-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
দক্ষিণ আফ্রিকার জি২০ সভাপতিত্বকে অবশ্যই ‘সংস্কারের আগুন’ জ্বালাতে হবে এবং ঋণ ত্রাণ, জলবায়ু অর্থায়ন ও বাণিজ্য ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতিগুলিকে বাস্তব কর্মে পরিণত করতে হবে।
এই নিবন্ধটি রাইসিনা এডিট ২০২৫-এর অংশ।
আন্তন চেখভের মতে, একটি সাহিত্যিক আখ্যানের মধ্যে থাকা প্রতিটি উপাদানকে একটি উদ্দেশ্য অবশ্যই পূরণ করতে হবে। তিনি লিখেছিলেন, ‘যদি প্রথম অধ্যায়ে আপনি দেয়ালে একটি পিস্তল ঝুলিয়ে রেখে থাকেন, তা হলে পরবর্তী অংশে সেটি চালনা করতে হবে। অন্যথায়, বন্দুকটি সেখানে রাখা উচিত নয়।‘ ‘রিফর্ম গান’ বা ‘সংস্কারের মশাল’ দীর্ঘকাল ধরে বিশ্ব শাসনে পদক্ষেপ করার জন্য প্রস্তুত থাকলেও তা অব্যবহৃতই থেকেছে। এটি বহুপাক্ষিকতার রঙ্গমঞ্চে একটি উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা জি২০-র মতো প্রতিষ্ঠানগুলি দ্বারা স্বীকৃত হলেও অব্যবহৃতই রয়েছে।
২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকা জি২০ সভাপতিত্ব গ্রহণের পর, সংহতি, সমতা ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যবস্থাকে পুনর্নির্ধারণ করার জন্য সাহসী ও রূপান্তরমূলক পদক্ষেপের প্রয়োজন… এটিই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জি২০ সভাপতিত্বের কেন্দ্রীয় ভাবনা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপ্লবী ও বর্ণবাদ-বিরোধী কর্মী স্টিভ বিকো একবার বলেছিলেন, ‘মহান শক্তিগুলি বিশ্বকে শিল্পগত ভাবে রূপান্তরিত করলেও মহান উপহারটি আসবে আফ্রিকার মাটি থেকেই এবং তা হল বিশ্বকে আরও মানবিক চেহারা প্রদান করা।’ এই সভাপতিত্ব গ্লোবাল সাউথের জন্য সংস্কারের নেতৃত্ব দেওয়া এবং বহুমেরুকৃত বিশ্বের জন্য বহুপাক্ষিকতাকে পুনর্গঠনের একটি সুযোগ দর্শায়। এর পাশাপাশি আধিপত্যের চেয়ে মানবতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার এক কর্মসূচি পরিচালনা করারও সুযোগ করে দেয়।
২০০৭ সালে জি২০-র সভাপতিত্ব এবং ক্লেইনমন্ডে জি২০ ফিন্যান্স মিনিস্টারস অ্যান্ড সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক গভর্নর্স বৈঠক আয়োজনের পর জি২০-র নেতৃত্ব দেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে নতুন বিষয় নয়। শাসন সংস্কারের উপর জোরালো আলোচনার ফলে ‘শেয়ারিং-ইনফ্লুয়েন্স, রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড নলেজ’ শীর্ষক একটি চূড়ান্ত বিবৃতি প্রকাশিত হয়, যেখানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কোটা বণ্টন এবং নজরদারি ব্যবস্থা উন্নত করার আহ্বান জানানো হয়। এটি উদীয়মান বাজারগুলির জন্য মুদ্রাভাণ্ডার বৃদ্ধি রেখার মতো ধারণাগুলিও চালু করে। আফ্রিকার চ্যালেঞ্জগুলিকে আরও ভাল ভাবে বোঝার জন্য ২০০৭ সালের উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও পরবর্তী জি২০ বৈঠকগুলি ন্যায়সঙ্গত প্রতিনিধিত্বের জন্য পদ্ধতিগত পরিবর্তনকে বাস্তবায়ন করেনি। বছরের পর বছর ধরে জি২০ সদস্যরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও প্রতিটি সভাপতিত্ব কোনও পদক্ষেপ না করেই পিছিয়ে গিয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার কৌশলগত স্তম্ভ এবং বৈশ্বিক নেতৃত্বের শূন্যতা
