-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনীতিতে পথ খোঁজার জন্য ভারতের মতো কৌশলগত অংশীদারিত্বকে কাজে লাগিয়ে আসিয়ান-কে তার ঐক্য ও কেন্দ্রীয়তাকে শক্তিশালী করতে হবে।
Image Source: Getty
এই নিবন্ধটি রাইসিনা এডিট ২০২৫-এর অংশ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তরফে কট্টর, চিন-বিরোধী বিদেশমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নিয়োগ দর্শায় যে, ভবিষ্যতের মার্কিন নীতি কেবল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে উত্তেজনাই বৃদ্ধি করবে না, বরং আসিয়ান-কেও পাশে সরিয়ে রাখবে। ইউরোপের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছিল, সে কথা মাথায় রেখেই আসিয়ান-কে কোনও মতেই মূল ধারা থেকে সরিয়ে রাখা উচিত নয়। আসিয়ান-কে ভারতের মতো সেই একই মনোভাবাপন্ন কৌশলগত অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার ঐক্য, কেন্দ্রীয়তা ও স্থিতিস্থাপকতাকে শক্তিশালী করতে হবে, যাদের উদীয়মান প্রভাব ও অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে।
ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মতবাদ চিরাচরিত জোট থেকে সরে আসাকেই দর্শায় এবং বহুপাক্ষিক সম্পৃক্ততার চেয়ে একপাক্ষিকতার উপর জোর দেয়। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদের নীতিগুলিকে আরও সশক্ত করেছেন এবং আরও বেশি লেনদেনমূলক ও সংশোধনবাদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছেন।
পশ্চিম গোলার্ধে মার্কিন সরকার আমেরিকা ও গ্রিনল্যান্ডের উপর তার প্রভাব সুসংহত করার চেষ্টা করেছিল, এমনকি বলপ্রয়োগের হুমকিও দিয়েছিল। তবে ইউরোপে ‘শান্তি’ প্রণয়নের জন্য ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গিকে অনেকেই ব্যাপক ভাবে ইউক্রেনের মূল্যে রাশিয়ার পক্ষাবলম্বী বলে মনে করেছেন। ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে, জর্ডান ও মিশরকে ট্রাম্পের বিতর্কিত গাজা পুনর্গঠন পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের গ্রহণ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল এবং অন্যথায় এই দু’টি দেশ মার্কিন সহায়তায় কাটছাঁটের সম্মুখীন হতে বাধ্য হয়েছে।
ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মতবাদ চিরাচরিত জোট থেকে সরে আসাকেই দর্শায় এবং বহুপাক্ষিক সম্পৃক্ততার চেয়ে একপাক্ষিকতার উপর জোর দেয়।
এখন তাই সমগ্র মনোযোগ পড়েছে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে কী ভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন নীতি পুনর্গঠিত হয় তার উপর এবং এই অঞ্চলটির আমেরিকার নতুন কৌশলগত অগ্রাধিকার হওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এর আগে বাইডেন প্রশাসন বিশ্বাস করত যে, তাইওয়ানে চিনা আক্রমণ রোধ করার জন্য ইউক্রেনে রাশিয়ার বিজয়কেও স্তব্ধ করে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পের প্রশাসন আর ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার নিন্দা করার প্রয়োজন বোধ করে না এবং চিনের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান আরও কঠোর হয়েছে।
চিনের প্রতি ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার মূল চাবিকাঠি তাঁর ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন’ (এমএজিএ) মতবাদের মধ্যে নিহিত, যেখানে চিনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আদর্শগত, ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রথম মেয়াদের সময় ট্রাম্প ‘দ্য চায়না ইনিশিয়েটিভ’ নামক বাণিজ্য যুদ্ধের মাধ্যমে টানাপড়েনমূলক মার্কিন-চিন সম্পর্কের এক নতুন যুগের সূচনা করেন, যেখানে হুয়াই-এর মতো বৃহৎ প্রযুক্তি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং চিনের কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনার নিন্দা করা হয়।
তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ‘ন্যায্য ও পরিপূরক পরিকল্পনা’র (ফেয়ার অ্যান্ড রেসিপ্রোকাল প্ল্যান) অধীনে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছেন এবং জোটকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছেন। এর জবাবে চিন আর একটি বাণিজ্য যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিশোধ নিতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) উপর ১৫ শতাংশ শুল্ক, অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও বৃহৎ স্থানচ্যুতিমূলক যানবাহনের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক এবং গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ২৫টি বিরল খনিজ পদার্থের উপর রফতানি নিয়ন্ত্রণ। এ ছাড়াও চিন গুগলের বিরুদ্ধে একটি অবিশ্বাসমূলক তদন্ত (অ্যান্টিট্রাস্ট প্রোব) শুরু করেছে এবং দু’টি মার্কিন সংস্থাকে তার ‘আনরিলায়েবল এনটিটিজ লিস্ট’-এ রেখেছে, যা অর্থনৈতিক দ্বন্দ্বকে আরও গভীরতর করে তুলেছে।
