Published on Jul 16, 2023 Updated 0 Hours ago
সকলের জন্য স্থিতিশীল উন্নয়ন (সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট) অর্জন করতে জনজাতীয় শিশুদের মানবিক পুঁজিতে বিনিয়োগ

টাস্কফোর্স ৬: অ্যাক্সিলারেটিং এসডিজি: এক্সপ্লোরিং নিউ পাথওয়েজ টু দ্য ২০৩০ এজেন্ডা


সারসংক্ষেপ
আন্তর্জাতিক ও সুশীল সমাজের সংগঠনগুলি জোর দিয়ে বলেছে যে জনজাতীয়রা অন্যদের তুলনায় দরিদ্র এবং বেশি খাদ্য–নিরাপত্তাহীন (আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল, ২০১৯; আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা)। এর কারণগুলি অনেক গভীর, যার মূলে আছে অস্বীকৃত অধিকার, রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ও কণ্ঠস্বরের অভাব, এবং প্রজন্মের প্রান্তিকীকরণ। যদিও স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলির (এসডিজিএস) প্রক্রিয়াটি সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলির চেয়ে জনজাতীয় গোষ্ঠীর প্রতি মনোযোগের ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে (মানবাধিকারের জন্য হাই কমিশনারের কার্যালয়, ২০১৭), তবে অনেক কিছু করা বাকি রয়েছে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা তখনই গুরুত্বপূর্ণ হবে যদি জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলিও সেগুলি অর্জন করতে পারে।

জনজাতীয়দের মঙ্গলের প্রয়াসে তাদের সন্তানদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। দারিদ্র্যের আন্তঃপ্রজন্মের সংযোগ শুধু তখনই ভাঙতে পারে যখন জনজাতীয় শিশুরা সুস্থ ও বুদ্ধিমান হয়, এবং তাদের নিজেদের মঙ্গলের পথ খোঁজার সক্ষমতা থাকে। অতএব, স্বাস্থ্যসেবা ও মানসম্পন্ন শিক্ষায় পর্যাপ্ত বিনিয়োগই এর প্রয়োজনীয় ভিত্তি।  এর বাইরে, সমস্ত নীতি ও হস্তক্ষেপগুলি যাতে জনজাতীয় গোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ভিত্তিতে হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। জনজাতীয় গোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর ও মতামত বিবেচনায় রাখলে বিনিয়োগ ও কর্মসূচি কার্যকর, দক্ষ ও স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

এই নীতিসংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত নিবন্ধটি এই লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য তিনটি কার্যক্রম বিবেচনা করার সুপারিশ করে: (১) সদস্য দেশগুলিকে তাদের দেশে জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যে, এবং বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে, একটি বার্ষিক, প্রতিনিধিত্বমূলক, একাধিক সূচকভিত্তিক পারিবারিক জরিপ বাস্তবায়নের জন্য প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে; (২) জনজাতীয়দের কণ্ঠস্বর এবং তাদের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি করতে হবে;‌ এবং (৩) জনজাতীয় শিশুদের সামনে সুনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলার পথ নির্ধারণে এবং তা কঠোরভাবে মূল্যায়নে সদস্য দেশগুলিকে সমর্থন করতে হবে৷

১। চ্যালেঞ্জ

বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও জনজাতীয়রা বিশ্বের দরিদ্র জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ (আইএফএডি, ২০১৯)। যেমন ভিয়েতনামে ৭২ শতাংশ জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী তিনটি সর্বনিম্ন আয়ের স্তরে রয়েছে (ড্যাং, ২০১৪), এবং তাদের দারিদ্র্য থেকে উত্তরণের সম্ভাবনা কম (গ্লিউই ও অন্যরা, ২০০২)। অ– জনজাতীয় শিশুদের তুলনায় দারিদ্র্য জনজাতীয় শিশুদের মধ্যে নিম্নমানের ফলাফল পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী নির্ধারক, কিন্তু তা একমাত্র কারণ নয়। দারিদ্র্যের  ক্ষতিকর প্রভাব সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও অন্য প্রেক্ষাপট সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলির সঙ্গে মিশে জটিলতর হয় (পিনস্ট্রাপ-অ্যান্ডারসন ও ওয়াটসন, ২০১১)।

