-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
যাতায়াতের হাঙ্গামা, বাসস্থানের অপ্রতুলতা, পরিকাঠামোগতদুর্বলতা, বায়ু দূষণ, জমির বেআইনি ব্যবহার, ক্রমবর্ধমান অপরিকল্পিত এলাকা আজকের দিল্লির কয়েকটি প্রধান সমস্যা।
অনেক বছর ধরেই দিল্লির উন্নয়নের চালিকাশক্তি পর্যায়ক্রমিক মাস্টার প্ল্যান বা সার্বিক পরিকল্পনা। আজকের শহরে আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প স্থাপন, বিনোদনমূলক বা নাগরিকদের বিবিধ সুযোগ সুবিধা দেওয়ার জন্য জমির যে ব্যবহার, কিংবা শহরের নির্মিত ও প্রাকৃতিক যে চেহারা দেখা যায়, তা এই সব পরিকল্পনায় নিহিত প্রস্তাবগুলি রূপায়ণেরই ফল। এর মাধ্যমে শহরের নানা প্রয়োজন ও সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়েছে। তবে এই সার্বিক পরিকল্পনার প্রক্রিয়াটিকে কিছুটা অনড় বলেও মনে করা হয়, কারণ শহরের নিরিখে এর ব্যাপ্তি কুড়ি বছর। সেখানে নগরায়ণ তো একটি গতিশীল প্রক্রিয়া — বিভিন্ন ভাবে তার প্রভাব প্রতিদিনই টের পাওয়া যায়। এতে এক দিকে নানা সামাজিক ও আর্থিক সুযোগসুবিধা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে, নগরায়ণের কুফল জীবনযাত্রার মানের অবনতি ঘটাচ্ছে। যাতায়াতের হাঙ্গামা, বাসস্থানের অপ্রতুলতা, পরিকাঠামোগতদুর্বলতা, বায়ু দূষণ, জমির বেআইনি ব্যবহার, ক্রমবর্ধমান অপরিকল্পিত এলাকা আজকের দিল্লির কয়েকটি প্রধান সমস্যা।
২০২১-৪১ সালের জন্য দিল্লির আগামী চতুর্থ সার্বিক পরিকল্পনা নগরায়ণ থেকে উদ্ভূত সমস্যাগুলি মোকাবিলার একটা সুযোগ এনে দিয়েছে। দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ডি ডি এ) এই পরিকল্পনার খসড়াটি সাধারণ্যে প্রকাশ করেছে। জনগণের মতামত/আপত্তি বিবেচনার পর খসড়াটি চূড়ান্ত করা হবে। খসড়া পরিকল্পনার লক্ষ্য “ধারণ খমতা সম্পন্ন বাসযোগ্য ও প্রাণবন্ত দিল্লি গড়ে তোলায় উৎসাহ জোগানো।“ এই লক্ষ্য পূরণে পরিবেশ, অর্থনীতি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সর্বসাধারণের ব্যবহার্য জায়গা, আবাসন ও সামাজিক পরিকাঠামো, পরিবহণ ও যাতায়াতের সুবিধা এবং নাগরিক পরিকাঠামো বিষয়ে প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয়েছে। তা ছাড়াও, এই খসড়ায় স্থানিক উন্নয়ন, নজরদারি ও মূল্যায়ন এবং উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের বিধিবিধানের কাঠামোও দেওয়া হয়েছে।
আবাসন ক্ষেত্রের উন্নতি ও মানোন্নয়নের প্রস্তাবগুলি খতিয়ে দেখলে দিল্লির ভবিষ্যৎ আবাসন নীতি বুঝতে সুবিধা হবে।
বছরের পর বছর ধরে চলে আসা পরিকল্পনা, উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার প্রক্রিয়া, আর তার সঙ্গে মানুষের সামাজিক ও আর্থিক অবস্থা মিলেমিশেই আজকের দিল্লির আবাসন ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এই ক্ষেত্রের চরিত্র কম উচ্চতার পরিকল্পিত আবাসন এলাকা, অসুন্দর বাড়িঘর আর বিপজ্জনক কাঠামো সহ বিধি বহির্ভূত ছোট ছোট এলাকার সমাবেশ। বাড়ির চাহিদা প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে, কিন্তু নতুন, সাধ্যায়ত্ত বাড়ির জোগান অপ্রতুল। এই কারণেই দিল্লিতে বস্তি এবং বেআইনি কলোনি বেড়েই চলেছে, আর শহর-লাগোয়া গ্রাম ও আধা-শহর এলাকাগুলিতে বাড়ছে জনঘনত্ব। এখানে আনুমান করা হছে যে ২০৪১-এ দিল্লির মোট জনসংখ্যা দাঁড়াবে ২ কোটি ৮০ লক্ষ থেকে ৩ কোটির মধ্যে, আর বাসস্থানের প্রয়োজন হবে অন্তত ৩৫ লক্ষ। ভবিষ্যতের এই চাহিদা মেটাতে নতুন খসড়া পরিকল্পনার প্রস্তাবে পরিকল্পিত এবং অপরিকল্পিত এলাকায় বর্তমান আবাসন ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন, অনুন্নত ফাঁকা জমিতে (গ্রিনফিল্ড এরিয়া) নতুন আবাসনের ব্যবস্থা এবং বাড়ি ভাড়ায় উৎসাহ দান- এইরকম বিবিধ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বাড়িঘরের চাহিদা মেটাতে বেসরকারি ক্ষেত্র বড় ভূমিকা নেবে বলে খসড়ায় আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
