-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
২০২০-র দশকের গোড়ার দিকে বিশ্ব অর্থনীতির অর্থনৈতিক পতনের মধ্যে রাশিয়ার অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য স্থিতিস্থাপকতা এবং বৃদ্ধি প্রদর্শন করেছে
এই প্রবন্ধটি ‘রাইসিনা এডিট ২০২৫’ সিরিজের অংশ
পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০২২ সালে জিডিপি ১.২ শতাংশ হ্রাস পেলেও রাশিয়ার অর্থনীতি ২০২৩ ও ২০২৪ সালে আনুমানিক ৪.১ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই বছরগুলিতে রাশিয়া ১৬,০০০-এরও বেশি আর্থিক, বাণিজ্যিক, ক্ষেত্রভিত্তিক, লজিস্টিক, ব্যক্তিগত এবং অন্যান্য শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছে, যা বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন। তার উপর, বিদেশে আর্থিক সম্পদ হিমায়িত/চুরি করা হয়েছিল, এবং রপ্তানি পাইপলাইনগুলিকে সরাসরি আক্রমণ করা হয়েছিল। বহিরাগত ধাক্কার মুখে রাশিয়ার অর্থনীতির স্থিতিস্থাপকতা তিনটি কারণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে: ১) ৩০ বছরের বাজার সংস্কারের ফলাফল; ২) এই বছরগুলিতে চাপ-প্রতিরোধী ও আঘাত-বিরোধী কৌশলগুলিতে ব্যাপক অভিজ্ঞতার সঞ্চয়; এবং ৩) রাশিয়ার অর্থনীতিকে বিচ্ছিন্ন করার ক্ষমতা সম্পর্কে পশ্চিমীদের ভুল গণনা।
বাজার প্রতিষ্ঠানের কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি শুধু অত্যন্ত অভিযোজিতই নয়, বরং বৈচিত্র্যময়ও। রাশিয়া শক্তি, খনিজ, খাদ্য, ফসল ও জলসম্পদে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এর একটি উন্নত ও স্থিতিশীল দেশীয় বাজার এবং একটি চাপ-প্রতিরোধী ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা রয়েছে, যা প্রধান সমস্যাযুক্ত ব্যাঙ্কগুলি থেকে বিচ্ছিন্ন। ভ্যাকসিন তৈরি থেকে শুরু করে হাইপারসনিক প্রযুক্তি এবং দুটি এআই মডেলের একযোগে প্রতিযোগিতামূলক উন্নয়ন-সহ জাতীয় উদ্ভাবন ব্যবস্থা একটি শক্তিশালী প্রযুক্তিগত ভিত্তি প্রদান করে। কোভিড-১৯ অতিমারির সময় সুবিন্যস্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার ফলে অটোইমিউন রোগের জন্য লক্ষ্যযুক্ত থেরাপির ওষুধ বাজারে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছিল।
রাশিয়ার অর্থনীতি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞা, অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা, বাজার সংস্কার, বাণিজ্য অংশীদার, মূল্যস্ফীতি, মুদ্রানীতি, সরবরাহ-পক্ষের অর্থনীতি
২০২২ সালের অর্থনৈতিক সংকট আধুনিক রাশিয়ার ইতিহাসে পঞ্চম সংকট। সময়ের সঙ্গেসঙ্গে সরকার, ফেডারেল নিয়ন্ত্রক ও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সংকট ব্যবস্থাপনা ও প্রতি-চক্রীয় (কাউন্টার সাইক্লিকাল) নীতিতে অনন্য পেশাদার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। একই কথা ব্যবসা এবং এমনকি পরিবারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। রাশিয়ার মধ্যবিত্তরা ব্যাঙ্ক আমানত, রিয়েল এস্টেট, মুদ্রা ও সোনার মাধ্যমে সম্পদ বরাদ্দের কৌশলগুলিতে পারদর্শী হয়ে উঠেছে।
তেল উৎপাদনকারীরা রপ্তানি প্রবাহের নাটকীয় পুনর্নির্দেশনা করেছে। ২০২১ সালে অপরিশোধিত তেল রপ্তানির প্রায় ১০০ শতাংশ ইউরোপে গিয়েছিল, ২০২২ সালের শেষ নাগাদ ৮০ শতাংশ এশিয়ার বাজারে গিয়েছিল। যদি ২০২১ সালে রাশিয়ার শীর্ষ তিনটি শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য অংশীদার ছিল চিন, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস, তাহলে ২০২৩ সালে তা ছিল চিন, ভারত ও তুর্কিয়ে। রাশিয়া এখন চিনের সঙ্গে ইউরোপের শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার, এবং চিনের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে এমন কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি। বিদ্রূপাত্মকভাবে, রাশিয়া এখনও ইইউ-তে দ্বিতীয় এলএনজি সরবরাহকারী।
