Author : Gurjit Singh

Published on Jun 22, 2024 Updated 5 Days ago

ফেডারেশনের উপর মোগাদিশুর দুর্বল নিয়ন্ত্রণ সোমালি জলদস্যুতার  উত্থানকে ইন্ধন জুগিয়েছে।

সামুদ্রিক হুমকি: সোমালি জলদস্যুদের পুনরুত্থান

২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে বিভিন্ন জাহাজের উপর জলদস্যুতার সঙ্গে যুক্ত হামলার প্রায় ২৫টি ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে এডেন উপসাগরে সোমালিয়ার  উপকূলে জলদস্যুতা আবার সকলের নজরে এসেছে। আর ঠিক এই কারণেআন্তর্জাতিক শিপিং বা জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে সশস্ত্র নিরাপত্তা টহলের চাহিদা ব্যয়, বিমার খরচ এবং সম্ভাব্য মুক্তিপণ পরিশোধের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের উপর হুতি বিদ্রোহীদের হামলার পাশাপাশি এই জলদস্যুদের হামলাও ঘটছে। এটি আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল এবং বাণিজ্যের নিরিখে আরও একটি চ্যালেঞ্জ যোগ করেছে।

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে (আইওআর) ভারতীয় নৌবাহিনীর অপারেশন সংকল্প’ চালু হওয়ার পর থেকে ১০০ দিনেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে এবং এই অভিযান বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক ভাবে বিশেষ প্রশংসিত হয়েছে। এর মধ্যে সমুদ্রে ৫০০০ জনেরও বেশি কর্মী মোতায়েন করা, ৪৫০টি শিপ ডে (অর্থাৎ যে দিন জাহাজ থেকে পণ্য তোলা ও নামানো হয়; এর জন্য ২১টি জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে) এবং ৯০০ ণ্টা ব্যাপী সামুদ্রিক নজরদারি বিমানের উড়ান অন্তর্ভুক্ত।

 

আন্তর্জাতিক শিপিং বা জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে সশস্ত্র নিরাপত্তা টহলের চাহিদা ব্যয়, বিমার খরচ এবং সম্ভাব্য মুক্তিপণ পরিশোধের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।

রায়েল তার মিত্রদের উপর আক্রমণ চালানোর জন্য এবং বাণিজ্য ব্যাহত করার লক্ষ্যে হুতি হামলাগুলি সুয়েজ খালের মাধ্যমে জাহাজ চলাচলের উপর প্রভাব ফেলেছে। এই কারণে সোমালি উপকূলে সক্রিয় আন্তর্জাতিক নৌবহরগুলি তাদের স্বাভাবিক টহল এলাকার ঊর্ধ্বে উঠে উত্তরে লোহিত সাগরের দিকে তাদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।

 

সোমালি জলদস্যুতার হুমকি

সোমালি জলদস্যুতার হুমকি এখন কি ততটাই গুরুতর, যতটা ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের মধ্যবর্তী সময়ে মারাত্মক ছিল? আন্তর্জাতিক মেরিটাইম ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে সোমালি জলদস্যুরা ২৩৭টি হামলা চালিয়েছে, যার ফলে কয়েকশো মানুষকে অপহরণ করা হয়েছিল। সেই সময়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে এর আনুমানিক খরচ ছিল প্রায় বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে মুক্তিপণও অন্তর্ভুক্ত ছিল। বর্তমানে জলদস্যু আক্রমণ সেই সমস্ত সামুদ্রিক ছোট জাহাজগুলিতে হয়, যে অঞ্চলগুলিতে টহল তুলনামূলক ভাবে কম।

যাই হোক, বড় জাহাজগুলিকে মাদারশিপ হিসাবে ব্যবহার করা এবং গভীর জলের মধ্য দিয়ে চলাচল করার জন্য ডিঙ্গি ব্যবহার করার প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনী দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করেছে, জলদস্যুদের বিরুদ্ধে কাজ করেছে এবং জাহাজে আটকে থাকা নাবিকদের উদ্ধার করেছে।

