতিক পারমাণবিক প্রতিশোধের পরিবর্তে প্রচলিত অস্ত্রের মাধ্যমেই প্রতিশোধ নেওয়াই যুক্তিসঙ্গত।
এ ছাড়াও, প্রতিশোধ হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্রের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপর রাজনৈতিক চাপ এত বেশি হবে যে, সেই মুহূর্ত থেকেই প্রেসিডেন্ট দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন: অর্থাৎ মার্কিন শহর, নিরীহ বেসামরিক নাগরিক ও বিশ্বব্যাপী মার্কিন ঘাঁটিগুলিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না কি এমন একটি মিত্রকে রক্ষা করার চেষ্টা চালানোর জন্য এই সব কিছু ত্যাগ করবেন, যা আদৌ মার্কিন ভূখণ্ডের অংশ নয়। এ ভাবে সিওল প্রত্যাশিত সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এবং জনসাধারণের মধ্যে এই ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে যে, পারমাণবিক হামলার কারণে অক্ষম দক্ষিণ কোরিয়া একটি অ-পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে সঠিক ভাবে প্রতিশোধ নিতে পারবে না এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিওলকে পাল্টা হামলা না করার অনুরোধ জানিয়ে উত্তেজনা রোধ করার চেষ্টা করবে।
আর একটি কৌশলগত যুক্তি হল দক্ষিণ কোরিয়ার অ-পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে ক্লান্তি। ১৯৯৩ সালে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করার আগে থেকেই ১৯৬০-এর দশক থেকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ক্ষমতা অর্জনের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। আরও উল্লেখ্য যে, ১৯৯১ সালে সিওলের সম্মতিতে এবং কোরিয়ান উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের যৌথ ঘোষণায় আমেরিকা ইতিমধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সমস্ত মার্কিন কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
তীব্র বিরোধিতা দক্ষিণ কোরিয়াকে পারমাণবিক শক্তি হয়ে ওঠা থেকে স্থায়ী ভাবে রুখতে যথেষ্ট নয় এবং অ-প্রসারণকারী প্রশাসনের অদ্ভুত দ্বিমুখী মনোভাব সম্পর্কে তেমন আলোচনাও হচ্ছে না।
কোরীয় উপদ্বীপে এই পারমাণবিক ভারসাম্যহীনতা সত্ত্বেও পারমাণবিক পরিসরটি ত্রুটিপূর্ণ প্রকৃতির। এমনকি নিউক্লিয়ার কনসালটেটিভ গ্রুপ (এনসিজি) দক্ষিণ কোরিয়ানদের নিরাপত্তা উদ্বেগ সামলাতে সক্ষম নয়। তীব্র বিরোধিতা দক্ষিণ কোরিয়াকে পারমাণবিক শক্তি হয়ে ওঠা থেকে স্থায়ী ভাবে রুখতে যথেষ্ট নয় এবং অ-প্রসারণকারী প্রশাসনের অদ্ভুত দ্বিমুখী মনোভাব সম্পর্কে তেমন আলোচনাও হচ্ছে না। ওয়াশিংটনের প্রক্সি পারমাণবিক প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতি তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে, যদি তারা পারমাণবিক প্রতিশোধকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করে।
অবশেষে সিওল এখন স্বীকার করে নিয়েছে যে, তারা যে বৈপরীত্যমূলক মনোভাবকে এত দিন আমল করেনি: জোটগুলির পারমাণবিক ক্ষমতায়ন হ্রাস করার জন্য মার্কিন পদক্ষেপের বিপরীতে একে অপরকে নিজেদের অত্যাধুনিক পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার সম্পর্কে হুমকি দিতে থাকা স্বৈরশাসকদের তরফে উদ্ভূত অস্তিত্বগত হুমকির মুখে দাঁড়িয়েও মিত্রদেশগুলির হাত নিরাপত্তার শৃঙ্খলে বাঁধা। এই কারণেই এখন ক্রমবর্ধমান সংখ্যক কোরিয়ান বিশ্বাস করেন যে, সিওল বর্তমান পারমাণবিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারে, যদি ক্রমশ খারাপ হওয়া আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং বহুবিধ পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন কর্তৃত্ববাদী প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেশটি পারমাণবিক শক্তি সঞ্চয় করতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়া-মার্কিন জোটের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ও পরমাণুচালিত আক্রমণাত্মক সাবমেরিন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র-সহ একটি শক্তিশালী নৌবাহিনীর মতো অন্যান্য সম্পূরক শক্তির সঙ্গে পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন দক্ষিণ কোরিয়া আরও সক্ষম মিত্র হয়ে উঠবে। নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে সজ্জিত দক্ষিণ কোরিয়া কখনও জোট ভাঙার কারণ হতে পারে না। বরং এটি জোটকে আরও সশক্ত করবে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় পারমাণবিক আলোচনার বিভিন্ন মত
