Author : Rajeev Agarwal

Published on Oct 23, 2024 Updated 0 Hours ago

ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে বর্তমান রায়েলি অভিযানের বিষয়টি সামগ্রিক ভাবে রায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একটি ব্যাপক মাত্রার সামান্য অংশ মাত্র

যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত প্রশ্ন

২০২৩ সালের অক্টোবর ইরায়েলের উপর হামাসের একটি নৃশংস সন্ত্রাসবাদী হামলার ফলে এই অঞ্চলে গাজার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ফলে উচ্চ তীব্রতার যুদ্ধ, নজিরবিহীন মানবহত্যা এবং ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির এক বছর পূর্ণ হয়েছে। অবিরাম বোমাবর্ষণ করার দরুন গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সম্পূর্ণ ভাবে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কোন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা না থাকায় এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।

এই যুদ্ধের কারণ এবং উস্কানিমূলক বিষয়গুলি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করা হয়েছে। তাই এই পর্যায়ে যুদ্ধরত পক্ষগুলির প্রত্যেকে এই যুদ্ধ থেকে আদতে কী চাইছে, তা বিশ্লেষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে হামাসের জন্য এবং সাধারণ ভাবে ফিলিস্তিনি আন্দোলনের জন্য এই প্রশ্ন গুরুতর। এই অঞ্চলে দ্রুত পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক গতিশীলতা একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য তাদের উদ্দেশ্যকে প্রায় বিস্মৃতির দিকে ঠেলে দেওয়ার কারণে যুদ্ধটি প্রায় অনিবার্য প্রয়োজনীয়তায় পরিণত হয়েছিল। কারণগুলির মধ্যে প্রাথমিক ছিল ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্বাক্ষরিত আব্রাহাম অ্যাকর্ড, যার ফলেরায়েল এবং এই অঞ্চলের কিছু দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। এর পাশাপাশি ছিল সৌদি-ইরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য দ্রুত চুক্তি সম্পন্ন করার প্রচেষ্টা, যা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল।

অবিরাম বোমাবর্ষণ করার দরুন গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সম্পূর্ণ ভাবে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কোন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা না থাকায় এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।

সর্বোপরি রায়েলের জন্য গাজা যুদ্ধ একটি স্বাধীন কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের প্রসঙ্গে বিতর্ক বন্ধ করে দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেতবে এর মধ্যেই ইজরায়েল শুধু গাজা উপত্যকাকেই লক্ষ্যবস্তু করেনি, বরং অন্য অংশ অর্থাৎ ওয়েস্ট ব্যাঙ্ককে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তাদের পরিকল্পনাও গত কয়েক মাস ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই কৌশলের অংশ হিসাবে ২৭ গস্ট রাতে ইরায়েল ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে একটি ইচ্ছাকৃত সামরিক অভিযান শুরু করে, যেখানে ইরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস-এর (আইডিএফ) সৈন্যরা জঙ্গিদের নির্মূল’ করার লক্ষ্যে জেনিন শহর-সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলা চালায়। হামলার প্রথম রাতেই অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হ। এই অনুপ্রবেশ ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের সবচেয়ে বড় এবং একটি ভয়াবহ হামলার কথা মনে করিয়ে দিয়ে দর্শায় যে, সংঘাতটি আর গাজা উপত্যকাতেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং ছড়িয়ে পড়েছে গাজার বাইরেও।রায়েলের এই পদক্ষেপ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নকে উস্কে দিয়েছে। এখন কেন ঘটানো হল এটি? গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার বিদ্যমান প্রচেষ্টাকেই বা এই অভিযান কী ভাবে প্রভাবিত করছে?

কথা মনে রাখা জরুরি যে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগেও ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক কেবল ইরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের নয়, আইডিএফ-এর তরফেও বারবার আক্রমণের শিকার হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালের ৩ জুলাই ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের জেনিন ক্যাম্পে হওয়া রায়েলি অভিযান ছিল ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের স্থল ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বৃহত্তম সামরিক অভিযান। দুই দিনের এই সংক্ষিপ্ত অভিযানে ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন এবং দেড়শোর বেশি মানুষ আহত হ। এই হামলার ফলে ৩০০টিরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়, ৪০০টিরও বেশি বাড়িতে ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং ৩০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি শিবির থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এর আগেও ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি রায়েলি বাহিনী জেনিনে একটি অভিযানে নজন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছিল।

২০২৩ সালের ৩ জুলাই ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের জেনিন ক্যাম্পে হওয়া রায়েলি অভিযান ছিল ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের স্থল ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বৃহত্তম সামরিক অভিযান।