নিষেধাজ্ঞাগুলি দেশীয় উৎপাদনকে তীব্রভাবে উদ্দীপিত করেছে। ২০১৪ সাল থেকে কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ম্যানুফ্যাকচারিংকে আমদানি-প্রতিস্থাপন ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা বেশ সফল প্রমাণিত হয়েছে। এখন, ম্যানুফ্যাকচারিং প্রচেষ্টা বাতিল না করেও শিল্পনীতির কেন্দ্রবিন্দু পরিষেবাগুলিতে স্থানান্তরিত হচ্ছে: প্রথমত, চিকিৎসা, শিক্ষা ও পর্যটন। এই রূপান্তরটি বৃহৎ আকারের ডিজিটালাইজেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংযুক্তিকরণের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে। কর, শুল্ক, সরকার, ব্যাঙ্কিং ও শিক্ষাগত পরিষেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে ডিজিটালাইজেশন হয়েছে, দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়েছে, জনসংখ্যাগত সীমাবদ্ধতা হ্রাস করা হয়েছে, এবং অ-কায়িক কর্মীদের (হোয়াইট কলার) দুর্নীতি হ্রাস করা হয়েছে।
যদি ২০২১ সালে রাশিয়ার শীর্ষ তিনটি শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য অংশীদার ছিল চিন, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস, তাহলে ২০২৩ সালে তা ছিল চিন, ভারত ও তুর্কিয়ে।
সামষ্টিক নীতিমালার সংকট-বিরোধী আরেকটি রূপান্তরও ঘটেছে: বাজেটের নিয়ম শিথিল করা হয়েছে; আর্থিক ব্যবস্থায় পরিবর্তনের ফলে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং ফলস্বরূপ ঋণের চাহিদাসহ সামগ্রিকভাবে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থনৈতিক প্রত্যাশা উন্নত হয়েছে। উদ্দেশ্য হল শুধু চাহিদা সংকোচনের মাধ্যমে নয়, বরং সরবরাহ বৃদ্ধি ও উদ্যোক্তাবৃত্তি উদারীকরণের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করা। এই পরিকল্পনা ভ্লাদিমির পুতিনের, যিনি বলেন, "এখন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা শুধু ব্যাঙ্ক অফ রাশিয়ার কাজ নয়, বরং সরবরাহ বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করার জন্য আরএফ সরকারগুলির কাজের মানের মূল্যায়নও.” রাশিয়ার সরকার একইসঙ্গে ‘অফশোরাইজেশন’ সম্পন্ন করছে: রাশিয়ার এক্তিয়ারে থাকা মূল কোম্পানিগুলিকে আগে থেকে তৈরি বিশেষ প্রশাসনিক জেলাগুলিতে নিয়ে আসছে। একইসঙ্গে, মধ্যস্থ ও সম্পদধারক হিসাবে কাজ করা বিদেশী হোল্ডিংগুলিকে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সম্মিলিতভাবে, এগুলিকে সরবরাহ-পক্ষীয় অর্থনীতির রুশ সংস্করণ বলা যেতে পারে।
এর প্রাথমিক ফলাফল কী? ২০২৩ সালে উপভোগের মাত্রাসহ বেশিরভাগ সূচক অনুসারে রাশিয়ার অর্থনীতি ২০২১ সালের শেষের দিকের জায়গায় ফিরে এসেছে। রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি হল শ্রমের ঘাটতি (পূর্ণ কর্মসংস্থানে) এবং রুদ্ধ রপ্তানি বাজার। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সর্বশেষ অনুমান অনুসারে, ক্রয়ক্ষমতার সমতার ভিত্তিতে জিডিপির দিক থেকে রাশিয়া বিশ্বের পাঁচটি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। এই ফলাফল এসেছে শুধু উপরে উল্লিখিত কারণগুলির জন্যই নয়, বরং দীর্ঘ সময় ধরে রুবলের অবমূল্যায়ন মূল্যবৃদ্ধির চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে যাওয়ার কারণেও। অতএব, ডলারের পরিপ্রেক্ষিতে পণ্যের উপভোক্তা ঝুড়ির সমতুল্য মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