জাতীয় স্বার্থ, আফ্রিকার কর্মসূচি, দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা ও বহুপাক্ষিকতা - এই চারটি কৌশলগত বৈদেশিক নীতি স্তম্ভ দ্বারা পরিচালিত দক্ষিণ আফ্রিকা একটি পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক শৃঙ্খলার মাঝেই জি২০-র সভাপতিত্ব গ্রহণ করে। এক সময় বহুপাক্ষিকতার রক্ষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল, সেগুলির দায়িত্ব থেকে এখন নিজেই পিছু হটছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও ২০২৫ সালের ২০-২১ ফেব্রুয়ারি জোহানেসবার্গে জি২০ বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক বয়কট করেন এবং এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ‘আমেরিকা-বিরোধিতা’র উল্লেখ করেন, যা বৃহত্তর মার্কিন বিচ্ছিন্নতাকেই দর্শায়। এই বয়কট এবং ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপুঞ্জে রাষ্ট্রদূত ডরোথি শিয়া-র মন্তব্য অর্থাৎ বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলির জন্য মার্কিন সমর্থন পুনর্মূল্যায়ন করার হুমকি ক্রমবর্ধমান বিভেদকেই প্রকাশ্যে নিয়ে আসে। ইতিমধ্যে, জি২০ অমীমাংসিত সঙ্কটের সঙ্গে যুঝছে এবং সেগুলি হল নিম্ন-আয়ের দেশগুলির উপর ঋণের বোঝা চাপানো, অপূর্ণ জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি এবং সংহতিকে কর্মে রূপান্তরিত করার বিষয়ে ব্যর্থতা।
জি২০-র উপর ইন্দোনেশিয়া (২০২২), ভারত (২০২৩) এবং ব্রাজিল (২০২৪) কর্তৃক অধিষ্ঠিত নিজ নিজ সভাপতিরা এই মঞ্চের মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বরকে আরও জোরদার করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রচেষ্টার ভিত্তি স্থাপন করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে এই গতিকে কাজে লাগাতে হবে এবং জি২০-কে ব্যবহার করে শাসন ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি মূল্যায়ন করার পাশাপাশি ‘ন্যায্যতা’কে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করতে হবে। ন্যায্যতার অর্থ নেহাতই দান করা নয়, বরং সম্পদ উপলব্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে ন্যায্যতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রতিনিধিত্ব এবং পদ্ধতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতাকেই দর্শায়। মার্কিন প্রত্যাহার প্রয়োজনীয়তাকে আরও তীব্র করে তোলে - যদি গ্লোবাল নর্থ ব্যর্থ হয়, তা হলে গ্লোবাল সাউথকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য, জাতীয় ঐক্য সরকারের সপ্তম প্রশাসনের কৌশলগত অগ্রাধিকারগুলি - দারিদ্র্য হ্রাস, রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি - বহুপাক্ষিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে ঋণগ্রস্ত দেশগুলির অর্থনৈতিক অস্থিরতা, আস্থার ক্ষয় থেকে শাসনের শূন্যতা এবং বিশ্বব্যাপী বিশৃঙ্খলার মতো নিষ্ক্রিয়তার ঝুঁকিগুলি স্পষ্ট।
আফ্রিকায় জি২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন রাষ্ট্রপুঞ্জের ২০৩০ সালের স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) চূড়ান্ত পর্যায়ের সঙ্গে সমাপতিত হয়েছে। আফ্রিকার এসডিজি লক্ষ্যমাত্রার বেশির ভাগই অপূর্ণ থেকে যেতে পারে, যদি না মহাদেশটি ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় আনুমানিক ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করতে পারে। তাই যদি ‘সংস্কার মশাল’ জ্বালানোর প্রয়োজন হয়ে থাকে, তা হলে আদর্শ সময় এখনই।
সংস্কারে জি২০-র ভূমিকা: প্রতিশ্রুতি থেকে পদক্ষেপ
জি২০ দীর্ঘদিন ধরে ঋণ ত্রাণ, জলবায়ু অর্থায়ন, বাণিজ্য সমতা… এই বিশাল প্রতিশ্রুতিগুলির মঞ্চ হয়ে উঠলেও এর ইতিহাস নিষ্ক্রিয়তায় পরিপূর্ণ। ২০০৭ সালে, প্রেসিডেন্ট থাবো এমবেকি এটিকে ‘বিশ্বব্যাপী আর্থিক কাঠামোর একটি কেন্দ্রীয় শক্তি’ বলে অভিহিত করলেও তাঁর দ্বারা চিহ্নিত কাঠামোগত চ্যালেঞ্জগুলি অমীমাংসিতই রয়ে গিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কোটা সংস্কার ও বিশ্ব ব্যাঙ্ক পুনর্গঠনের মতো প্রতিশ্রুতিতে পরিপূর্ণ ‘রিফর্ম গান’টি এখনও অকার্যকর। দক্ষিণ আফ্রিকার ২০২৫ সালের জি২০ সভাপতিত্ব হল বাগাড়ম্বরকে বাস্তব ফলাফলে রূপান্তরিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ প্রদান করবে, যার মধ্যে রয়েছে ঋণ স্থায়িত্ব, জলবায়ু অর্থায়ন এবং সবুজ শিল্পায়ন।