গাজায় বর্তমান যুদ্ধের আগে দুবছর ধরে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে এবং সেখান থেকে আক্রমণের সংখ্যা মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জেনিন ক্যাম্প জঙ্গিদের আস্তানা তাদের জন্য নিরাপদ ঘাঁটি হয়ে ওঠার দরুন খবরের শিরোনামেই ছিল। এর ফলস্বরূপ, আইডিএফ এবং পুলিশ মোতায়েনের তীব্রতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই সশস্ত্র সন্ত্রাসবাসীরা ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের নাবলুস এলাকায় আইডিএফ-এর উপর গুলি চালায়। জবাবে আইডিএফ সৈন্যরা পাল্টা গুলি চালায়ফলে তিন ফিলিস্তিনি নিহত হ

ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে বর্তমান ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতির দিকে ফিরে তাকালে দেখা যাবে, গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে হিংসা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো, সম্পত্তি ধ্বংস করার খবর ক্রমশ বাড়ছে। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরায়েলি বিমান বাহিনী ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ৫০টিরও বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে এবং তার বেশির ভাগই তুলকারেম, জেনিন এবং নাবলুসে ঘটেছে। এ ছাড়াও, রায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা এই সময়ের মধ্যে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ১৩০০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে। ফিলিস্তিনি মন্ত্রকের মতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে কমপক্ষে ৬৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরায়েলি বিমান বাহিনী ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ৫০টিরও বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে এবং তার বেশির ভাগই তুলকারেম, জেনিন এবং নাবলুসে ঘটেছে

ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক কেন গুরুত্বপূর্ণ

ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের সমস্যাগুলি সংঘর্ষ আক্রমণের মধ্যেই আর সীমিত নেই। একটি প্রধান সমস্যা হল ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে রায়েলি নাগরিকদের অব্যাহত  বসতি স্থাপন১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইরায়েল ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক, পূর্ব জেরুজালেম এবং গাজা উপত্যকা দখল করে। গত ৫৭ বছরে ইরায়েল ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রচুর সংখ্যক বসতি তৈরি করেছে, যেখানে সাত লক্ষেরও বেশি বসতি স্থাপনকারী বসবাস করেন, যা ইরায়েলের প্রায় মিলিয়ন জনসংখ্যার ১০ শতাংশ আন্তর্জাতিক সমালোচনা সত্ত্বেও ইজরায়েল নতুন বসতি নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। প্রতিটি নতুন বসতি স্থাপনের দরুন একটি কার্যকর দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য ভৌগোলিক এলাকাও ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে।

গাজা যুদ্ধের আগেও ২০২৩ সালের ২৬ জুন ইরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পরিকল্পনা কমিটি ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ৫০০০টিরও বেশি নতুন আবাসন ইউনিট অনুমোদন করেছিল। এটি ২০২৩ সালের আগে ইরায়েল কর্তৃক অনুমোদিত ১৩০০০ হাউজিং ইউনিটের চেয়েও বেশি ছিল। ইরায়েলের প্রধান মিত্র হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে রায়েলি বসতিগুলির অব্যাহত সম্প্রসারণের সমালোচনা করেছে এবং ২০২৩ সালের জুন মাসে নতুন বসতির ঘোষণা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে, ‘ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ৪০০০টিরও বেশি বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যরায়েলি সরকারের তরফে প্রতিবেদিত সিদ্ধান্তে আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন।অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে অতিরিক্ত বসতি নির্মাণের মতো উত্তেজক পদক্ষেপ ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে এবং ভৌগোলিক এলাকাকে সঙ্কুচিত করে অবশেষে সমস্যাটিকে একটি ‘দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান’-এর দিকেই ঠেলে দেয়।

ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে আল আকসা মসজিদও রয়েছে, যেখানে প্রায়শই ইরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা হিংসা চালিয়েছে ও ভাঙচুর করেছে। পূর্ব জেরুজালেমের আল আকসা – যেটিকেজরায়েল ১৯৬৭ সালের ছদিনের যুদ্ধে দখল করে নেয় - ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল আকসা মসজিদ এবং সপ্তম শতাব্দীর একটি কাঠামো ডোম অফ দ্য রক নিয়ে গঠিত। বিশ্বাস করা হয় যে, এই এলাকা থেকেই নবী মহম্মদ জন্নতে আরোহণ করেছিলেন

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে আল আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনি উপাসকদের উপর বিনা প্ররোচনায় হামলার ঘটনা ঘটেছিল। আবার ১৭ সেপ্টেম্বর রায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা বলপূর্বক মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করেছিল এবং সেই সময়ইরায়েলি বাহিনী আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণের অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার বাব আস-সিলসিলায় ফিলিস্তিনি উপাসকদের উপর হামলা চালায়। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং মিশর এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছিলসৌদি আরবের বিদেশমন্ত্রক এমনকি এটিকে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের আবেগের প্রতি উস্কানি’ বলে অভিহিত করেছিল। আবার ৪ অক্টোবররায়েলি ইহুদিরা আল আকসা মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করেছিল, যখন অন্য দিকে ফিলিস্তিনি উপাসকদের ইরায়েলি বাহিনী আটকে রেখেছিল।