গ্লোবাল সাউথের প্রতি রাশিয়ার সমর্থন ‘একমেরু বিশ্ব ব্যবস্থা’র বিরুদ্ধে একটি প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া। রাশিয়াই প্রথম এটিকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। দশ বছর আগে, কার্ট ক্যাম্পবেল সতর্ক করেছিলেন যে, "রাশিয়া এবং চিনের দ্বৈত নিয়ন্ত্রণ মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি দুঃস্বপ্ন", এবং তা ২০১৯ সালের মধ্যে বাস্তবে পরিণত হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের সর্বশেষ অনুমান অনুসারে, ক্রয়ক্ষমতার সমতার ভিত্তিতে জিডিপির দিক থেকে রাশিয়া বিশ্বের পাঁচটি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তার সঙ্গে ইউরেশিয়ান ইকনমিক ইউনিয়ন (ইএইইউ) ও ব্রিকস দেশগুলির সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছে, এবং এই সংস্থাগুলি নিজেরাই বিশ্ব অর্থনীতির খণ্ডিতকরণের পথে একটি বাধা হয়ে উঠেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে রাশিয়ার সরবরাহ-পক্ষের অর্থনীতি একটি টেকসই পথে পৌঁছে যাবে। বর্তমান বছরের কাজ হল এই মডেলের ত্রুটিগুলি দূর করা, যার মধ্যে রয়েছে মূল্যস্ফীতি (২০২৪ সালে ৯.৫ শতাংশ), শ্রমবাজারের সীমাবদ্ধতা (২০২৪ সালে বেকারত্ব ২.৩ শতাংশ), এবং উচ্চ বাজেট ব্যয়। দামের চাপ অতি-উচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের একটি ধ্রুপদী পরিণতি। উপরন্তু, সরকার তেলের দামে একটি নিম্নমুখী ঝুঁকি দেখছে। অতএব, ২০২৫ সালের লক্ষ্য হল অর্থনীতির অতিরিক্ত উত্তাপ কমানো। প্রত্যাশিত বৃদ্ধির হার জিডিপির প্রায় ১.৫-২ শতাংশ। এটি রাজস্ব একত্রীকরণ এবং একটি কঠোর মুদ্রানীতির মাধ্যমে অনুসরণ করা যেতে পারে। তবে, মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশা এবং বৈদেশিক বাণিজ্য পরিস্থিতি এখনও মূল্যস্ফীতির পক্ষে। অতএব, মূল্যস্ফীতির একটি ‘দীর্ঘ ভাঙন পথ’ থাকবে। ২০২৫ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক আশা করছে যে মূল্যস্ফীতি বার্ষিক ভিত্তিতে মাত্র ৭-৮ শতাংশে নেমে আসবে; তবে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ, উচ্চ ঋণের হারের ফলে ঋণ কার্যকলাপের শীতলতা লক্ষণীয় হয়ে ওঠে। তা জনসংখ্যার সঞ্চয়ের প্রবণতাকেও অতিরিক্ত স্ফীত করে। একই সময়ে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার বাজেট রাজস্বের মোট পরিমাণ আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংক্ষেপে বলা যায়, কোভিড-১৯ সংকট সফলভাবে কাটিয়ে ওঠার পর রাশিয়ার অর্থনীতি ২০২২ সালের নিষেধাজ্ঞার ধাক্কার জন্য ভালভাবে প্রস্তুত ছিল। সামান্য পিছিয়ে থাকার পর, এখন এটি বৃদ্ধির পথে প্রবেশ করেছে। নিষেধাজ্ঞার তাৎক্ষণিক প্রভাব বহন করা গিয়েছে। এদিকে, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই, বিশেষ করে জার্মানিতে, ‘বুমেরাং’ পরিণতি এসেছে। রাশিয়া প্রতিরক্ষা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে এবং একই সঙ্গে জনগণের জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে এবং এমনকি উন্নত করতে কিছু অসুবিধা ছাড়াই এগিয়ে যেতে পারে।
আলেকজান্ডার এ. ডিনকিন হলেন প্রেসিডেন্ট, প্রিমাকভ ন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ ওয়ার্ল্ড ইকনমি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস, রাশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেস, রাশিয়া
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Alexander A. Dynkin, President, Primakov National Research Institute of World Economy and International Relations Russian Academy of Sciences, Russia ...
Read More +