বর্তমান পরিকল্পিত এলাকাগুলিতে যতটা জমি পাওয়া যাবে তার সর্বাধিক ব্যবহার, এবং গ্রুপ হাউজিং সহ নতুন বাড়ি তৈরি করে সেখানে জনঘনত্ব বৃদ্ধির চেষ্টা করা হবে। অন্যান্য এলাকার মধ্যে, একই জায়গায় পুনর্বাসন দিয়ে বস্তি উন্নয়ন করা হবে; অননুমোদিত/পুনর্বাসন কলোনি, শহুরে গ্রামে সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি অ্যাম্বুল্যান্স, দমকল ইত্যাদি আপৎকালীন যানবাহন চলাচলের সুযোগসুবিধাও বাড়ানো হবে।
অননুমোদিত কলোনির ক্ষেত্রে উন্নয়ন হবে জমি/সম্পত্তির মালিক বা আবাসিক কল্যাণ সমিতির (আর ডব্লিউ এ) তৈরি করা পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা অনুযায়ী। এখানে যাতায়াতের সুবিধা (রাস্তার প্রস্থ), উন্নয়নের প্রকৃতি (আকার ও সীমা), গাড়ি রাখার ব্যবস্থা, সামাজিক পরিকাঠামো (স্কুল, ডাক্তারখানা) ইত্যাদি সংক্রান্ত নির্দিষ্ট বিধিনিয়ম মেনে চলা হবে। অননুমোদিত কলোনিগুলির অনুমোদন এবং সেখানে মৌলিক পরিষেবার ব্যবস্থা করার ব্যাপারে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে।
অনুন্নত ফাঁকা জমি একজোট করে অধিগ্রহণ করা হবে যাতে সেখানে বিভিন্ন ধরনের আবাসন তৈরি করা যায়- এখানে লক্ষ্য হল ২০ লক্ষ বাসস্থানের সুযোগ করে দেওয়া । এর মধ্যে থাকবে সাধ্যায়ত্ত ভাড়ার বাড়ি, ৪০-৬০ বর্গমিটারের ছোট বাড়ি, অবসর-গৃহ ইত্যাদি।
বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী মানুষের (কর্মরত পুরুষ ও মহিলা, ছাত্রছাত্রী) প্রয়োজন মেটাতে সাধ্যের মধ্যে পরিষেবার সুবিধাযুক্ত/অ্যাপার্টমেন্ত, ডরমিটরি, হস্টেলের মতো বিভিন্ন ধরনের অ-মালিকানাভিত্তিক (বা ভাড়ার) বাসস্থানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সরকারি জমিতে নতুন আবাসন পরিকল্পনা রূপায়ণের পাশাপাশি ভাড়ার বাড়ি তৈরির জন্য বেসরকারি সংস্থাকে সুযোগসুবিধা দেওয়া হবে।
পথবাসী, উড়াল্পুলের নিচে বা অন্য সরকারি জায়গায় বসবাসরত গৃহহীন মানুষদের জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাতের আবাস তৈরি করা হবে। রেল ও বাস টার্মিনাল, খুচরো/পাইকারি বাজার, মাল গুদাম ইত্যাদিকেও এই কাজে ব্যবহার করা হবে। তঁরসংহার সব শেষে বলা যায়, দিল্লির আবাসন ক্ষেত্রের মান উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ উন্নতির জন্য উপরিউক্ত প্রস্তাবগুচ্ছ অনেকগুলি সমস্যার সমাধানের দিশা দেখিয়েছে। এর মধ্যে আছে মানুষের অন্তর্ভুক্তি, বাসযোগ্যতা এবং ধারণক্ষমতা।
যেমন, পরিযায়ী সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের প্রয়োজন মেটাতে এই খসড়া পরিকল্পনা অ-বিধিবদ্ধ এলাকায় আবাসনের সংস্কার, নতুন বাড়ি তৈরি, বর্তমান খালি বাড়ির ব্যবহারের পথ দেখিয়েছে। তবে এটাও ঠিক, অতীতে পূর্ববর্তী সার্বিক পরিকল্পনা গুলির একই ধাঁচের প্রস্তাব বাস্তবে প্রয়োগ করা সহজ হয়নি। বর্তমান খসড়া প্রস্তাবে আগেকার অধিকাংশ প্রস্তাবের পুনরাবৃত্তির এটাই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
চূড়ান্ত পরিকল্পনায় যাতে অমীমাংসিত বিষয়গুলির সমাধান হয়, রাজ্য/নগর প্রশাসনকে তা নিশ্চিত করতে হবে।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Rumi Aijaz is Senior Fellow at ORF where he is responsible for the conduct of the Urban Policy Research Initiative. He conceived and designed the ...
Read More +