অস্থির সময়ে ১৪টি বিভিন্ন দেশের ২০টি যুদ্ধজাহাজ সাধারণত এডেন উপসাগর এবং সেখান থেকে ভারত মহাসাগরের শিপিং লেনগুলিতে টহল দিতসেই জাহাজগুলি জলদস্যুদের আক্রমণ নির্মূল করেছে, যা ২০১৮ সাল থেকে ক্রমশ কমতে শুরু করে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে সোমালি আঞ্চলিক জলসীমার মধ্যে টহল দেওয়ার জন্য ও কাজ করার উদ্দেশ্যে বিদেশি নৌবাহিনীর জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি অনুমোদন বাতিল হয়ে গিয়েছে। কারণ সেটির প্রয়োজনীয়তা এখন অনুভূত হয়নি। সোমালি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ সোমালি কোস্ট গার্ডের শক্তি এবং কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য সমর্থন কুড়োনোর উদ্দেশ্যে একটি নীতি অনুসরণ করছিলেন। সোমালি কোস্ট গার্ডে ৭০০ জনেরও বেশি কর্মী থাকলেও এর চারটি উপকূলরক্ষী জাহাজের মধ্যে মাত্র একটি কার্যকর।

 

সোমালি আঞ্চলিক জলসীমার মধ্যে টহল দেওয়ার জন্য ও কাজ করার উদ্দেশ্যে বিদেশি নৌবাহিনীর জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি অনুমোদন বাতিল হয়ে গিয়েছে। কারণ সেটির প্রয়োজনীয়তা এখন অনুভূত হয়নি।

২০২৩ সালে এডেন উপসাগর এবং আইওআর-এর সংশ্লিষ্ট অংশগুলি তেমন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ছিল না। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে ২৩ জন ক্রু সদস্য নিয়ে কয়লা বহনকারী বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়া জলদস্যুরা অপহরণ করে।

কিছু বিশ্লেষকের বক্তব্য অনুযায়ী, সোমালি জলদস্যুরা হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে; কিন্তু এটি বড়জোর হুতিদের কাছ থেকে সহানুভূতি পাওয়া এবং অনুপ্রেরণামূলক একটি ঘটনা। সোমালি জলদস্যুদের লক্ষ্য রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত কারণের চেয়েও অনেক বেশি অর্থনৈতিক এবং নৈরাজ্যকর, যা আবার হুতিদেকারণ নয়। সোমালিয়ায় কঠিন পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যার মধ্যে রয়েছে মারাত্মক দারিদ্র্য, অনাচার এবং ফেডারেশন জুড়ে বিভিন্ন মাত্রার নৈরাজ্য। দীর্ঘ বছর ব্যাপী গৃহযুদ্ধের ফলে সোমালিয়ার কিছু অংশ তাদের নিজস্ব স্বাধীন পথে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এটি দারিদ্র্য, হিংসা এবং অস্থিতিশীলতার দুষ্ট চক্রকে আরও জোরদার করেছে। শাসনের দুর্বল কার্যকারিতার কারণে জলদস্যুরা স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে এবং তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়াতে প্রায়আদায় করা মুক্তিপণের অর্থ বিনিয়োগ করে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ লাভ করে।

 

একটি পর্যালোচনা

সোমালিয়ার একটি সুখ-দুঃখ সমন্বিত ইতিহাস রয়েছে এবং একটি আধুনিক স্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসাবে এর অস্তিত্ব সীমিত। সোমালিয়ার পতাকায় তার বিশাল স্বপ্ন হিসাবে পাঁচটি তারা বিদ্যমান। পাঁচটি তারা বিদ্যমান সোমালিয়া এবং এর অনিচ্ছুক অংশ তথা প্রাক্তন ব্রিটিশ উপনিবেশ সোমালিল্যান্ডের দিকে নির্দেশ করে। এ ছাড়াও অন্যান্য এলাকা যেখানে জাতিগত সোমালিরা বাস করেন, সেগুলিকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জিবুতি, ইথিওপিয়ার সোমালি অঞ্চল এবং কেনিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ। একটি বিশাল সমন্বিতকরণের এই স্বপ্ন ইথিওপিয়া কেনিয়ার মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করেছে।