জনজাতীয় সম্প্রদায়ের শিশুরা প্রায়শই কম ওজনের হয় (ভিলেনা–এসপোনেরা ও অন্যরা, ২০১৯)। উত্তর–পূর্ব ভারতে, যা দেশের সর্বাধিক সংখ্যক উপজাতির আবাসস্থল, ৮.৯ শতাংশ পর্যন্ত শিশু মারাত্মকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় (দীনচন্দ্র সিং ও অন্যরা, ২০১৫)। তুলনায় সামগ্রিকভাবে ভারতে মারাত্মক ক্ষয়প্রাপ্তি ৫.১ শতাংশ। ব্রাজিলে জনজাতীয় শিশুদের কম–বৃদ্ধির হার গত চার দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, তবে এখনও অ-জনজাতীয় শিশুদের তুলনায় বেশি (হোরটা ও অন্যরা  ২০১৩)। জনজাতীয় শিশুদেরও মৃত্যুর হারও বেশি (সান্তোস  ও অন্যরা, ২০২০), এবং তাদের টিকা দেওয়ার হার কম (ডাং, ২০১৪)।

দারিদ্র্য, পরিকাঠামোর অভাব ও বৈষম্যের কারণে জনজাতীয় শিশুদের মানসম্পন্ন শিক্ষায় কম প্রবেশাধিকার রয়েছে (হারনানডেজ–জাভালা ও অন্যরা, ২০০৬)। তাদের স্কুলের মান সাধারণত অ-জনজাতীয় শিশুদের স্কুলের তুলনায় কম। এগুলি শিক্ষার নিম্নতর ফলাফলের দিকে পরিচালিত করে। লেভিটাম ও পোস্ট (২০১৬) দেখেছেন যে পেরু ও ইকুয়েডরের ছাত্রদের মধ্যে যারা বাড়িতে একটি জনজাতীয় ভাষায় কথা বলে তাদের পড়াশোনা ও গণিতের দক্ষতা কম। ফলস্বরূপ যা তাদেরকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনবে তেমন মানসম্পন্ন ও অর্থপূর্ণ চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা জনজাতীয় শিশুদের কম থাকে ।

জনজাতীয় শিশুদের জীবনশৈলীও খারাপ স্বাস্থ্যের ফলাফলের দিকে নিয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়া প্রমাণ করে যে জনজাতীয় কিশোর–কিশোরীদের শারীরিক কার্যকলাপে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা কম (ম্যাকনিভেন ও অন্যরা, ২০১৭), এবং তাদের ধূমপানের প্রবণতা বেশি (হোয়াইট ও অন্যরা, ২০০৯)। দক্ষিণ আমেরিকার শহুরে অঞ্চলে অল্পবয়সী জনজাতীয় গোষ্ঠীর মদ্যপানের সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি (সিল ও অন্যরা, ২০১০)। এই ফলাফলগুলি দারিদ্র্যের কারণে হয়, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে গোষ্ঠী ট্রমাও একটি প্রধান নির্ধারক (হার্ট, ২০০৩)।

সংক্ষেপে, অকাট্য প্রমাণ এবং ঐকমত্য রয়েছে যে জনজাতীয় গোষ্ঠীর শিশুদের মধ্যে অ-জনজাতীয় গোষ্ঠীর চেয়ে খারাপ ফলাফল দেখা যায়। এই প্রজন্মে স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণ করতে হলে তাদের যেখানে থাকা দরকার এবং জনজাতীয় শিশুদের বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে একটি বিস্তৃত ব্যবধান রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে এমন প্রমাণ বেশি নেই। চ্যালেঞ্জের বিশালতার তুলনায় সুস্পষ্টভাবে জনজাতীয় শিশুদেরকে লক্ষ্য করে প্রণীত নীতি বা হস্তক্ষেপেরও অভাব রয়েছে।

