Author : Manish Vaid

Published on Jun 02, 2024 Updated 0 Hours ago

যুগান্তকারী প্রধানমন্ত্রী সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনা উদ্যোগ, যা ভারতের আরটিএস ক্ষমতাকে আরও প্রসারিত করবে, তা ভারতকে ২০৭০ সালের মধ্যে তার নেট-শূন্য লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারে

সৌর সমাধান: ছাদকে সবুজ শক্তি কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা

‌এমন একটি বিশ্বের কল্পনা করুন যেখানে বাড়িগুলি সূর্যের শক্তির প্রাচুর্য দ্বারা  চালিত হয়, যেখানে গ্রিডের উপর নির্ভরতা হ্রাস পায়, এবং যেখানে প্রতিটি ছাদ পরিবর্তনের অনুঘটক হয়ে ওঠে। কল্পনা করুন আপনার বিদ্যুতের বিল কমানো, স্থিতিশীলতা গ্রহণ করা, এবং আপনার বৈদ্যুতিক গাড়িতে জ্বালানি দেওয়া — সবকিছুই পিএম সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনার দৌলতে হয়ে যাবে। কিন্তু এই সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে কতগুলি প্রশ্ন দীর্ঘস্থায়ী হয়: রুফটপ সোলার (আরটিএস) কি সত্যিই আমাদের শক্তির ভূচিত্রে বিপ্লব আনতে পারে? উপকার কি চ্যালেঞ্জের থেকে বেশি হবে?‌ এই প্রবন্ধটি এই যুগান্তকারী উদ্যোগের প্রতিশ্রুতি এবং ক্ষতির কথা তুলে ধরে, এবং একটি উজ্জ্বল, সবুজ ভবিষ্যতের পথকে আলোকিত করে।

২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ মন্ত্রিসভা
পিএম সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনা অনুমোদন করেছে, যা একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এর লক্ষ্য হল মোট ৭৫,০২১ কোটি ভারতীয় রুপি খরচে এক কোটি পরিবারে আরটিএস প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে প্রতি মাসে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ প্রধানমন্ত্রীর উদবোধন করা এই প্রকল্পটি সরাসরি মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে উল্লেখযোগ্য ভর্তুকি প্রদান করবে, এবং জনগণের উপর কোনও খরচের বোঝা যাতে না-‌চাপে তা নিশ্চিত করতে ব্যাপকভাবে ছাড়যুক্ত ব্যাঙ্ক ঋণ প্রদান করবে, যার ফলে ১৫,০০০-১৮,০০০ ভারতীয় রুপি বার্ষিক সঞ্চয় হবে৷


কল্পনা করুন আপনার বিদ্যুতের বিল কমানো, স্থিতিশীলতা গ্রহণ করা, এবং আপনার বৈদ্যুতিক গাড়িতে জ্বালানি দেওয়া — সবকিছুই পিএম সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনার দৌলতে হয়ে যাবে।



এই দূরদর্শী উদ্যোগটি ভারতের ২০৩০ সালের মধ্যে
৫০০ গিগাওয়াট (জিডব্লিউ) নন-ফসিল ফুয়েল-ভিত্তিক শক্তি অর্জনের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যের সঙ্গে সমন্বিত, এবং এটি হল নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিশ্বের বৃহত্তম সম্প্রসারণ পরিকল্পনা। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারতের সৌর শক্তি ক্ষেত্রে যে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে তার সঙ্গে এটি নির্বিঘ্নে সারিবদ্ধ।

