Author : Sean Andrews

Published on Mar 29, 2025 Updated 0 Hours ago

অস্ট্রেলিয়াকে অবশ্যই তার সামুদ্রিক ভূগোল এবং কোয়াড-এর দায়-‌দায়িত্বের সুযোগ নিয়ে অংশীদারি আরও গভীর করে গড়ে তুলতে হবে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তা ব্যবহার করতে হবে

কোয়াড-এর মধ্যে সামুদ্রিক সহযোগিতা: নতুন পথ অন্বেষণ

এই প্রবন্ধটি ‘‌রাইসিনা এডিট ২০২৫’‌ সিরিজের অংশ



কোয়াড হল অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি
কূটনৈতিক অংশীদারি, যা এমন এক উন্মুক্ত, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিককে সমর্থন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা হল অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিস্থাপক। এটি অস্ট্রেলিয়ার বিদেশনীতির একটি মূল স্তম্ভ, আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও ভারত মহাসাগরীয় অংশীদারদের সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার পরিপূরক।

বিশ্ব যখন সামুদ্রিক নিরাপত্তার জটিলতাগুলির মোকাবিলা করছে, তখন এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে কোয়াড কাঠামোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিতে উদীয়মান বিপদ ও চ্যালেঞ্জগুলির জন্য একটি বহুমুখী ও গতিশীল প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন। তার সামুদ্রিক ভূগোলকে কাজে লাগানো এবং শক্তিশালী অংশীদারি গড়ে তোলার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সুরক্ষায় তার অবদান বাড়াতে পারে।


অস্ট্রেলিয়ার এবং সমমনা বন্ধু ও কোয়াড অংশীদারদের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নৌ-‌চলাচলের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের মাধ্যমে সমুদ্রে প্রবেশাধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে স্থায়ী স্বার্থ রয়েছে।



এই সংক্ষিপ্ত নিবন্ধটি
কোয়াড-এর সামুদ্রিক নিরাপত্তা উদ্যোগের উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং এর বর্ধিত সহযোগিতার সুযোগ তুলে ধরে। বর্তমানে, চারটি বৈদেশিক নীতি উদ্যোগ অস্ট্রেলিয়ার সামুদ্রিক নিরাপত্তা ধারণাকে সমর্থন করে। প্রথমত, বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে জাপান, কোরিয়া ও ভারতের মতো অংশীদারদের সঙ্গে ব্যবহারিক সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতার সম্প্রসারণ। দ্বিতীয়ত, প্যাসিফিক পেট্রোল বোট স্কিম, যা প্যাসিফিক মেরিটাইম সিকিউরিটি প্রোগ্রাম হিসাবে পুনঃনামাঙ্কিত হয়েছে, এই অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা সহযোগিতার জন্য একটি প্রধান কর্মসূচি হিসাবে থেকে গিয়েছে। তৃতীয়ত, রাষ্ট্রপুঞ্জ (ইউএন) বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার প্রতিশ্রুতি, যার মধ্যে সামুদ্রিক নিরাপত্তার কাজও অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার এবং সমমনা বন্ধু ও কোয়াড অংশীদারদের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নৌ-‌চলাচলের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের মাধ্যমে সমুদ্রে প্রবেশাধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে স্থায়ী স্বার্থ রয়েছে। এটি পাঁচটি শক্তির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের মতো অংশীদারেরা অন্তর্ভুক্ত। পরিশেষে, সামুদ্রিক নিরাপত্তাকে ট্র্যাক ১ কূটনীতির সূচিতে উন্নীত করা হয়েছে, এবং ইন্দো-‌প্যাসিফিক অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

মহাসাগরগুলি পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ দখল করে আছে, এবং একটি নিরাপদ সমুদ্র ক্ষেত্র ছাড়া আন্তঃসংযুক্ত বিশ্ব টিকে থাকতে পারে না। বিশ্ব ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে গঠিত হয়েছিল শেষ দুটি বৈশ্বিক সমুদ্রশক্তি যুক্তরাজ্য (ইউকে) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা। দ্বিতীয়টির চিফ অফ নেভাল অপারেশনস অ্যাডমিরাল নিমিৎজ, তাঁর
১৯৪৭ সালের হল ডাউন রিপোর্টে বলেছিলেন যে, সমুদ্র নিয়ন্ত্রণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী স্বার্থ রয়েছে। প্রথমত, সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে 'দেশগুলির মধ্যে ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতা' তৈরি করে এবং তার 'স্থায়ীকরণ' সক্ষম করে। তা ছাড়া, সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিটি রাষ্ট্রকে তার সুরক্ষা নকশার ভিত্তিতে সমৃদ্ধি অর্জন করতে দেয়, যা রাষ্ট্রপুঞ্জের কাঠামো দ্বারা পরিচালিত হয়। আধুনিক ভাষা এটিকে এমন একটি বিশ্বব্যাপী অনুশীলন সম্প্রদায় হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে যার সমুদ্রে যৌথ স্থায়ী স্বার্থের মধ্যে রয়েছে সমুদ্রের আইন সম্পর্কিত রাষ্ট্রপুঞ্জের কনভেনশন (ইউএনক্লস)-‌এর মাধ্যমে মহাসাগরীয় প্রবেশাধিকার ও আইনের শাসন বজায় রাখা। সাত দশক পরেও বিশ্বব্যাপী অপারেটিং সিস্টেম এখনও একটি সমুদ্র-ভিত্তিক ঘটনা


সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে 'দেশগুলির মধ্যে ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতা' তৈরি করে এবং তার 'স্থায়ীকরণ' সক্ষম করে। 



অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রেও এই দুটি সাধারণ স্বার্থ প্রযোজ্য। তাছাড়া, সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই দেশের দৃষ্টিভঙ্গি বহুজাতিক-বহুসংস্থা সহযোগিতার সুবিধাগুলিকে চিহ্নিত করে — দেশে ও বিদেশে। সাফল্য একটি সহযোগিতামূলক পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জিত হবে, যা জাতীয়, আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী বাস্তুতন্ত্রের নৌ-‌নিরাপত্তা অংশীদারদের একত্র করবে, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক সংস্থাগুলিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। শুধুমাত্র
অস্ট্রেলিয়ায় ২০টি বিভাগ ও সংস্থা সামুদ্রিক নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত।

সামুদ্রিক কৌশলের কিছু সমর্থক ক্রমাগত বলে আসছেন যে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা প্রধানত উপকূলে বাস করে এবং বিশ্বের বাণিজ্য সমুদ্রপথে চলাচল করে, যা সম্ভাব্যভাবে নতুন বিপদের উদ্রেক করে। এই সামুদ্রিক সত্য ধারাবাহিকতার প্রতিনিধিত্ব করে, এবং এগুলিই ছিল
মাহান   করবেটের উন্নয়নশীল তত্ত্বের ভিত্তি। তবে, নতুন বিপদগুলি চিহ্নিত করাও প্রয়োজন। অর্থাৎ, সহযোগিতা এবং 'সমুদ্রে সুশৃঙ্খলতা' বজায় রাখার উপায় অনুসন্ধান করা উচিত। আজ বিশ্বব্যাপী মাছ ধরার মজুত হ্রাস, মহাসাগরীয় আবর্জনা স্তূপ (পূর্ব ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে), জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি জলদস্যুবৃত্তি এবং সমুদ্রে অন্যান্য অপরাধের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটে। এটি একটি সুযোগ এনে দেয়, যেহেতু মানবজাতি গ্রহটিকে বাঁচাতে আগ্রহী হলেও এর দুই-তৃতীয়াংশ উপেক্ষা করে, যা হল বিশ্বব্যাপী মহাসাগর।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ও কোয়াড কীভাবে নিজেদের দেশে ও গোটা অঞ্চলে বৌদ্ধিক শক্তিকে সর্বাধিক করে তুলবে, যাতে তারা 'সমুদ্রে সুশৃঙ্খলতা' তৈরির জন্য সামুদ্রিক নিরাপত্তা নীতির উদ্যোগ ও ধারণাগুলিকে ক্রমাগত মূল্যায়ন, অন্বেষণ ও পরীক্ষা করতে পারে? উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (ন্যাটো) থেকে ধারণাটি ধার করে সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত
উৎকর্ষতার কেন্দ্র তৈরি করা এক্ষেত্রে মূল্যবান হতে পারে।


বাস্তবিকভাবে, উৎকর্ষ কেন্দ্রগুলি একটি কার্যকরী ক্ষেত্রে বিশেষ জ্ঞা্ন  আহরণ করে, এবং বিশেষজ্ঞরা শিক্ষা, বিশ্লেষণ, মতবাদগত উন্নয়ন, ধারণা উন্নয়ন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তম্ভগুলিতে মনোনিবেশ করেন।