২। জি২০ ভূমিকা

জি২০ সাধারণভাবে জনজাতীয় গোষ্ঠী এবং বিশেষ করে তাদের সন্তানদের মধ্যে প্রাপ্ত ফলাফল উন্নত করার প্রচেষ্টায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করার জন্য অনন্য স্থানে  রয়েছে। সারা বিশ্বের মধ্যে জি২০ সদস্যদের অনেকের জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলির উপর সবচেয়ে সক্রিয় কিছু নীতি রয়েছে। এছাড়াও চিন, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় শত শত জনজাতীয় গোষ্ঠী বাস করে। তাই জি–২০ সদস্যরা একসঙ্গে পরিচালনা করতে পারে  এমন অনেক কার্যক্রম রয়েছে। জি২০ সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা, এবং সেইসঙ্গে উল্লেখযোগ্য জনজাতীয় জনসংখ্যার জি২০–বহির্ভূত দেশগুলির সঙ্গে সম্পৃক্ততা ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের দিকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আনতে পারে৷ এ থেকে বোঝা যায় যে জি২০ দেশগুলির জন্য এসডিজি অর্জনে জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলির চাহিদা উপলব্ধি করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ৷

যাতে জনজাতীয় গোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর শোনা যায় এবং জনজাতীয় শিশুদের চাহিদা পূরণ হয়, তা নিশ্চিত করতে জি২০ আহ্বায়ক, অর্থায়ন উদ্ভাবক এবং জ্ঞান বিনিময় কেন্দ্রের ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে।

আহ্বায়ক হিসাবে জি২০ তার সদস্যদের প্রেক্ষাপট ও আহ্বায়ক ক্ষমতা ব্যবহার করে জনজাতীয় শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দিকে মনোযোগ বাড়াতে এবং বজায় রাখতে পারে। জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলিও জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মতো বৈশ্বিক ঘটনা দ্বারা প্রভাবিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনজাতীয়রা তাদের গ্রামীণ অবস্থান ও কৃষি–জীবিকার উপর নির্ভরতার কারণে আরও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলস্বরূপ, তাদের সন্তানেরা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত হয় এবং আন্তঃপ্রজন্ম দারিদ্র্যের যোগসূত্র অটুট থাকে।

জনজাতীয় শিশুদের লক্ষ্য করে গৃহীত কর্মসূচি ও নীতিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য একটি উদ্ভাবনী অর্থায়ন সুবিধা তৈরি করা প্রয়োজন। সম্প্রতি চালু হওয়া ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স ফেসিলিটি ফর এডুকেশন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে ১৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল উন্নীত হতে পারে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে (ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স ফেসিলিটি ফর এডুকেশন)। যদিও জনজাতীয় শিশুদের মধ্যে প্রাপ্ত ফলাফলকে অ–জনজাতীয় শিশুদের সমপর্যায়ে আনতে এবং তার চেয়েও বেশি এগনোর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের পরিমাণ এখনও অনুমান করা হয়নি, এটির বিলিয়ন ডলারে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। জি২০ সদস্যরা, সমস্ত মধ্যম আয়ের বা ধনী দেশ মিলে, প্রয়োজনীয় বীজ তহবিল প্রদানের মাধ্যমে অনুরূপ উদ্ভাবনী অর্থায়ন পদ্ধতির পথপ্রদর্শক হতে পারে। তহবিল একটি বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাঙ্ক, বা একটি নতুন তৈরি প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত হতে পারে।

জি২০ সদস্য দেশগুলিতে বিরাট সংখ্যক জনজাতীয় মানুষ বাস করেন। অধিকন্তু, অনেক জি২০ সদস্যই দেশীয় গোষ্ঠীর কল্যাণের জন্য তাদের মনোযোগ ও প্রচেষ্টার জন্য বিশ্বব্যাপী অগ্রণী হয়ে উঠেছে। এই ঘটনাগুলি জনজাতীয় শিশুদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ফলাফলগুলিকে উন্নত করার উপায়ের প্রশ্নে একইসঙ্গে জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টির  সরবরাহকারী ও ব্যবহারকারী হিসাবে জি২০–কে একটি অনন্য অবস্থানে রেখেছে। এ ছাড়াও জি২০ এই জ্ঞান জি২০–র বাইরের দেশগুলিতে ছড়িয়ে দিতে পারে।