১৯৬০ সালে যখন সোমালিয়া স্বাধীন হয়েছিল, তখন সোমালিয়া রাষ্ট্রপুঞ্জের আস্থার অঞ্চল হিসাবে ইতালীয় প্রশাসনের অধীনে ছিল এবং সোমালিল্যান্ড ছিল একটি ব্রিটিশ আশ্রিত অঞ্চল। ইতালীয় সোমালিল্যান্ড ১৯২৫ সালে ব্রিটিশ পূর্ব আফ্রিকান প্রটেক্টরেট থেকে জুবাল্যান্ড পেয়েছিল এবং এখন ফেডারেশনে যোগদানের নিজস্ব সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সোমালিল্যান্ড যোগ দিয়েছে, যখন পুন্টল্যান্ড এটির একটি অংশ ছিল। জিবুতি - যেটি একটি ফরাসি উপনিবেশ ছিল এবং ফরাসি সোমালিল্যান্ড নামে পরিচিত ছিল – অঞ্চলে বসবাসকারী দুটি উপজাতি অর্থাৎ আফার এবং ইসাসের অঞ্চল হিসাবে অঞ্চলটির পুনরায় নামকরণ করা হয়১৯৭৭ সালে জিবুতি একটি পৃথক দেশ হিসাবে স্বাধীন হয় এবং তখন থেকে আফ্রিকার হর্নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসাবে রয়ে গিয়েছে।

 

ইতালীয় সোমালিল্যান্ড ১৯২৫ সালে ব্রিটিশ পূর্ব আফ্রিকান প্রটেক্টরেট থেকে জুবাল্যান্ড পেয়েছিল এবং এখন ফেডারেশনে যোগদানের নিজস্ব সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সোমালিল্যান্ড যোগ দিয়েছে, যখন পুন্টল্যান্ড এটির একটি অংশ ছিল।

 

দুর্বল শাসনব্যবস্থা এবং আল-শাবাব সন্ত্রাসীদের চ্যালেঞ্জ ফেডারেশনের উপর মোগাদিশুর নিয়ন্ত্রণ দুর্বল করে দিয়েছে। সোমালিল্যান্ড বিশেষ করে নির্বাচন এবং শাসনের দরুন আরও স্বায়ত্তশাসিত হয়ে উঠেছে। পুন্টল্যান্ড এবং জুবাল্যান্ড সেই ব্যবস্থাকে কিছুটা অনুসরণ করলেও সোমালিল্যান্ড যে সমৃদ্ধি প্রদর্শন করেছিল, তা বাকিরা করতে পারেনি। পুন্টল্যান্ড জুবাল্যান্ড সক্রিয় ভাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না চাইলেও সোমালিল্যান্ড ইথিওপিয়া তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে এবং শাসন ও বন্দরের একটি কার্যকরী ব্যবস্থা রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলকে আকর্ষণ করে। জুবাল্যান্ডে সক্রিয় ভাবে জাহাজ চলাচল করলেও তা মূলত জলদস্যুদের দ্বারা ব্যবহৃত হ। সোমালিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়ন মিশনের (এএমআইএসওএম) অধীনে কেনিয়ার সৈন্যরা যখন ২০০৮ সালে প্রবেশ করেছিল, তখনই তারা কিসমায়ো-কে মুক্ত করে। জুবাল্যান্ড কেনিয়ার কাছাকাছি অবস্থিত এবং অন্য দিকে পুন্টল্যান্ড সোমালিল্যান্ড আবার জিবুতির কাছাকাছি অবস্থিত

অতএব, সোমালিয়া আজ একটি দ্বন্দ্বের দরুন এক শিথিল ফেডারেশন হিসাবে কাজ করছে কারণ বিনিয়োগ ইথিওপিয়ার সম্ভাব্য কূটনৈতিক স্বীকৃতির বিনিময়ে সোমালিল্যান্ড ভূখণ্ড বেষ্টিত ইথিওপিয়াকে একটি নৌঘাঁটির জন্য অঞ্চল প্রস্তাব করেছে