২০১০ সালের মাঝামাঝি থেকে ব্যাপক জনমতের বিবেচনা করেই কোরিয়ার দু’টি মতামতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, দেশটির অস্ত্র বৃদ্ধি করা উচিত এবং উচিত নয়। উভয় পক্ষই সক্রিয় ভাবে আলোচনা চালাচ্ছে যে, দক্ষিণ কোরিয়ার ভবিষ্যতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা উচিত কি না।
ট্রাম্পবাদের উত্থানের আগে এমনটা বলা যেতে পারে যে, অস্ত্র বিস্তার রোধ মতাদর্শের তরফে করা পারমাণবিক অস্ত্র বিরোধী যুক্তিগুলি পারমাণবিক আলোচনায় সামগ্রিক ভাবে প্রাধান্য পেয়েছিল। একই রকম কারণ ও সম্ভাবনার দরুন বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র সংগ্রহ সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা মনে করেন কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিতে পারে, দেশটিকে উত্তর কোরিয়ার মতো একটি বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে, দক্ষিণ কোরিয়া-মার্কিন জোটের অবসান ঘটতে পারে, অস্ত্র বিস্তার বিরোধী প্রশাসনের পতন ঘটাতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তার দুর্দশা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সহযোগী হিসেবে কোরিয়ান নৌবাহিনী ব্লু সি-তে সক্রিয় অভিযানের জন্য আরও উন্নত সম্পদব্যবস্থা বেছে নেয়, যার ফলে তার পরবর্তী প্রজন্মের ডুবোজাহাজগুলির প্রপালশন সিস্টেমের জন্য এলইইউ-এর (কম-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম) প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়।
এ দিকে, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধি না করার সম্ভাবনা ক্ষীণ এবং ইউরোপের বিরুদ্ধে রাশিয়ার পারমাণবিক বলপ্রয়োগ ও চিনের তীব্র পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধির কারণে গত ১০ বছরে উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরে পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধির মতাদর্শটি সশক্ত হয়েছে। এই মতাদর্শে বিশ্বাসী ক্রমবর্ধমান সংখ্যক বিশেষজ্ঞ যুক্তি দেন যে, অ-প্রসারণবাদীদের নিষেধাজ্ঞার যুক্তি অত্যধিক অতিরঞ্জিত। তাঁরা আরও মনে করেন যে, দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র রাষ্ট্রকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন মিত্র হিসেবে বিশ্ব মঞ্চে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে সাহায্য করবে এবং জাতীয় মর্যাদার এই পরিবর্তন দক্ষিণ কোরিয়া-মার্কিন জোটকেও উন্নত করবে। এ ছাড়াও, এই মতাদর্শে বিশ্বাসীরা বাস্তবসম্মত ভাবে উপলব্ধি করেন যে, পারমাণবিক অস্ত্র হ্রাস করার চুক্তির লক্ষ্যের প্রতি আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃত ও কার্যত পারমাণবিক অস্ত্রসম্পন্ন রাষ্ট্রগুলির উদাসীন মনোভাবের কারণে, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মতো পারমাণবিক-উচ্চাকাঙ্ক্ষী রাষ্ট্রগুলির শত্রুতার জন্য এবং অউকাস কাঠামোর (অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব) অধীনে অস্ট্রেলিয়াকে পরমাণু-চালিত আক্রমণাত্মক ডুবোজাহাজ সরবরাহের কারণে পারমাণবিক বিস্তার চুক্তি ভেঙে পড়েছে। নিরাপত্তার দিক থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার আত্মরক্ষার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা ইতিমধ্যেই ন্যায্য বলে বিবেচনা করে অস্ত্র বৃদ্ধি সংক্রান্ত মতাদর্শে বিশ্বাসীরা আশা করেন যে, পারমাণবিকীকরণের পরে সিওলকে উত্তর কোরিয়া ও চিনের তুলনায় কৌশলগত স্বাধীনতা ও নমনীয়তা দেওয়া হবে।