৩। জি২০ জন্য সুপারিশ

  • পূর্ববর্তী বিভাগে বর্ণিত বিশদ ভূমিকা গ্রহণ করার সময় জি২০ সদস্যদের সমৃদ্ধ জ্ঞান  অন্তর্দৃষ্টি ব্যবহার করে নিম্নলিখিতগুলি করতে হবে:
    সদস্য দেশগুলিকে তাদের দেশে জনজাতীয় গোষ্ঠী, বিশেষ করে শিশুদের, একটি বার্ষিক, প্রতিনিধিত্বমূলক, একাধিক সূচকভিত্তিক পারিবারিক জরিপ বাস্তবায়নের জন্য প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা দিতে হবে।জনজাতীয় শিশুদের মধ্যে প্রাপ্ত ফলাফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রথম ধাপ হল তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অন্যান্য ফলাফল সম্পর্কিত তথ্যের উপর আলোকপাত করা। কতগুলি নির্দিষ্ট ফলাফলের একটি সেটকে উন্নত করার লক্ষ্যে গৃহীত পরবর্তী কোনও কর্মসূচি বা নীতির ভিত্তি হিসাবেও ডেটা কাজ করে।ডেটা সংগ্রহকে এমনভাবে ডিজাইন করা উচিত যাতে প্রধান আর্থ–সামাজিক সূচকগুলিকে জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলির ক্ষেত্রে আলাদা করা বোঝা যায়। তাহলে তাদের মধ্যে প্রাপ্ত ফলাফলকে অ–জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে তুলনা করা যাবে। ব্রাজিলের অভিজ্ঞতা এখানে একটি বিষয়। হোরটা ও অন্যরা (২০১৩) বলেন যে ১৯৯০–এর দশকের গোড়ার দিক ব্রাজিল আদমশুমারির উত্তরদাতাদের জনজাতীয় হিসাবে স্ব–শনাক্ত করার অনুমতি দেওয়া শুরু করে। একই সময়ে জনজাতীয়দের স্বাস্থ্যের ফলাফলের তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম একটি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। এটি ২০০৮ সালে জনজাতীয়দের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির প্রথম জাতীয় সমীক্ষার মাধ্যমে অনুসরণ করা হয়েছিল। এই ধরনের তথ্য সরকারকে বিভিন্ন জনজাতীয় গোষ্ঠীর জন্য উপযোগী কর্মসূচিগুলির বাস্তবায়ন শুরু করার সুযোগ দেয়।

    প্রতি বছর এই ধরনের একটি সমীক্ষা করা হলে তা এসডিজি বা অন্য লক্ষ্যগুলির দিকে অগ্রগতি নিরীক্ষণের ভিত্তি হিসাবে কাজ করতে পারে। যদি এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যে একে অন্যান্য ডেটা উৎসের সঙ্গে একত্র করা যাবে, যেমন গ্রামের কর্মকর্তাদের থেকে শুরু করে স্কুল ও হাসপাতালের রিমোট সেন্সিং ডেটা বা প্রশাসনিক ডেটা, এবং তারপর যদি তা জনগণের প্রাপ্তিযোগ্য করা যায়, তাহলে সেই ডেটাবেস নীতিনির্ধারক, সুশীল সমাজ সংস্থাগুলি ও গবেষকদের একত্রে কাজ করার সুযোগ দেবে। এর ফলে তাঁরা কোথায় মনোযোগের প্রয়োজন তা সনাক্ত করা থেকে শুরু করে কর্মসূচি ও নীতির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে পারবেন।

    প্রশাসনিকভাবে, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে একটি ইউনিটকে জি২০ সদস্য দেশগুলি দ্বারা প্রদত্ত তহবিলসহ এই কার্যক্রমগুলি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।