আফ্রিকায় বিচ্ছিন্নতাবাদের পাশাপাশিই হর্ন অফ আফ্রিকা দুটি সফল বিচ্ছিন্নতার ঘটনা ঘটেছে। ১৯৯৩ সালে ডারগ শাসন থেকে ইথিওপিয়ানদের মুক্তির পর প্রাক্তন ইতালীয় উপনিবেশ ইরিত্রিয়া একটি গণভোটের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করে। ২০১১ সালে দক্ষিণ সুদান আফ্রিকার বৃহত্তম দেশ সুদান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই দেশগুলি ইন্টারগভর্নমেন্টাল অথরিটি অন ডেভেলপমেন্ট-এর (আইজিএডি) মধ্যে রয়েছে, যা আফ্রিকান ইউনিয়ন দ্বারা স্বীকৃত একটি আঞ্চলিক সম্প্রদায়তবে তাদের অভ্যন্তরীণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার দরুন ব্যাপক রক্তক্ষয় এবং আইনগত অসাংবিধানিক উভয় ভাবেই সরকারের পরিবর্তন সত্ত্বেও অবস্থা স্থিতিশীল হয়নি।

১৯৯৫ সালে সোমালিয়া থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের বাহিনী প্রত্যাহার করার পর থেকে জলদস্যুতা ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করে এবং ২০টি নৌবাহিনীর সমন্বয় শেষ পর্যন্ত জলদস্যুতাকে নিয়ন্ত্রণ করে তাদের অবসান ঘটায়। সন্দেহ ছিল যে, বেশ কিছু মহাজন এবং অর্থদাতা জলদস্যুতাকে একটি লাভজনক ব্যবসা বলে সমর্থন জুগিয়ে আসছিল। কারণ সোমালিয়ার বেশ কিছু অংশে অন্য কিছুই আর তেমন ফলপ্রসূ ভাবে কাজ করে না।

 

পুন্টল্যান্ড জুবাল্যান্ড সক্রিয় ভাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না চাইলেও সোমালিল্যান্ড ইথিওপিয়া তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে এবং শাসন ও বন্দরের একটি কার্যকরী ব্যবস্থা রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলকে আকর্ষণ করে।

 

এএমআইএসওএম - যেটিতে প্রধানত ইথিওপিয়ান এবং কেনিয়ার সৈন্যের পাশাপাশি উগান্ডা এবং বুরুন্ডির সৈন্যও ছিল - শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে গুটিয়ে ফেলা হয় এবং এখন সেটি আফ্রিকান ইউনিয়ন ট্রানজিশন মিশন ইন সোমালিয়া (এটিএমআইএস) হিসেবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত কাজ  করবেএকটি সক্ষম সোমালি ন্যাশনাল আর্মি, একটি পেশাদার সোমালি পুলিশ ফোর্স এবং ফেডারেল প্রতিষ্ঠানের উত্থানের ক্ষেত্রে এএমআইএসওএম গত ১৫ বছরে উল্লেখযোগ্য লাভ অর্জন করেছে

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাঙ্ক সোমালিয়ার জন্য ভারী ঋণগ্রস্ত দরিদ্র দেশ (এইচআইপিসি) ইনিশিয়েটিভ কমপ্লিশন পয়েন্ট অনুমোদন করেছে, যা ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট ঋণ পরিষেবা সঞ্চয় প্রদান  করে। এইচআইপিসি কমপ্লিশন পয়েন্ট অনুসরণ করে সোমালিয়ার বাহ্যিক ঋণ ২০১৮ সালে জিডিপির ৬৪ শতাংশ থেকে কমে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ জিডিপির শতাংশেরও কম হয়েছে এই ঋণ ত্রাণ গুরুত্বপূর্ণ অতিরিক্ত আর্থিক সংস্থানগুলিতে প্রবেশাধিকার সহজতর করবে, যা সোমালিয়াকে তার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে, দারিদ্র্য হ্রাস করবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে নিয়ে  যাবে 

সোমালিয়ায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে পারে বলে আত্মবিশ্বাস রয়েছে। কিন্তু সমস্যা হল এই যে, সোমালিয়া, পুন্টল্যান্ড, সোমালিল্যান্ড এবং অন্যদের মধ্যে প্রশিক্ষিত বাহিনী প্রায়শই তাদের নিজস্ব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় এবং তার পরে স্থানীয় রাজনীতির অংশ হতে শুরু করে।