ভারতের সৌর শক্তি ক্ষেত্র উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে:‌ গত সাত বছরে ইনস্টলেশন ২.৬৩ জিডব্লিউ থেকে ৪৯ জিডব্লিউ-তে বৃদ্ধি পেয়েছে। সৌর শক্তির ক্ষমতার দিক থেকে এটি বিশ্বব্যাপী চতুর্থ স্থানে রয়েছে, যা গত নয় বছরে ৩০ গুণ বেড়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭৪.৩০ গিগাওয়াটে পৌঁছেছে। দেশের আনুমানিক সৌর শক্তির সম্ভাবনা হল চিত্তাকর্ষক ৭৪৮ গিগাওয়াট। সামগ্রিকভাবে, ভারতের সৌর শক্তি ক্ষেত্রটি দেশের স্থিতিশীলতার অনুসারী শক্তির লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত আবাসিক ক্ষেত্রে প্রায় ২.৭৩ গিগাওয়াট (চিত্র ১) প্রতিষ্ঠিত (‌ইনস্টলড)‌ ক্ষমতাসহ ভারত আরটিএস শক্তির জন্য তার বিশাল সম্ভাবনাকে ব্যবহার করছে, যা ২৫ কোটি পরিবারের জন্য ৬৩৭ গিগাওয়াটে দাঁড়াবে বলে অনুমান করা হয়েছে। ২০২৩ অর্থবছরের শেষ নাগাদ ভারতের আবাসিক আরটিএস ক্ষমতা মোট ১১ গিগাওয়াটের মধ্যে প্রায় ২.৭ গিগাওয়াটে পৌঁছেছে, যা ২০২২ অর্থবছরে ২ গিগাওয়াট থেকে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখায়।


ভারতের সৌর শক্তি ক্ষেত্র উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে:‌ গত সাত বছরে ইনস্টলেশন ২.৬৩ জিডব্লিউ থেকে ৪৯ জিডব্লিউ-তে বৃদ্ধি পেয়েছে।



বিগত ৫ বছরে ভারতে আবাসিক আরটিএস ইনস্টলেশনে ধীরে ধীরে উন্নতি হয়েছে। কনসালট্যান্ট ব্রিজ টু ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্ট অনুসারে, ২০২০ অর্থবছর পর্যন্ত
১০০-২০০ মেগাওয়াটের প্রায় স্থবির বার্ষিক বৃদ্ধির পরে পরিবারের আরটিএস ক্ষেত্র একটি উল্লেখযোগ্য উজ্জীবনের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। ২০২২ থেকে ২০২৩ অর্থবছর পর্যন্ত, আবাসিক আরটিএস ক্ষমতা বছরে প্রায় ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ক্রমবর্ধমান খরচ-সংরক্ষণের চাহিদা, ক্রমবর্ধমান উপভোক্তা সচেতনতা ও শক্তিশালী সরকারি সমর্থনের মতো কারণ দ্বারা চালিত হয়েছে।

চিত্র ১: ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ভারতের ক্ষেত্রগত ইনস্টল করা সৌর ছাদের ক্ষমতা, (এমডব্লিউ)

সূত্র: স্ট্যাটিস্টা ২০২৪

এর আগে ভারতের জওহরলাল নেহরু জাতীয় সৌর মিশন ২০১০ সালে চালু হয়েছিল, এবং এর লক্ষ্য ছিল ২০২২ সালের মধ্যে ১০০ গিগাওয়াট সৌর শক্তি উৎপন্ন করা। এর মধ্যে ৬০ গিগাওয়াট ইউটিলিটি-স্কেল ইনস্টলেশনের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল, আর ৪০ গিগাওয়াট ছাদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।

উল্লেখযোগ্যভাবে,
আরটিএস প্রোগ্রামের উদ্বোধনী পর্বটি ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫-এ শুরু হয়েছিল আবাসিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রণোদনা ও ভর্তুকি প্রদান করে। উপরন্তু, অর্জন-সংযুক্ত প্রণোদনা সরকারি খাতে প্রসারিত করা হয়েছে। এটি অনুসরণ করে, ২০২২ সালের মধ্যে ৪০ গিগাওয়াট ক্রমসঞ্চিত ক্ষমতা অর্জনের একটি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নিয়ে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রুফটপ ফেজ-২ চালু করা হয়েছিল৷ যাই হোক, ডিসেম্বর ২০২৩ নাগাদ, আরটিএস-এর ক্রমসঞ্চিত ইনস্টলেশন ক্ষমতা মাত্র ১০.৫ গিগাওয়াটে উন্নীত হয়েছিল৷ তা সত্ত্বেও, এটি এখনও ৩১ মার্চ ২০১৯ পর্যন্ত রেকর্ড করা ১.৮ গিগাওয়াট থেকে একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি চিহ্নিত করেছে।