  • জনজাতীয়দের কণ্ঠস্বর  তাঁদের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি
    ‌সদুদ্দেশ্যে করা হলেও প্রায়শই জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে, বিশেষ করে শিশুদের সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মসূচি ও নীতিগুলি তৈরি ও বাস্তবায়িত করা হয় জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলি থেকে পর্যাপ্ত ইনপুট ছাড়াই। এই ধরনের উদ্যোগের ফলাফল সাধারণত ভারসাম্যের ক্ষেত্রে নেতিবাচক হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি অনিচ্ছাকৃত ক্ষতিকর পরিণতি বহন করে, যেমন জনজাতীয় শিশুরা দীর্ঘমেয়াদি ট্রমায় ভুগছে। ইতিহাস আরও দেখায় যে দেশগুলি এমন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে যার ফলস্বরূপ জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলি ন্যায্য ক্ষতিপূরণ না পেয়ে তাদের জমি হারিয়েছে। সনাতন জমি হারানো প্রায়ই মর্যাদা ও পরিচয় হারানোর সহযোগী হয়েছে।জনজাতীয়দের কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায় তা নিশ্চিত করার জন্য জি২০ নেতাদের একটি জনজাতীয়দের এনগেজমেন্ট গ্রুপ প্রতিষ্ঠার কথা বিবেচনা করা উচিত। এর কাজগুলির অংশ হিসাবে এনগেজমেন্ট গ্রুপ দুটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারে। প্রথমত, একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যা জনজাতীয় শিশুদের মঙ্গল, জনজাতীয় যুবকদের দ্বারা অনুভূত সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতা হ্রাস, এবং ভাল ঐতিহ্যগত অভ্যাস ও জীবনশৈলী সংরক্ষণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার লক্ষ্যে কাজ করবে;‌ এবং দ্বিতীয়ত, একটি ফোরাম যেখানে রাষ্ট্রীয় জনজাতীয় বিষয়ক সংস্থাগুলি একে অপরের সঙ্গে এবং অন্য অংশীদারদের সঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও অন্তর্দৃষ্টি ভাগ করে নিতে পারে। সর্বোত্তম অনুশীলন, পাঠ শেখা এবং নতুন ধারণাগুলি এই ফোরামগুলিতে আলোচনা করা যেতে পারে।নতুন এনগেজমেন্ট গ্রুপের পাশাপাশি শিশুদের জন্য প্রাসঙ্গিক বিদ্যমান জি২০ শেরপা–ট্র্যাক ওয়ার্কিং গ্রুপগুলিকে, যেমন শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কাজের গ্রুপগুলিকে, জনজাতীয় শিশুদের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করা ও সমস্যার সমাধান করার জন্য কাজ করতে বলা উচিত।
  • জনজাতীয় শিশুদের সামনে নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় হস্তক্ষেপ করা  সেগুলির কঠোর মূল্যায়নে সদস্য দেশগুলিকে সমর্থন
    জনজাতীয় শিশুরা স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ফলাফলের ক্ষেত্রে যে উল্লেখযোগ্য ব্যবধানের মুখোমুখি হয় তা অবশ্যই দ্রুত সঙ্কুচিত করতে হবে, যার জন্য আর্থিক সংস্থান প্রয়োজনীয় হলেও একমাত্র প্রয়োজন নয়। জনজাতীয় শিশুদের উপকারে আসবে  এমন কর্মসূচি ও নীতি বাস্তবায়নের মিশন আরও জটিল, কারণ এর সঙ্গে নানা স্তরে যুক্ত আছে এই প্রশ্ন যে কর্মসূচি বা নীতিগুলি সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল ও উপযুক্ত কি না। অ–জনজাতীয় গোষ্ঠীতে প্রযুক্ত ও কার্যকরী প্রমাণিত কর্মসূচিগুলিকে জনজাতীয় গোষ্ঠীর নির্দিষ্ট চাহিদা অনুসারে সংশোধন বা সংস্কার করতে হবে।উপরোক্ত লক্ষ্যটি অর্জনের জন্য জি২০ সদস্য দেশগুলিতে নীতিনির্ধারকদের সক্ষমতা বিকাশের একটি উদ্যোগ তৈরি করা উচিত। এই উদ্যোগটি সেই দেশগুলির নীতিনির্ধারকদের শিখে নেওয়া পাঠের সুবিধা নিতে পারে যেখানে জনজাতি–নির্দিষ্ট প্রচেষ্টার আরও প্রতিষ্ঠিত রেকর্ড রয়েছে। এই পাঠ অন্য দেশের নীতিনির্ধারকদের একই ধরণের ভুল করা এড়াতে সহায়তা করে৷ সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়ানোর পাশাপাশি এই ধরনের উদ্যোগ একই অনুশীলন দ্বিতীয়বার করার সম্ভাবনা কমাতে পারে।জনজাতীয় শিশুদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ফলাফল এবং সুস্থতার অন্য পদক্ষেপগুলি যাতে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয় তা নিশ্চিত করতে জি২০ অবশ্যই সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। জি২০ সদস্যরা যখন এসডিজি পূরণের জন্য চেষ্টা করছে তখন তারা আর এই কাজ ফেলে রাখতে পারে না। জনজাতীয় শিশুদের আশেপাশের নির্দিষ্ট ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কর্মসূচি ও নীতিগুলিকে নির্দিষ্ট ছাঁচে ঢালা যেতে পারে। কাজটি এখনই শুরু করতে হবে, যাতে এই প্রজন্মের মধ্যে আন্তঃপ্রজন্মগত দারিদ্র্যের বন্ধন ভাঙা সম্ভব হয়।