বাস্তবিকভাবে, উৎকর্ষ কেন্দ্রগুলি একটি কার্যকরী ক্ষেত্রে বিশেষ জ্ঞান আহরণ করে, এবং বিশেষজ্ঞরা শিক্ষা, বিশ্লেষণ, মতবাদগত উন্নয়ন, ধারণা উন্নয়ন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তম্ভগুলিতে মনোনিবেশ করেন। সামুদ্রিক নিরাপত্তার পরিধির জন্য একটি বিস্তৃত পরিসরের প্রয়োজন হবে। সামুদ্রিক চরিত্রের সমস্যাগুলি একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত, এবং এর কোনও সহজ বিকল্পভিত্তিক সমাধান নেই। বোধগম্য ও যুক্তিসঙ্গতভাবে যে কোনও ‘‌মেরিটাইম সিকিউরিটি সেন্টার অফ এক্সিলেন্স: ইন্দো-প্যাসিফিক’‌ (‌এমএসসিইআইপি) ধারণার জন্য সরকার, শিল্প, বেসরকারি ক্ষেত্র ও শিক্ষা ক্ষেত্রের সমন্বয় সাধনের কঠিন কাজটি বিবেচনা করা প্রয়োজন, যাতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একত্রিত হওয়া এবং একটি নিরাপদ সামুদ্রিক পরিবেশে অবদান রাখার লক্ষ্য অর্জন করা যায়। এটি হবে মূলত, সমুদ্রে 'সুশৃঙ্খলতা' প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার একটি আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা।

যে কোনও সম্ভাব্য এমএসসিইআইপি-র সনদ উচ্চাকাঙ্ক্ষী হবে। বিবেচনা করার জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল সামুদ্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকি ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা কার্যক্রম, অর্থাৎ সেগুলি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকার। এই কাজ করার সময় মনে রাখতে হবে সম্ভাব্য প্রতিকার কিন্তু কূটনীতি থেকে শুরু করে নিরাপত্তারক্ষীদের সক্রিয়তা পর্যন্ত বিভিন্ন বিকল্প উপস্থাপন করে।

শিক্ষা, বিশ্লেষণ, মতবাদগত উন্নয়ন, ধারণা উন্নয়ন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তম্ভগুলি বিবেচনায় রেখে, ধারণাগতভাবে, এমএসসিইআইপি তাত্ত্বিক ও অনুশীলনকারী উভয়ের জন্যই দক্ষতা প্রদান করবে। এটি হবে সামুদ্রিক চরিত্রের বিষয়গুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধকারী অ্যাকাডেমিক গবেষণার কেন্দ্র এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা অনুশীলনকারীদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি সমন্বয় কেন্দ্র। সাফল্যের জন্য কেন্দ্রটিকে সরকার, বেসরকারি ক্ষেত্র, শিল্প ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে সহযোগিতা সহজতর করতে হবে।


প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মূলনীতিটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার কোনও একটি মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অন্যটির আগে বেছে নেওয়া উচিত নয়, বরং সহযোগিতার জন্য অভিন্নতা খুঁজে বার করা উচিত।



অস্ট্রেলিয়া সমুদ্র দিয়ে বেষ্টিত একটি সামুদ্রিক দেশ। এটি মার্কিন ভূ-কৌশলবিদ
নিকোলাস স্পাইকম্যান যাকে 'এশিয়ার ভূমধ্যসাগর' বলেছিলেন তার দক্ষিণ অঞ্চল গঠন করে। ১৯৬৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের সময়, প্রাক্তন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অস্ট্রেলিয়ার সামুদ্রিক ভূগোলের সুবিধাগুলি নিয়ে কথা বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মূলনীতিটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার কোনও একটি মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অন্যটির আগে বেছে নেওয়া উচিত নয়, বরং সহযোগিতার জন্য অভিন্নতা খুঁজে বার করা উচিত। অস্ট্রেলিয়া সংযুক্ত কিন্তু স্বতন্ত্র বিভিন্ন মহাসাগরীয় অঞ্চল দ্বারা বেষ্টিত একটি দেশ। এই ধারণার ভিত্তিতে এমএসসিইআইপি-র মতো অনুমিত প্রকৃতির একটি প্রতিষ্ঠান দেশ ও আমাদের অংশীদারদের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা অগ্রণী সমুদ্র চিন্তাবিদ ও কর্মীদের 'সমুদ্রে সুশৃঙ্খলা' অনুসরণের সাধারণ লক্ষ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করার সুযোগ প্রদান করবে, যাতে তাঁরা উন্মুক্ত ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক গঠনে অর্থপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন।



সন অ্যান্ড্রুজ, সিএসসি, পিএইচ ডি অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কলেজের সিনিয়র মেরিটাইম ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Author

Sean Andrews

Sean Andrews

Sean Andrews is a Senior Maritime Fellow, National Security College, Australian National University. ...

Read More +