২০২৬ সালের মধ্যে আবাসিক ক্ষেত্রের জন্য ৪ গিগাওয়াট লক্ষ্যমাত্রার ক্ষমতা সহ
রুফটপ ফেজ-২ প্রোগ্রামটি বিভিন্ন রাজ্যের বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে প্রায় ৩.৫৭ গিগাওয়াট ক্ষমতা বরাদ্দ করেছে। এই প্রোগ্রামের অধীনে তাদের জন্য ২৯১৭.৫৯ কোটি ভারতীয় রুপি বিতরণ করা হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত রিপোর্ট করা ৪.৩ লক্ষ উপকারভোগীর কাজে লেগেছে।


আরটিএস প্রোগ্রামের উদ্বোধনী পর্বটি ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫-এ শুরু হয়েছিল আবাসিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রণোদনা ও ভর্তুকি প্রদান করে।


যদিও  রুফটপ ফেজ-২ বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য প্রণোদনা ও ভর্তুকি প্রদান করে, এটি সমস্ত পরিবারের জন্য বিদ্যুতের সুযোগ ও ক্রয়ক্ষমতার সমস্যাটিকে সম্পূর্ণরূপে সমাধান করেনি। 
পিএম সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনা আরও বেশি পরিবারে সৌর শক্তির সুবিধা প্রসারিত করতে চায়, বিশেষ করে বিদ্যুতের সুযোগ ও সামর্থ্যের ক্ষেত্রে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পটির লক্ষ্য আবাসিক ক্ষেত্রে ৩০ গিগাওয়াট রুফটপ সোলার ক্ষমতা যুক্ত করা, ১০০০ বিইউ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা, এবং ২৫ বছরে
৭২০ মিলিয়ন টন সিওটু সমতুল্য নির্গমন কমানো। ২০২৫ সালের মধ্যে ছাদে সৌর প্যানেলের মাধ্যমে এক কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি একটি দূরদর্শী উদ্যোগ, এবং তা ভারতে সৌর শক্তির ব্যাপক গ্রহণে বাধা সৃষ্টিকারী চ্যালেঞ্জগুলিকে স্বীকার করেছে। প্রকল্পটি নিম্নলিখিত চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে।

১। কম ভোক্তা সচেতনতা: সরকার সৌর শক্তির সুবিধা এবং প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ভোক্তাদের শিক্ষিত করার জন্য ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচার চালাচ্ছে। আবেদনের পর্যায়ক্রমিক পদ্ধতিসহ প্রকল্প সম্পর্কে ব্যাপক তথ্য প্রদান করা হচ্ছে।
২। নেট মিটারিং অনুমোদন এবং প্রশাসনে বাধা: এই প্রকল্পটি রাজ্যগুলির নেট-মিটারিং প্রবিধানগুলি সম্পর্কে বেশ কয়েকটি উদ্বেগেরও সমাধান করেছে। প্রকল্পটি নেট মিটারিং অনুমোদনকে এবং গ্রাহকদের জন্য প্রক্রিয়াটিকে সহজ করে। একবার একটি সোলার প্ল্যান্ট ইনস্টল হয়ে গেলে
নেট মিটারিংয়ের জন্য আবেদন করা সহজ, কারণ তা ডিসকম পরিদর্শন-পরবর্তী একটি কমিশনিং শংসাপত্র তৈরির দিকে চালিত করে। কিছু রাষ্ট্রীয় প্রবিধানের বিপরীতে, এই প্রকল্পটি ন্যূনতম কিলোওয়াট সীমাবদ্ধতা আরোপ করে না, যার ফলে আরও পরিবারের প্রবেশযোগ্যতা বাড়ায়। উপরন্তু, এটি বিতরণ কোম্পানির কাছে উদ্বৃত্ত শক্তি বিক্রি করে, যুক্তিসঙ্গত লাভ নিশ্চিত করে, এবং খরচ ও অবদানকে অনুকূল করে বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে দেয়।
৩। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য ভর্তুকি বিতরণে বিলম্ব: প্রকল্পটি
ভর্তুকি বিতরণও সুগম করেছে। কমিশনিং রিপোর্ট পাওয়ার পরে, গ্রাহকরা সুবিধামত পোর্টালের মাধ্যমে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ এবং একটি বাতিল চেক জমা দিতে পারেন৷ ভর্তুকি ৩০ দিনের মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৪। সীমিত আকর্ষণীয় অর্থায়নের বিকল্প:
কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পের অধীনে রুফটপ সোলার ইনস্টলেশনের জন্য ৬০ শতাংশ ভর্তুকি (সারণী ১) দেয়। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ ১০ বছরের মধ্যে পরিশোধযোগ্য ঋণের মাধ্যমে প্রদান করা হবে, যা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিক্রির মাধ্যমে পরিশোধ করা সম্ভব। পরিশোধ হয়ে গেলে পরিবারগুলি বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে অতিরিক্ত আয় করতে পারে। মন্ত্রকের রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্র উদ্যোগ রাজ্যগুলিতে বাস্তবায়ন তত্ত্বাবধান করবে সম্ভাব্য সহায়ক/বিশেষ উদ্দেশ্যে বাহনের মাধ্যমে। এই আর্থিক সহায়তা এই প্রকল্পটিকে সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।