জলদস্যুতার বর্তমান প্রবাহ আবার আপাতদৃষ্টিতে পুন্টল্যান্ড থেকে সৃষ্টি হচ্ছে। সোমালিল্যান্ডের বিপরীতে পুন্টল্যান্ড অর্থনৈতিক ভাবে কম সমৃদ্ধ এবং কম সংগঠিত অঞ্চল। তাই এই অঞ্চলের যুবকদের অর্থনৈতিক সুযোগের অভাব রয়েছে। মাছ ধরার উপযুক্ত বহরের অভাব, মাছ ধরার ট্রলারের অনুপ্রবেশের দরুন এবং চিরাচরিত মাছ ধরার স্থলে চিনা মাছ ধরার নৌবহর থাকার কারণে এখানে মাছ ধরাও সমস্যাজনক হয়ে পড়েছে। ই আইইউইউ স্থানীয় কর্মসংস্থানে বাধা দেয় এবং ব্লু  ইকোনমি বা নীল অর্থনীতিকে জোরদার করার প্রচেষ্টা স্রেফ  কাগজে কলমেই রয়ে যায়, বাস্তবায়িত হয় না।

 

মাছ ধরার উপযুক্ত বহরের অভাব, মাছ ধরার ট্রলারের অনুপ্রবেশের দরুন এবং চিরাচরিত মাছ ধরার স্থলে চিনা মাছ ধরার নৌবহর থাকার কারণে এখানে মাছ ধরাও সমস্যাজনক হয়ে পড়েছে।

 

বর্তমানে পরাধীন আল-শাবাব থেকে যে জলদস্যুতার উত্তরাধিকার এবং অস্ত্রায়নের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, সেখানে জলদস্যুদের অবশিষ্টাংশ নিজেরাই নিজেদের মর্জিমাফিক কাজ করছে, ফলে তা পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে

জিবুতি কোড অফ কন্ডাক্ট এবং এর জেড্ডা সংশোধনী (যেখানে ভারত একটি পর্যবেক্ষক হিসাবে ভূমিকা পালন করছে) আঞ্চলিক নৌবাহিনীকে জলদস্যুতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অবস্থান প্রদান করে। এটি পশ্চিম ভারত মহাসাগর এডেন উপসাগরে জলদস্যুতা দমনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং মানব পাচার ও আইইউইউ মাছ ধরা-সহ অন্যান্য অবৈধ সামুদ্রিক কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিজের পরিধি উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রসারিত করেছে

 

আইওআর-এ ভারত

ভারত অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের লক্ষ্যে আইওআর-এ নিজের ভূমিকাকে গুরুত্ব সহকারে পালন করছে। ভারতের ধারণা অনুযায়ী, ইন্দো-প্যাসিফিকে আফ্রিকার উপকূল পর্যন্ত ভারত মহাসাগর অন্তর্ভুক্তভারত এডেন উপসাগরে সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য এই দূরবর্তী অঞ্চলকে নিজের ঘাঁটি থেকে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে বিমান ও নৌ সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, যদিও এই অঞ্চলে তার বন্ধুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলিতেও প্রবেশাধিকার রয়েছে।

ভারতের নিজস্ব ২০২২ সালের সামুদ্রিক নিরাপত্তা আইন এখন এটিকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে জলদস্যুতার বিরুদ্ধে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। তাই প্রথম বারের মতো সোমালি জলদস্যুদের ভারতে নিয়ে আসা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জলদস্যুতার প্রাথমিক পর্যায়ে নৌ-অভিযানের কোন আইনি নিয়ম ছিল না এবং কেনিয়া ও সেশেলসকে জলদস্যুতার বিরুদ্ধে বিশেষ আদালত গঠন করতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি করানো সম্ভব হয়েছিল। এখন অভ্যন্তরীণ আইন প্রণয়নের ফলে আইওআর-এ তার স্বার্থকে আক্রমণকারী জলদস্যুদের আইনি ভাবে মোকাবিলা করার জন্য ভারত আরও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে

 


গুরজিৎ সিং জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইথিওপিয়া, আসিয়ান এবং আফ্রিকান ইউনিয়নে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সিআই আই টাস্ক ফোর্স অন এশিয়া গ্রোথ করিডোর-এর (এএজিসি) সভাপতি। 

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.