ট্রাম্প ‘ন্যায্য ও পরিপূরক পরিকল্পনা’র (ফেয়ার অ্যান্ড রেসিপ্রোকাল প্ল্যান) অধীনে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছেন এবং জোটকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছেন।
অসংখ্য বিকল্পের মাঝে আসিয়ান
ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন আসিয়ান-এর সামনে চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ উভয়ই উপস্থাপন করে। তাঁর সুরক্ষাবাদী নীতিগুলি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহকে ব্যাহত করতে পারে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর ব্যাপক ভাবে নির্ভরশীল। ২০২৪ সালে মার্কিন-আসিয়ান বাণিজ্যের মূল্য ছিল ৪৭৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২২৭.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অতীতে, বিশেষ করে ভিয়েতনামে, বিনিয়োগের সুযোগগুলি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দিকে চালিত হয়েছে। বর্তমানে মার্কিন বাজারের উপর নির্ভরশীলতার কারণে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি তার মোট দেশজ উৎপাদনের ৩০ শতাংশ বা ১৪২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং চিন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মেক্সিকোর পরে সমস্ত মার্কিন বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম উদ্বৃত্ত উপভোগ করার কারণে ভিয়েতনাম মার্কিন শুল্কের সামনে সবচেয়ে অরক্ষিত।
সর্বোপরি মার্কিন-চিন বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে আসিয়ান সস্তা চিনা পণ্যের সুনামিতে ডুবতে বসেছে। এটি আসিয়ান-কে আঞ্চলিক সমন্বিতকরণ শক্তিশালী করার জন্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বিকল্প অংশীদারিত্ব খোঁজার জন্য তার অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করতে পারে।
চিনের প্রতি ট্রাম্পের সংঘাতমূলক মনোভাব আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যেখানে ওয়াশিংটনের নজরদারি কৌশলের প্রাথমিক সুবিধাভোগী হিসেবে ফিলিপিন্স আবির্ভূত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা মিত্র হিসেবে ম্যানিলা দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের ধূসর অঞ্চলের কার্যকলাপ মোকাবিলায় এই অংশীদারিত্বের উপর নির্ভর করে।
ফিলিপিন্সের নৌবাহিনী বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক সামুদ্রিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের সময় চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির অবৈধ ও জবরদস্তিমূলক কর্মকাণ্ডে হ্রাস লক্ষ করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে যৌথ সামরিক মহড়ার বৃহত্তম সরবরাহকারী হিসেবে উঠে এসেছে এবং কেবল সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির জন্যই নয়, বরং প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও এমনটা ঘটেছে। ফিলিপিন্সের নৌবাহিনী বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক সামুদ্রিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের সময় চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির অবৈধ ও জবরদস্তিমূলক কর্মকাণ্ডে হ্রাস লক্ষ করেছে।
এ দিকে দক্ষিণ চিন সাগরে সঙ্কট ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নীরব পদ্ধতি পছন্দকারী দেশগুলি, যেমন ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং ব্রুনাই, প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখতে এবং ট্রাম্পের আরও আক্রমণাত্মক ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অধীনে মূল স্রোত থেকে চ্যুতি এড়াতে চাপের মুখে পড়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথের আসিয়ান সম্পর্কে জ্ঞান না থাকলেও কোয়াড-এর (কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়লগ) পরে ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়াকে আহ্বান জানানোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্ক রুবিওর সিদ্ধান্ত ইঙ্গিত দেয় যে, আসিয়ান এখনও কৌশলগত গুরুত্বই বহন করে। তবে এটি একটি গভীর ও আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ মার্কিন সম্পৃক্ততায় রূপান্তরিত হয়, না কি মূলত একটি লেনদেনমূলক পদ্ধতিতেই পরিণত হয়, তা এখনও দেখার বিষয়।
আসিয়ান-এর কী করণীয়?
ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে আসিয়ান-কে অবশ্যই সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রথমত, আসিয়ান-কে অবশ্যই তাদের সংহতি বৃদ্ধি করতে হবে। এই অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিশেষ করে ট্রাম্পের নেতৃত্বে চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাতে আসিয়ান-কে জড়িয়ে ফেলার সম্ভাব্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
প্রভাবের এই পরিবর্তনটি আইএসইএএস-এর সমীক্ষা ‘দ্য স্টেট অফ সাউথইস্ট এশিয়া ২০২৪’-এও উঠে এসেছে, যেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৫০.৫ শতাংশ উত্তরদাতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চিনকে সমর্থন করেছেন, যা আগের বছরের ৩৮.৯ শতাংশ থেকে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। সর্বোপরি, চিনকে কৌশলগত ভাবে মৌলিক অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং চিন ১১-র মধ্যে ৮.৯৮ গড় স্কোর পেয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৮.৭৯-র তুলনায় সামান্য বেশি। এই পরিসরের মধ্যে পথ করে নেওয়ার সময় নিজের সংহতি জোরদার করার জন্য আসিয়ান-কে বৃহত্তর আঞ্চলিক সংহতি এবং সংযোগের উপর জোর দিতে হবে।
সংগঠনটি আসিয়ান কেন্দ্রীয়তা কাঠামো ব্যবহার করে বিরোধপূর্ণ পক্ষগুলিকে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলতে উৎসাহিত করতে পারে।
দ্বিতীয়ত, চিন-মার্কিন সংঘাতের প্রেক্ষাপটে আসিয়ান-কে তার কেন্দ্রীয়তা জোরদার করতে হবে। যদিও কেউ কেউ আসিয়ানের কেন্দ্রীয় ভূমিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তা সত্ত্বেও বহিরাগত শক্তির সঙ্গে উত্তেজনা ও বিরোধ মোকাবিলায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হয়ে উঠেছে। সংগঠনটি আসিয়ান কেন্দ্রীয়তা কাঠামো ব্যবহার করে বিরোধপূর্ণ পক্ষগুলিকে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলতে উৎসাহিত করতে পারে।
আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আসিয়ান-এর উচিত সমমনস্ক দেশগুলির সঙ্গে তার সহযোগিতা সক্রিয়ভাবে জোরদার করা। অভিন্ন স্বার্থসম্পন্ন দেশ হিসেবে ভারত এই প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
ভারতের উপস্থিতি
ভারতের ‘লুক ইস্ট’ নীতি - যা ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতিতে রূপান্তরিত হয়েছে - ভারত এবং আসিয়ান-এর মধ্যে সম্পর্ককে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে। বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক গতিশীলতার পরিবর্তনের মধ্যে ভারত ও আসিয়ান-এর মধ্যে ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্ব ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য উপযুক্ত। এই কৌশলগত ক্ষেত্রে আসিয়ান-এর কেন্দ্রীয়তা জোরদার করার ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ভারত-আসিয়ান সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধিতে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
প্রথম এবং সর্বাগ্রে আঞ্চলিক ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বা রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি) সম্পর্কে ভারতের ভিন্ন অবস্থান একটি উল্লেখযোগ্য বাধা উপস্থাপন করে। আসিয়ান এখনও আশা করে যে, ভারত আরসিইপি-তে যোগদানের বিষয়ে তার অবস্থান পুনর্বিবেচনা করবে।