সারণি ১: বাড়ির জন্য উপযুক্ত ছাদের সোলার প্ল্যান্টের ক্ষমতা

Average Monthly Electricity Consumption (units) Suitable Rooftop Solar Plant Capacity (Kw) Subsidy Support (INR)
0-150 1-2 30,000/- to 60,000/-
150-300 2-3 60,000/- to 78,000/-
> 300 Above 3 78,000/-


উৎস: প্রধানমন্ত্রী – সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনা, ভারত সরকার

এই ভর্তুকিগুলি ২৭.৮৬ শতাংশ থেকে ৪২.৮৬ শতাংশ পর্যন্ত ইনস্টলেশন খরচ (ক্যাপেক্স) হ্রাস করতে সাহায্য করবে, যেমনটি সারণি ২ তে বিভিন্ন খরচের স্তরে দেখানো হয়েছে।

সারণি ২: মাসিক খরচের উপর ভিত্তি করে সৌর ইনস্টলেশন খরচের উপর ভর্তুকির প্রভাব

Monthly Consumption Solar Plant Capacity (kW) Subsidy (INR) Assumed installation Cost (Capex) (INR) Cost Reduction (%)
0-150 units 1  30,000    70,000 42.86
150-300 units 3  78,000 2,10,000 37.14
>300 units 4  78,000 2,80,000 27.86



৫। আবাসিক সৌর ইনস্টলেশন সম্পর্কিত গুণমানের উদ্বেগ: প্রকল্পটি শুধুমাত্র নিবন্ধিত ভেন্ডরদের দ্বারা ইনস্টলেশনের অনুমতি দিয়ে গুণমান বজায় রাখে। তারা বিভাগ/বৃত্ত স্তরে আবেদন করতে পারে, এবং আবেদন জমা দেওয়ার তারিখ থেকে এক মাসের মধ্যে 
তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা হবে।

যাই হোক, যদিও প্রকল্পটি অনেক উদ্বেগকে সম্বোধন করে, এখনও দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা থাকতে পারে। তবুও, এই উদ্বেগগুলি সমাধানের জন্য প্রোগ্রামটিতে একটি কাঠামোগত প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