    আরোপণ: শাবানা নাইক, দিল রাহুট, ও ড্যানিয়েল সুরিয়াডারমা, “ইনভেস্টিং ইন ইন্ডিজেনাস চিলড়েনস হিউম্যান ক্যাপিটাল টু সিকিওর সাসটেনেবল ডেভলপমেন্ট ফর অল,” টি২০ পলিসি ব্রিফ, জুন ২০২৩।



    রেফারেন্স

    ডাং, হাই-আনহ। “ভিয়েতনাম: আ ওয়াইডনিং পভার্টি গ্যাপ ফর এথনিক মাইনরিটিজ।” ইন্ডিজেনাস পিপলস, পভার্টি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট, জিলেট হল ও হ্যারি প্যাট্রিনস সম্পাদিত, ৩০৪-৩৪৩। নিউ ইয়র্ক: কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০১৪।

    দিনচন্দ্র সিং, কনসাম, মনোজ আলাগারাজন, ও লাইশরাম লাদুসিংহ। “উত্তর পূর্ব ভারতের জনজাতীয়দের শিশু অপুষ্টির ব্যাখ্যা কী?” প্লজ ওয়ান ১০, নং ৬ (২০১৫): ই০১৩০৫৬৭।

    গ্লিউই, পল, মিশেল গ্র্যাগনোলাটি ও হাসান জামান। “১৯৯০-এর দশকে ভিয়েতনামের উন্নতি থেকে কে লাভ করেছে?” ইকনমিক ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল চেঞ্জ ৫০, নং ৪ (জুলাই 2002): ৭৭৩-৭৯২।

    হার্ট, পল, মিশেল গ্র‌্যাগনোলাটি ও হাসান জামান। “নেটিভদের মধ্যে ঐতিহাসিক ট্রমা প্রতিক্রিয়া এবং পদার্থ অপব্যবহারের সঙ্গে এর সম্পর্ক: একটি লাকোটা ইলাস্ট্রেশন।” সাইকোঅ্যাকটিভ ড্রাগস জার্নাল ৩৫, নং ১ (২০০৩): ৭-১৩১

    হারনানডেজ-জাভালা, মার্থা, হ্যারি অ্যান্টনি প্যাট্রিনোস ও ক্রিস সাকেলারিউ। গুয়াতেমালা, পেরু  মেক্সিকোতে জনজাতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলিংয়ের মান  স্কুলের গুণমান । পলিসি রিসার্চ ওয়ার্কিং পেপার ৩৯৮২। ওয়াশিংটন ডিসি: বিশ্ব ব্যাঙ্ক, ২০০৬।

    হোরটা, বার্নার্ডো এল, রিকার্ডো ভেনচুরা সান্তোস, জেমস আর ওয়েলশ, আন্দ্রে এম কার্ডোসো, জনাইনা ভিয়েরা ডস সান্তোস, আনা মারলুসিয়া অলিভেরা অ্যাসিস, পেড্রো সিয়াই লিরা, ও কার্লোস ই এ কোইমব্রা জুনিয়র। ” জনজাতীয় শিশুদের পুষ্টির অবস্থা: ব্রাজিলের জনজাতীয়দের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির প্রথম জাতীয় সমীক্ষার ফলাফল।” ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল ফর ইক্যুইটি ইন হেলথ ১২, নং ২৩ (২০১৩)।

    শিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক অর্থ সুবিধা। “এটা কিভাবে কাজ করে?”

