Author : Vinitha Revi

Published on Jul 01, 2024 Updated 0 Hours ago

মুইজ্জু মলদ্বীপ-ভারত সমীকরণের স্বাভাবিকীকরণের ইঙ্গিত দিলেও ভারতের উপর দ্বীপদেশটির নির্ভরতা হ্রাস করার ক্ষেত্রে তাঁবৃহত্তর লক্ষ্য এখনও অব্যাহত রয়েছে।

ভারত-মলদ্বীপ সম্পর্ক: পুনরায় স্বাভাবিক হওয়ার পথে?

প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভারত-মলদ্বীপ সম্পর্ক বিশ বাঁও জলে পড়েছে। ভারত এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে মলদ্বীপের নবীন মন্ত্রীদের বিতর্কিত এবং অবমাননাকর মন্তব্য ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘বয়কট মলদ্বীপপ্রচারের আকারে প্রতিক্রিয়ার ঝড় তুলেছে। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু পরোক্ষ বিষোদ্‌গার করেন যে, মলদ্বীপ একটি ছোট দ্বীপরাষ্ট্র হলেও অন্য দেশের তাকে হেনস্থা করার কোনও অধিকার নেই’… এই বিষোদ্‌গার আসলে দর্শিয়েছে কী ভাবে একদা শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সমীকরণ দ্রুত এক প্রকাশ্য কূটনৈতিক বিপর্যয়ে পরিণত হতে পারে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বিদেশনীতির পরিসর নির্ণায়ক ভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে। ছোট দেশগুলিকে বিভিন্ন নতুন বিকল্প সম্পৃক্ততার সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে, যা আর চিরাচরিত ঐতিহাসিক বন্ধন এবং ভৌগোলিক নৈকট্য দ্বারা প্রভাবিত য়। এর ফলে বিদেশনীতিতে বাঁক বদল এবং পরিবর্তনের বিষয়টি ভবিষ্যতে ব্যতিক্রমের পরিবর্তে স্বাভাবিক হয়ে উঠতে চলেছে।

যাই হোক, বিশ্বব্যাপী সম্পর্ক ও জোটে অস্থিরতা থাকা সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক সমীকরণের কিছু দিক, বিশেষ করে ভারত এবং মলদ্বীপের মতো দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারদের মধ্যে, নীতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। প্রচারকালীন বক্তৃতাগুলি সাময়িক ভাবে বিধ্বংসী ও জ্বালা ধরানো হলেও নতুন সরকার ক্ষমতায় এলে এবং শাসন করতে শুরু করলে সাধারণত নরম সুরই বজায় রাখে।

 

ছোট দেশগুলিকে বিভিন্ন নতুন বিকল্প সম্পৃক্ততার সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে, যা আর চিরাচরিত ঐতিহাসিক বন্ধন এবং ভৌগোলিক নৈকট্য দ্বারা প্রভাবিত য়।

 

সবই নির্বাচনী রাজনীতি। ভারত তার নিকটবর্তী এলাকায় বেশ কয়েকটি নির্বাচনী প্রচারের লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠলেও শেষ পর্যন্ত সেই নেতিবাচক মনোভাব স্তিমিত হয়ে যায়। এক বার নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে প্রশাসনিক কাজকর্ম গুরুত্ব পেতে শুরু করে এবং প্রতিবেশী দেশগুলি তাদের রাজনৈতিক অর্থনীতিতে ভারতের ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করে। এর পাশাপাশি দেশগুলি তাদের সামনে উপলব্ধ বিকল্পগুলিকে চিনতে পারে, সেই বিকল্পগুলির সম্ভাবনা তুল্যমূল্য ভাবে বিচার করতে শুরু করে।

মলদ্বীপে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর নতুন সরকার অবিকল এই কাজ করছে। যেহেতু তারা ভারতের উপর দেশের নির্ভরতা কমাতে সম্ভাব্য বিকল্পগুলি অন্বেষণ করছে - যেমন তুর্কিয়ে থেকে ড্রোন কেনার চুক্তি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (ইউএই) তাইল্যান্ডের হাসপাতালগুলিকে স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আনা - তাই মালেও ভারতের সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পথে হাঁটছে। অদূর ভবিষ্যতে এমন কিছু ইতিবাচক সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, যা দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততা সহযোগিতার সম্ভাবনাকে তুলে ধরে।