দুই পক্ষের মতাদর্শের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে উত্তপ্ত বিতর্কের পর একটি নতুন চিন্তাধারার আবির্ভাব ঘটেছে যা এই দুই মতাদর্শের মাঝেই পরিস্থিতিকে আরও বিচক্ষণতার আলোকে বিচার করার পরামর্শ দেয় এবং তা হল নিউক্লিয়ার ল্যাটেন্সি। পারমাণবিক ল্যাটেন্সি বলতে পারমাণবিক থ্রেশহোল্ড রাষ্ট্র হিসেবে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা অর্জনকে বোঝায়। দক্ষিণ কোরিয়া ও তার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপন্ন পারমাণবিক বর্জ্য সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। সুতরাং, দেশটিকে পারমাণবিক বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ সুবিধার মাধ্যমে তা পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ এবং পুনর্ব্যবহার করতে হবে। সহযোগী হিসেবে কোরিয়ান নৌবাহিনী ব্লু সি-তে সক্রিয় অভিযানের জন্য আরও উন্নত সম্পদব্যবস্থা বেছে নেয়, যার ফলে তার পরবর্তী প্রজন্মের ডুবোজাহাজগুলির প্রপালশন সিস্টেমের জন্য এলইইউ-এর (কম-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম) প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। তাই পারমাণবিক ল্যাটেন্সি হল সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত বিকল্প যা শিল্প ও নিরাপত্তা চাহিদা পূরণ করতে পারে, দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তি গবেষণা ও উন্নয়নকে টিকিয়ে রাখতে পারে। অন্য দু’টি মতাদর্শের তুলনায় ল্যাটেন্সি বিকল্পটি ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম খরচ হবে বলেও মনে করা হচ্ছে। কারণ খরচের বিষয়টি পারমাণবিক-বিরোধী বিশেষজ্ঞদের উদ্বিগ্ন করেছে এবং এতে অস্ত্র-গ্রেড পারমাণবিক ওয়ারহেডের মালিকানা বা উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত নয়।
আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রগুলির পারমাণবিক অগ্রগতি রোধ করতে না পারায়, দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক আলোচনা আরও বেশি করে বিতর্কের সম্মুখীন হয়েছে।
উপসংহার
এই অঞ্চলের আগ্রাসী প্রতিবেশীরা পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী ও এ ক্ষেত্রে তাদের উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছে। অন্য দিকে মার্কিন মিত্ররা সেই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী নয়। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রগুলির পারমাণবিক অগ্রগতি রোধ করতে না পারায়, দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক আলোচনা আরও বেশি করে বিতর্কের সম্মুখীন হয়েছে। মার্কিন মিত্রদের এখন ওয়াশিংটনের কৌশলগত নমনীয়তা সম্পর্কে অভিযোগ রয়েছে, যা কেবল মিত্রদের আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে বাধা দেয়।
দক্ষিণ কোরিয়া জানে যে, কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কটের সময় আমেরিকা কী ভাবে উন্মত্ত ভাবে এগিয়ে গিয়েছিল। দক্ষিণ কোরিয়ানরা মনে করেন যে, উত্তর-পূর্ব এশিয়াতেও একই সঙ্কট ঘনীভূত হচ্ছে। উপদ্বীপে ভৌগোলিক ভাবে অবস্থিত অন্য যে কোনও রাষ্ট্র আগেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারত।
দক্ষিণ কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশীদের সরাসরি হুমকির মুখে পড়েছে। বেশির ভাগ কোরিয়ান মনে করেন যে, পারমাণবিক অস্ত্র সর্বোত্তম বিকল্প বা সমাধান নয়। তবে এ বিষয়ে এই ঐকমত্যই রয়েছে যে, পারমাণবিক অস্ত্র অনিবার্য। সিওল স্থিতাবস্থা সহ্য করেছে এবং প্রতিবেশীদের পারমাণবিক অস্ত্র থাকার পরেও কয়েক দশক ধরে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্তই রয়েছে। তবে অবনতিশীল আঞ্চলিক পারমাণবিক নিরাপত্তা এখন এত সুদৃঢ় হয়েছে যে, ধৈর্যচ্যুতি ঘটাই স্বাভাবিক। তাই দক্ষিণ কোরিয়াও একেবারে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে।
ডেহান লি আরওকে ফোরাম ফর নিউক্লিয়ার স্ট্র্যাটেজির (আরওকেএনএস) গবেষক।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Daehan Lee is a researcher of the ROK Forum for Nuclear Strategy (ROKFNS). As a Korean security scholar, his analyses and op-eds were published by ...
Read More +