    কৃষি উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল। এসডিজি জন্য জনজাতীয়দের সঙ্গে অংশীদারিত্ব । রোম: আইএফএডি, ২০১৯।

    আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা। স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে জনজাতীয় জনগণ। জেনেভা: আইএলও, এন ডি

    লেভিটান, জোসেফ ও ডেভিড পোস্ট। “ইনডিজেনাস স্টুডেন্ট লার্নিং আউটকাম অ্যান্ড এডুকেশন পলিসিস ইন পেরু অ্যান্ড ইকুয়েডর।” ইন ইনডিজেনাস এডুকেশন পলিসি, ইক্যুইটি অ্যান্ড ইন্টারকালচারাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইন ল্যাটিন আমেরিকা, রেজিনা কর্টিনা সম্পাদিত, ২৭-৪৯। নিউ ইয়র্ক: পলগ্রেভ ম্যাকমিলান, ২০১৬।

    ম্যাকনিভেন, রোনা, শেন হার্ন, অ্যান গ্রানসেইট, জাস্টিন রিচার্ডস, ডন নাটবিম ও অ্যাড্রিয়ান বাউম্যান। “অস্ট্রেলীয় জনজাতি ও অ-জনজাতীয় কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে শারীরিক কার্যকলাপের পারস্পরিক সম্পর্ক।” অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্ড নিউজিল্যান্ড জার্নাল অফ পাবলিক হেলথ ৪১, নং ২ (২০১৭): ১৮৭-১৯২।

    মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয়। ব্রিফিং নোট: জনজাতীয় জনগণের অধিকার ও ২০৩০ অ্যাজেন্ডা। জেনিভা: ওএইচসিএইচআর, ২০১৭।

    পিনস্ট্রাপ-অ্যান্ডারসন, পার ও ডেরিল ওয়াটসন। উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য খাদ্য নীতি: বৈশ্বিক, জাতীয় ও স্থানীয় খাদ্য ব্যবস্থায় সরকারের ভূমিকা। ইথাকা: কর্নেল ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০১১।

    সান্তোস, রিকার্ডো ভেনচুরা, গ্যাব্রিয়েল মেন্ডেস বোর্হেস, মার্ডেন বারবোসা ডি ক্যাম্পোস, বার্নার্ডো ল্যাঞ্জা কুইরোজ, কার্লোস ই এ কোইমব্রা জুনিয়র, ও জেমস আর ওয়েলশ। ” ব্রাজিলের জনজাতীয় শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মৃত্যুর অসমতা: ২০১০ সালের জাতীয় জনসংখ্যার আদমশুমারি থেকে আমরা কী শিখতে পারি?” এসএসএম জনসংখ্যা স্বাস্থ্য ১০ (এপ্রিল ২০২০): ১০০৫৩৭।

    সিল, জে পল, সিলভিয়া শেলেনবার্গার, নেলিয়া সানচেজ, রবার্ট এল ভোগেল, এলিবেথ ভিলালোবোস, ফ্রেড এস গিরটন, ডানা এম সিল এবং আইকে এস ওকোসুন। “শহুরে দক্ষিণ আমেরিকান জনজাতীয় জনসংখ্যার সমস্যাসঙ্কুল মদ্যপানের বৈশিষ্ট্য।” পদার্থ ব্যবহার ও অপব্যবহার ৪৫, নং ১৩ (২০১০): ২১৮৫-২২০২।

    ভিলেনা-এসপোনেরা, মারিয়া পিলার, রাফায়েল মোরেনো-রোজাস ও গুইলারমো মোলিনা-রেসিও। “খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও জনজাতীয় উদ্বাস্তু এপেরা সিয়াপিদারার অপুষ্টির দ্বিগুণ বোঝা।” জার্নাল অফ ইমিগ্র‌্যান্ট অ্যান্ড মাইনরিটি হেলথ ২১ (২০১৯): ১০৩৫-১০৪২।

    হোয়াইট, ভিক্টোরিয়া, টনি মেসন ও ভিকি ব্রিগস। “১৯৯৬-২০০৫-এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার জনজাতি ও অ-জনজাতীয় মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা কীভাবে তুলনা করা যায়?” অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্ড নিউজিল্যান্ড জার্নাল অফ পাবলিক হেলথ ৩৩, নং ২ (২০০৯): ১৪৭-১৫৩।


The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.