 

মুইজ্জু: ভারত মলদ্বীপের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবেই থাকবে

গত বছরের নভেম্বর মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মিডিয়ায় দেওয়া তাঁর প্রথম সাক্ষাত্কারের সম প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু বলেছিলেন যে, ভারত মলদ্বীপের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবেই থাকবে এবং এ বিষয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। তিনি বলেন, মলদ্বীপে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতিবিতর্কের একমাত্র বিষয় ছিল, ভারতও এই সত্যকে স্বীকার করে নিয়েছে এবং তার আগের কঠোর অবস্থানের বিপরীতে সামরিক কর্মীদের প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছে। পূর্ববর্তী কঠোর অবস্থানের তুলনায় মুইজ্জু একটি সমঝোতামূলক সুর অবলম্বন করেন, যখন তিনি বলেন, ‘আলাপ-আলোচনা মাধ্যমে সবকিছু অর্জন করা যেতে পারে। এ কথাই আমি বিশ্বাস করি।

 

উচ্চ-স্তরের কোর গ্রুপের তৃতীয় বৈঠক

প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর মন্তব্যকে বিবেচনা করলে উচ্চ স্তরের কোর গ্রুপের তৃতীয় বৈঠকটিকে ভারত ও মলদ্বীপের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করা উচিত। ২০২৪ সালের ১৭ মার্চ মালেতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উভয় দেশের সরকার পূর্ববর্তী প্রতিনিধিদল এবং ভারতীয় সামরিক কর্মীদের বর্তমান প্রত্যাহারকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলেও এই সমস্যাটি আর অমীমাংসিত নয়।

 

প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর মন্তব্যকে বিবেচনা করলে উচ্চ স্তরের কোর গ্রুপের তৃতীয় বৈঠকটিকে ভারত ও মলদ্বীপের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করা উচিত।

 

এভিয়েশন প্ল্যাটফর্মগুলি পরিচালনাকারী ভারতীয় কর্মীদের প্রত্যাহার করা ছিল মুইজ্জুর প্রচারাভিযানের মূল প্রতিশ্রুতি। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু একটি সাক্ষাত্কারে বলেছেন যে, এই বিষয়টির সমাধান হয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সৈন্য না থাকা। দ্বিতীয় সর্বোত্তম বিকল্প হল মলদ্বীপবাসী দ্বারা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ। এই দুটি বিকল্পের মধ্যে সমঝোতা স্বরূপ একটি সমাধানে পৌঁছনো গিয়েছে।’

তৃতীয় বৈঠকের পরে মলদ্বীপের বিদেশমন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে যে, উভয় পক্ষই মলদ্বীপের বিমান চলাচল প্ল্যাটফর্মে বেসামরিক মানুষদের সঙ্গে ভারতীয় সামরিক কর্মীদের প্রতিস্থাপনে অগ্রগতি অর্জন করেছে।’ গুরুত্বপূর্ণ ভাবে, কথাও বলা হয়েছে যে, উচ্চ-স্তরের কোর গ্রুপের তৃতীয় বৈঠকে ভারত মলদ্বীপ বিদ্যমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা, নিয়মিত যৌথ পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রচেষ্টাকে সশক্ত করা, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রশস্ততা তুলে ধরে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ভ্রমণের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সংযোগ স্থাপন-সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছে।

 