১৭ সেপ্টেম্বর ইরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা বলপূর্বক মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করেছিল এবং সেই সময়ইরায়েলি বাহিনী আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণের অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার বাব আস-সিলসিলায় ফিলিস্তিনি উপাসকদের উপর হামলা চালায়।

অতি সম্প্রতি আল আকসা চত্বরে একটি উপাসনালয় নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে এক অতি-দক্ষিণপন্থী ইরায়েলি মন্ত্রী বেন গভিরের বিবৃতি ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং এই অঞ্চলে ক্ষোভ ও নিন্দার জন্ম দিয়েছে। সৌদি আরব উপসাগরীয় দেশগুলি এই প্রস্তাবের নিন্দা করেছে সৌদি আরব ২৭ অগস্ট চরমপন্থী উস্কানিমূলক বিবৃতি এবং বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের আবেগে বিদ্যমান উস্কানি’র কথা বলে এপ্রস্তাবকে স্পষ্টতই প্রত্যাখ্যান করেছে।

উপসংহার

আইডিএফ-এর সামরিক অভিযান ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে রায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের তরফে হিংসা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গাজা অপারেশন স্থবির এবং হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নেওয়ার জন্য চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ইজরায়েলের জন্য আগুনে ঘি ঢালার কাজটিই করবে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে চিনের মধ্যস্থতায় একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করার পরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন উপদলের (হামাস এবং ফাতাহ-সহ) মধ্যে যে পুনর্মিলন এবং সমন্বিতকরণ ঘটছে, তার উপর কঠোর নজর রাখতেও এটি ইজরায়েলকে সাহায্য করবে।

রায়েল দ্বারা অব্যাহত বসতি স্থাপন এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ফিলিস্তিনি জনসংখ্যাকে তার এলাকাগুলি থেকে বিতাড়িত করা আসলে একটি কার্যকর ‘দ্বি-রাষ্ট্রীয়’ সমাধানের জন্য ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত ভৌগোলিক এলাকা ছেড়ে যাওয়ার যে কোনও সম্ভাবনাকে বাতিল করার বিষয়ে রায়েলের কৌশলকেই দর্শায়। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ইরায়েলের নেসেটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা গৃহীত একটি প্রস্তাব থেকেই ইজরায়েলের পরিকল্পনা স্পষ্ট। এই প্রস্তাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ এটি ‘ইজরায়েল রাষ্ট্র এবং তার নাগরিকদের জন্য একটি অস্তিত্বের বিপদ ডেকে আনবে, রায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘর্ষকে স্থায়ী করবে এবং অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।’

গাজা অপারেশন স্থবির এবং হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নেওয়ার জন্য চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ইজরায়েলের জন্য আগুনে ঘি ঢালার কাজটিই করবে।

পূর্ব জেরুজালেমের সমস্যা রয়েছে, যা কিনা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুত রাজধানী। ইরায়েল কোনভাবেই এ কথা মেনে নিতে আগ্রহী নয়। প্রকৃতপক্ষে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে রায়েল দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ঘোষণা করেছিলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ইরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেবে এবং সেখানে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর করবে।

ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে বিদ্যমান রায়েলি অভিযানের বিষয়টি তাই সামগ্রিক ইরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একটি ব্যাপক মাত্রার সামান্য অংশ মাত্র। এ কথা স্পষ্ট যে, ইজরায়েল গাজার পরে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ককেই সম্পূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রণ ও দখল করার পরিকল্পনা করেছে এবং একটি স্বাধীন কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনাকে একেবারে ‘সম্ভাবনাহীন’ করে তুলেছে। এর মধ্যেযুদ্ধবিরতির আলোচনা বিন্দুমাত্র এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। হামাস ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে যুদ্ধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত শান্তি চুক্তির অংশ না হওয়া পর্যন্ত তারা পিছু হঠবে না। এই সব তখন ঘটছে, যখন এক দিকে রায়েল এবং অঞ্চলটি এখনও ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যার বিষয়ে ইরানের প্রতিশোধের জন্য প্রায় অপেক্ষা করছে এই পরিস্থিতিতে প্রথম যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা বিশ বাঁও জলে এবং সংঘাত বৃদ্ধির হুমকি স্বতন্ত্র সম্ভাবনাকে কোনও মতেই খারিজ করে দেওয়া যায় না।

 


রাজীব আগরওয়াল যুদ্ধ অভিজ্ঞ ও পশ্চিম এশিয়া বিশেষজ্ঞ।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.