চিনের ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক প্রভাবের প্রতি ভিন্ন প্রতিক্রিয়া থেকে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ উঠে এসেছে। চিনের বিরুদ্ধে ভারতের দ্বন্দ্বমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং কোয়াড-এ যোগদান আসিয়ান-এর সঙ্গে তার সম্পর্ককে জটিল করে তোলে। অনেক আসিয়ান দেশ কোয়াডকে আশঙ্কার চোখে দেখে এবং এটিকে তাদের কেন্দ্রীয়তার জন্য একটি সম্ভাব্য হুমকি ও চিনকে মোকাবিলা করার কৌশল হিসেবে মনে করে। আসিয়ান ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সংঘটিত ক্ষমতার পরিবর্তনে সম্পৃক্ত হতে চায় না।
অনেক আসিয়ান দেশ কোয়াডকে আশঙ্কার চোখে দেখে এবং এটিকে তাদের কেন্দ্রীয়তার জন্য একটি সম্ভাব্য হুমকি ও চিনকে মোকাবিলা করার কৌশল হিসেবে মনে করে।
পরিশেষে, ভারত ও আসিয়ান এখনও তাদের অংশীদারিত্বকে কৌশলগত স্তরে উন্নীত করতে পারেনি। তাদের সম্পর্ক মূলত ভাসা ভাসা এবং অঞ্চলের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় গভীরতা এবং সম্পৃক্ততার অভাব রয়েছে।
প্রথমত, ভারত-আসিয়ান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে সিঙ্গাপুরের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। দ্বিতীয়ত, সামুদ্রিক সহযোগিতা ভারত ও আসিয়ান-এর মধ্যে নিরাপত্তা সম্পর্কের ভিত্তি। সামরিক সহযোগিতার ঊর্ধ্বে উঠে উভয় পক্ষই সামুদ্রিক অবকাঠামো বৃদ্ধি ও জাহাজ চলাচলের সংযোগ উন্নত করতে তীব্র আগ্রহ প্রদর্শন করেছে। তৃতীয়ত, ভারত ও আসিয়ান দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক স্তরে নিবিড় ভাবে কাজ করেছে। ভারত চারটি গুরুত্বপূর্ণ আসিয়ান দেশ: ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামের সঙ্গে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ স্থাপন করেছে। তা ছাড়া ভারত পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন, আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম এবং আসিয়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক-সহ বিভিন্ন আসিয়ান-নেতৃত্বাধীন মঞ্চে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করেছে।
সর্বোপরি, চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ভারত-আসিয়ান সম্পর্ক শক্তিশালী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা যথেষ্ট। ভারত ও আসিয়ান-এর মধ্যে আন্তঃআঞ্চলিক সংযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) এবং বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন-এর (বিমস্টেক) মঞ্চগুলি কার্যকর হয়ে উঠতে পারে, যা উভয় পক্ষের জন্য আরও সমৃদ্ধ এবং নিরাপদ ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করবে।
কুরি মহারানি জাকার্তাভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিক ইন্টেলিজেন্স-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর।
ওয়েন্ডি এ প্রাজুলি জার্মানির হামবোল্ট ইউনিভার্সিটির গবেষক।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Curie Maharani is the Executive Director of Indo-Pacific Strategic Intelligence, a think tank based in Jakarta. ...
Read More +