দোস্তি মহড়া

মার্চ মাসে মলদ্বীপ দ্বারা আয়োজিত ভারত-মলদ্বীপ-শ্রীলঙ্কা ত্রিপাক্ষিক ‘দোস্তি ১৬’ কোস্ট গার্ড এক্সারসাইজেস এমন আরও একটি নিদর্শন যে, নতুন সরকার মতভেদকে দূরে রাখতে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। দোস্তি ১৬ ছাড়াও মলদ্বীপ ভারতের দ্বি-বার্ষিক মিলান নৌ মহড়ায় যোগ দিয়েছে, যা ২০২৪ সালের ১৯-২৭ ফেব্রুয়ারি বিশাখাপত্তনমে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০২৩ সালের শেষের দিকে মরিশাসে হওয়া কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ বার্ষিক সম্মেলন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপ হাইড্রোগ্রাফি চুক্তি বাতিল করে কারণ মলদ্বীপের সমুদ্র সম্পর্কে তথ্য অন্য কোন দেশের সম্পত্তি হওয়া উচিত নয় এবং মলদ্বীপের পাশাপাশি শি জিনপিংয়ের গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ-কে (জিএসআই) সমর্থন করার বিষয়টি দর্শায় যে, দ্বীপদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আবার চিনের প্রতিরক্ষা চুক্তি এই ইঙ্গিত দেয় যে, মলদ্বীপ ক্রমশ ভারত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং চিনের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে। যাই হোক, দোস্তি মহড়ার আয়োজক মলদ্বীপ আঞ্চলিক সহযোগিতার একটি অবিরাম সদিচ্ছা প্রদর্শন করে এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। দোস্তি ১৬ উদ্বোধন করেন মলদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মহম্মদ ঘাসান মাউমুন এবং তিনি ‘অভিন্ন সাধারণ সামুদ্রিক নিরাপত্তা উদ্বেগগুলি মোকাবিলায় মলদ্বীপ, ভারত এবং শ্রীলঙ্কার উপকূলরক্ষীদের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতার গুরুত্ব’-র উপর জোর দেন।

 

১৯৯১ সালে শুরু হওয়া দোস্তি মহড়া এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ভারত এবং মলদ্বীপের মধ্যে অনুসন্ধান উদ্ধার, চিকিৎসা স্থানান্তর, জলদস্যুতা প্রতিরোধ এবং অন্যান্য দুর্যোগ ত্রাণ প্রচেষ্টার মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।

 

ঠিক এই সময়েই চিনা জাহাজ জিয়াং ইয়াং হং ০৩-এর মালে সিটির কাছাকাছি নোঙর করা এই অঞ্চলে নানাবিধ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মলদ্বীপের বিদেশমন্ত্র অবশ্য জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে যে, কর্মীদের রসদ মজুত করা এবং তাঁদের কাজের সময়কালীন আবর্তনের উদ্দেশ্যে জাহাজটিকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে যে, জাহাজটি দেশের বন্দরে নোঙর করলেও মলদ্বীপের জলসীমায় কোনও সমীক্ষা চালাবে না।মনকি আরও বলা হয় যে, মলদ্বীপ বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলির সঙ্গে পোর্ট কলকে স্বাগত জানায় এবং এটি মলদ্বীপ সেই দেশগুলির মধ্যে সম্পর্ককে জোরদার করতে অবদান রাখে। এই সব কিছুই দর্শায় যে, ভারতের ছোট প্রতিবেশী দেশগুলি ভারত ও চিনের মধ্যে ভারসাম্যমূলক কাজ প্রদর্শন করতে থাকবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঝোঁক প্রত্যাশিত। এই পটভূমিতে দোস্তি মহড়াকে ভারত-চিন-লদ্বীপ সমীকরণে কিছু অতি প্রয়োজনীয় ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করার পথ হিসাবে দেখা উচিত। ১৯৯১ সালে শুরু হওয়া দোস্তি মহড়া এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ভারত এবং মলদ্বীপের মধ্যে অনুসন্ধান উদ্ধার, চিকিৎসা স্থানান্তর, জলদস্যুতা প্রতিরোধ এবং অন্যান্য দুর্যোগ ত্রাণ প্রচেষ্টার মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।

 

থিলামলে সেতু প্রকল্প

পূর্ববর্তী প্রশাসন দ্বারা স্বাক্ষরিত এবং ভারতীয় সংস্থা আফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড দ্বারা নির্মিত থিলামলে সেতু প্রকল্প একটি উচ্চাভিলাষী ৬.৭৪ কিমি দীর্ঘ সেতু এবং কজওয়ে সংযোগ, যা রাজধানী শহর মালেকে ভিলিমালে, গুলহিফালহু এবং থিলাফুশির মতো পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করবে। প্রকল্পটি প্রাথমিক ভাবে ২০২৪ সালে শেষ হবে বলে আশা করা হলেও বিভিন্ন কারণে গুরুতর বিলম্বের সম্মুখীন হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে কোভিড-১৯ অতিমারি সংক্রান্ত বিলম্ব, প্রকল্পের উচ্চাভিলাষী প্রকৃতি এবং বিরোধীদের নানাবিধ উদ্বেগের কারণ (সে সময়) যা নির্মাণের গুণমান এবং এর পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে, বিশেষ করে ভিলিমালে প্রাচীরের উপর। বিলম্ব এবং/অথবা স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও নির্মাণ ও অবকাঠামো মন্ত্রী ডঃ আবদুল্লা মুতালিব এপ্রিল মাসের একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন যে, থিলামলে সেতু প্রকল্পের কাজ বর্তমানে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে এবং প্রকল্পের ৩৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সময়সূচিসঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাজটি চালিয়ে যাওয়া।’ প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু তাঁর সাম্প্রতিক মিডিয়া সাক্ষাত্কারেও স্পষ্ট করেছেন যে, তিনি যখন দুবাইতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন, তখন আমি বিদ্যমান কোনও প্রকল্প বন্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ করিনি। বরং এর পরিবর্তে সেগুলি সশক্ত ও ত্বরান্বিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি।