১। সরকারি সহায়তার উপর নির্ভরশীলতা: কার্যক্ষমতার জন্য সরকারি ভর্তুকির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল হওয়া সত্ত্বেও এই ভর্তুকি কমে গেলে প্রকল্পের  ভবিষ্যৎ স্থায়িত্ব অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয়। যাই হোক, প্রত্যাশিত প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও আয়তনজনিত অর্থনীতির কারণে ভর্তুকি-‌নির্ভরতা কমতে থাকায় এটি সৌর গ্রহণকে অনুঘটন করে। অধিকন্তু, গ্রিডে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ বিক্রয়কে উৎসাহিত করা ভর্তুকি নির্বিশেষে স্বাধীন আয়ের প্রস্তাব দেয়। একটি মসৃণ ভর্তুকি স্থানান্তর নিশ্চিত করার জন্য ধীরে ধীরে হ্রাস, স্পষ্ট যোগাযোগ এবং চলতি গবেষণা বিনিয়োগের জন্য ইনস্টলেশন খরচ কমানো এবং প্রাপ্তিযোগ্যতা উন্নত করা প্রয়োজন।
২। গ্রিড সংযুক্তিকরণ চ্যালেঞ্জ: যদিও প্রকল্পটি গ্রিডের স্থিতিস্থাপকতা, বিতরণ করা উৎপাদন, সর্বোচ্চ চাহিদা ব্যবস্থাপনা, কম ট্রান্সমিশন লস, এবং গ্রিড সমর্থন পরিষেবাগুলিকে রুফটপ সোলার সিস্টেমে ব্যবহৃত উন্নত ইনভার্টারগুলির মাধ্যমে উন্নত করে, এটি সংযুক্তিকরণ চ্যালেঞ্জও উপস্থাপন করে। এর মধ্যে রয়েছে সৌর বিদ্যুৎ বিরতি, দ্বিমুখী প্রবাহের জন্য অপ্রতুল গ্রিড পরিকাঠামো, ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত বাধা, এবং উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ বিক্রয় শুল্কের ক্ষেত্রে নিয়ামক জটিলতা। সফল সৌর একীকরণের জন্য ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পাশাপাশি গ্রিড আধুনিকীকরণ, উন্নত ব্যবস্থাপনার কৌশল, এবং ন্যায্য প্রবিধানে বিনিয়োগ প্রয়োজন।
৩। রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতি: ছাদের সৌর প্যানেলের দীর্ঘ আয়ু এবং কার্যক্ষমতার জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবুও বাড়ির মালিকদের সচেতনতার অভাব থাকতে পারে। তাই এই প্রকল্পটি ভেন্ডরদের প্রশিক্ষণের উপর জোর দেয় এবং মানসম্পন্ন ইনস্টলেশন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিবন্ধিত ভেন্ডরদের নিযুক্তিকে উৎসাহিত করে। ভোক্তা সচেতনতামূলক উদ্যোগের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে। অন্তর্নির্মিত প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়া টেকসই পরিবারের সুবিধার জন্য নিম্নমানের ইনস্টলেশন সনাক্তকরণ এবং সংশোধন করতে সহায়তা করতে পারে, এবং চলতি পর্যবেক্ষণ ইনস্টলেশনের গুণমান নিশ্চিত করে।
৪। পরিবেশগত উদ্বেগ: পরিবেশবান্ধব হলেও ছাদের সৌর শক্তি কিন্তু প্যানেল উৎপাদন, নিষ্পত্তি ও পুনর্ব্যবহার সম্পর্কে উদ্বেগ উত্থাপন করে। প্রকল্পটি পরিবেশগত মান মেনে চলা নিশ্চিত করতে বিক্রেতা নিবন্ধন এবং প্রশিক্ষণের উপর জোর দেয়। যদিও সরাসরি পুনর্ব্যবহার ও নিষ্পত্তির দিকে নজর দেওয়া হয় না, প্রকল্পটি এগুলির গুরুত্ব স্বীকার করে। এই ক্ষেত্রে, জাতীয় নীতিগুলি সঠিক নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিতে পারে, এবং ভোক্তা সচেতনতা প্রচেষ্টা পরিবেশগত স্থায়িত্বকেও উন্নত করে। ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির লক্ষ্যে সৌর প্যানেলের পরিবেশগত প্রভাব প্রশমিত করা যেতে পারে।

আরটিএস এইভাবে ২০৭০ সালের মধ্যে তার নেট-শূন্য লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভারতের কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭৪.৩০ গিগাওয়াট সৌর শক্তি-‌সহ ভারত বিশ্বব্যাপী চতুর্থ স্থানে রয়েছে। প্রকল্পটি ৩০ গিগাওয়াট রুফটপ সোলার যোগ করার পরিকল্পনা করেছে, যার লক্ষ্য ১০০০ বিইউ বিদ্যুৎ এবং ২৫ বছরে ৭২০ মিলিয়ন টন সিওটু নির্গমন হ্রাস করা। ভর্তুকি নির্ভরতা এবং গ্রিড সংযুক্তিকরণের মতো চ্যালেঞ্জগুলি রয়ে গিয়েছে, কিন্তু সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান এবং সুবিন্যস্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর সমাধান করা যায়। প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও একটি পরিচ্ছন্ন, স্থিতিশীল শক্তির ভবিষ্যতে ভারতের রূপান্তরের জন্য আরটিএস গুরুত্বপূর্ণ।



মনীশ বৈদ অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের জুনিয়র ফেলো

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.