বিশ্বব্যাপী দৃশ্যপট পরিবর্তন হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চাদপসরণ ও গ্লোবাল সাউথের ক্রমবর্ধমান প্রভাব একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থার ইঙ্গিত দেয়। ২০২৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগে শেষ জি২০ প্রেসিডেন্সি হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ‘রিফর্ম গান’ চালু করার জন্য গোষ্ঠীটিকে একত্রিত করতে হবে এবং প্রতিশ্রুতিগুলিকে কর্মে রূপান্তরিত করতে হবে। ভারতীয় জি২০ সভাপতিত্বের সময় দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থনের মাধ্যমে আফ্রিকান ইউনিয়নের পূর্ণ জি২০ সদস্যপদ এই সুযোগকে আরও বৃদ্ধি করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে এখন আধিপত্যের চেয়ে মানবতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি সংস্কারমূলক কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল ব্রেটন উডস প্রতিষ্ঠান। আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্ককে আজকের বিশ্বের প্রতিফলন ঘটাতে পুনরায় ভারসাম্য বজায় রাখা অর্জন করতে হবে, আফ্রিকা ও উদীয়মান বাজারের প্রভাব বাড়ানোর জন্য ভোটদানের অংশ সমন্বয় করতে হবে, ন্যায্য ঋণের শর্ত সুনিশ্চিত করতে হবে এবং বিশ্বাসযোগ্য ঋণ ত্রাণের প্রস্তাব দিতে হবে। জলবায়ু অর্থায়নকে প্রতিশ্রুতির ঊর্ধ্বে উঠে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত সমস্যার সম্মুখীন দেশগুলির জন্য শক্তিশালী তহবিল ও স্বচ্ছ প্রতিবেদন গড়ে তুলতে হবে।
কর ন্যায়বিচার আর একটি জরুরি অগ্রাধিকার। অবৈধ আর্থিক প্রবাহের কারণে আফ্রিকা প্রতি বছর ৮৮.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কর থেকে বঞ্চিত হয়, যা ২০৩০ সালের স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে অবশ্যই রাষ্ট্রপুঞ্জের ট্যাঙ্ক কনভেনশনকে কাজে লাগাতে হবে এবং এই ক্ষতি রোধ করতে ও স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য একটি বৈশ্বিক কাঠামো তৈরি করতে হবে।
গ্লোবাল সাউথের উপর ঋণের চাপ রয়েছে, যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত কর্মসূচির চেয়ে ঋণকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়। দক্ষিণ আফ্রিকাকে অবশ্যই ব্যাপক ত্রাণ, ন্যায্য ক্রেডিট রেটিং এবং কম মূলধন ব্যয়ের উপর জোর দিতে হবে। এই সংহতি দেশগুলিকে তাদের ঋণদাতাদের চেয়ে তাদের জনগণের উপর বিনিয়োগ করার ক্ষমতা প্রদান করে।
বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থার সংস্কারও প্রয়োজন। বৈষম্যের কারণে দুর্বল হয়ে পড়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা-কে (ডব্লিউটিও) স্থিতিশীল উন্নয়ন সমর্থন করার জন্য বিকশিত হতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার উচিত বাণিজ্য নিয়ম পুনর্গঠন করা, সম্পদ সমৃদ্ধ দেশগুলিতে সবুজ শিল্পায়নের সুবিধা সুনিশ্চিত করা এবং কম কার্বন বৃদ্ধির বিকাশে জি২০-র নেতৃত্ব দেওয়া।
নিষ্ক্রিয়তার ফলে উল্লেখযোগ্য মূল্য চোকাতে হয়। বৈশ্বিক শক্তি বহুমুখীকরণের দিকে ঝুঁকে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থবির সংস্কারগুলি গ্লোবাল সাউথের প্রতি অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। এই হতাশা ১৯৫৫ সালের বান্দুং সম্মেলনকে প্রতিধ্বনিত করে, যেখানে ২৯টি এশীয় ও আফ্রিকান দেশ ঔপনিবেশিকতাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল। মানবাধিকার, গুণমান ও হস্তক্ষেপ না করার নীতিগুলি দক্ষিণ আফ্রিকার জি২০-র ভাবনার সঙ্গে অনুরণিত হয়। অর্থনৈতিক ও শাসন ব্যবস্থা পুনর্নির্ধারণের জন্য গ্লোবাল সাউথকে আফ্রিকার এই সভাপতি পদকে কাজে লাগাতে হবে।