 

বিলম্ব এবং/অথবা স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও নির্মাণ ও অবকাঠামো মন্ত্রী ডঃ আবদুল্লা মুতালিব এপ্রিল মাসের একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন যে, থিলামলে সেতু প্রকল্পের কাজ বর্তমানে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে এবং প্রকল্পের ৩৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

 

প্রকল্পটি এক বার সম্পন্ন হলে শুধুমাত্র তা দ্বীপগুলির মধ্যে সংযোগই বৃদ্ধি করবে না, বরং দেশের অর্থনৈতিক পরিসরকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করার পাশাপাশি রাজধানীতে ভিড় যুব বেকারত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে। মলদ্বীপের জলবায়ুর বৃহত্তর চ্যালেঞ্জের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রকল্পের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সড়কের আলো, নেভিগেশন লাইটিং, ডেক সেল লাইটিং, সিসিটিভি, সাইন গ্যান্ট্রিতে আলো ইত্যাদির জন্য সৌর শক্তির ব্যবহার।

 

ঘনিয়ে আসা ঋণ সঙ্কট

প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সমীকরণে স্বাভাবিকীকরণের ইঙ্গিত দিলেও তাঁর প্রচারকালীন বাগাড়ম্বরের তুলনায় ভারতের উপর তাঁর দেশের নির্ভরতা হ্রাস করার বৃহত্তর লক্ষ্য এখনও অব্যাহত। মুইজ্জু সক্রিয় ভাবে বিকল্প খুঁজে চলেছেন, বিশেষ করে সেই সব ক্ষেত্রে যেখানে মলদ্বীপ সাধারণত ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করেযেমন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ, পর্যটন, বাণিজ্য, সামুদ্রিক নিরাপত্তা স্বাস্থ্য, যা নিয়ে বর্তমানে তুর্কিয়ের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করা হয়েছে বা আলোচনা চলছে। পর্যটন বাড়ানোর জন্য চিনের কয়েকটি শহর থেকে মলদ্বীপে সরাসরি ফ্লাইট বৃদ্ধির সম্ভাবনাও রয়েছে

যাই হোক, বিদেশি ঋণ সঙ্কটের সতর্কতার সঙ্গে সঙ্গে মনটা মনে করা হয় যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ রাখাকে মুইজ্জু সুবিধাজনক বলে মনে করেন এবং জরুরি ভাবে ঋণ ত্রাণ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি ভারতের কাছে আবেদন করেছেন। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর অধীনে মলদ্বীপ ধারাবাহিকতা পরিবর্তনের মধ্যে দোদুল্যমান তার বৈদেশিক নীতির অগ্রাধিকারগুলি নির্ধারণ করে (যেমনটা হওয়াই সমীচীন) ভারতের তার নিকটবর্তী প্রতিবেশী এলাকায় বিদ্যমান নেতিবাচক ধারণাগুলি থেকে দূরে সরে যাওয়ার সুযোগ হিসাবে মলদ্বীপের পরিবর্তিত পুনর্মিলনমূলক অবস্থানকে বিবেচনা করা উচিত। একটি আধিপত্য বিস্তারকারী বড় শক্তি এবং যুব বেকারত্ব, জ্বালানির ক্রমবর্ধমান দাম ঋণের যন্ত্রণার মতো অতি জরুরি সমস্যাগুলিকে মোকাবিলা করার মাধ্যমে ভারতকে নিজেকে একটি নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন অংশীদার বলে প্রমাণ করতে হবে।

 


বিনীতা রেখি অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত স্বাধীন গবেষক।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.