২০২৫ সালে স্টেট অফ দ্য নেশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছিলেন, ‘জি২০ হল আফ্রিকা ও বাকি গ্লোবাল সাউথের চাহিদাগুলিকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচির প্রথম সারিতে তুলে ধরার এক অনন্য সুযোগ। আমাদের জি২০ সভাপতিত্ব দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য বৃহত্তর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীল উন্নয়নের দিকে প্রচেষ্টা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এক মূল্যবান সুযোগ প্রদান করে।’ এর জন্য সাহসী পদক্ষেপের প্রয়োজন: এসডিজি-কেন্দ্রিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা, ঋণ ত্রাণ নিয়ে দর কষাকষি করা, আফ্রিকান কন্টিনেন্টাল ফ্রি ট্রেড এরিয়ার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ ব্যবহার করা। কয়েক দশকের বৈষম্য দ্বারা পরিচালিত ‘রিফর্ম গান’কে অবশ্যই কক্ষচ্যুতকারী ধরনগুলিকে ব্যাহত করার জন্য কার্যকর হতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার সবুজ শিল্পায়নের উপর একটি জি২০ কাঠামোর উদ্দেশ্যে গৃহীত প্রচেষ্টার লক্ষ্য হল শক্তি স্থানান্তর সুনিশ্চিত করা, যাতে সম্পদ সমৃদ্ধ দেশগুলি কেবল তাদের শোষকদের জন্যই নয়, বরং নিজেরাও লাভবান হতে পারে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সভাপতিত্ব জি২০-র প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ উপস্থাপন করে। ব্রেটন উডস সংস্কার, কর ন্যায়বিচার, ঋণ সমাধান ও বাণিজ্য সমতার উপর ‘রিফর্ম গান’ প্রয়োগ করে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকে আরও ন্যায়সঙ্গত ভারসাম্যের দিকে চালিত করতে পারে এবং এই সব কিছুই দর্শায় যে, জি২০-র প্রাসঙ্গিকতা নেহাত শব্দের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা নির্ভর করে ফলাফলের উপরেও।
জি২০ ও তার পরেও পদক্ষেপ: কোনও দেশই একক নয়
জি২০ ‘দেজা ভু চক্র’র ঝুঁকি তুলে ধরছে এবং ২০০৭ ও পরবর্তী বছরগুলিতে কোনও অগ্রগতি ছাড়াই বিতর্ক ও প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তি ঘটছে। ২০২৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এই সমস্যার অবসান ঘটাতে হবে এবং সংস্কারমূলক কর্মসূচি পরিচালনা করতে হবে। কোনও দেশই একা এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করতে পারে না। আর তাই সংহতিই হল জি২০-র শক্তি। বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থার কাঠামোগত ত্রুটি, ঋণের ফাঁদ, অসম বাণিজ্য ও জলবায়ু দুর্বলতার জন্য সম্মিলিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। দক্ষিণ আফ্রিকার জি২০ সভাপতিত্বের ভাবনাই - দুর্যোগ স্থিতিস্থাপকতা, ঋণের স্থায়িত্ব, জলবায়ু অর্থায়ন ও খনিজ সুবিধা - গ্লোবাল সাউথের কর্মসূচিকে প্রতিধ্বনিত করে।
২০২৫ সালের ৩০ নভেম্বর শেষ হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার সভাপতিত্ব হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় নেতৃত্ব গ্রহণের আগে গ্লোবাল সাউথ নেতৃত্বের একটি চক্রের চূড়ান্ত পদক্ষেপ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে অবশ্যই কর্মসূচির উত্তরাধিকার রেখে যেতে হবে এবং তা হল প্রতিশ্রুতি পূরণকারী একটি জি২০, একটি সুষম বিশ্ব ব্যবস্থা এবং বিকো-র দৃষ্টিভঙ্গি ধারণকারী বহুপাক্ষিকতা। এটি সংস্কারের আবেদন নয়, বরং দাবি বলা চলে। তাই ‘রিফর্ম গান’-এর বারুদ ভর্তি, আগুন জ্বালার অপেক্ষা এবং লক্ষ্যও স্পষ্ট। সেই লক্ষ্য হল আফ্রিকার হাতে তৈরি মানবিক একটি বিশ্ব ব্যবস্থা।
লুখানিও নির থাবো মাবেকি ফাউন্ডেশনের চিফ অপারেটিং অফিসার।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.