Published on Apr 25, 2023 Updated 0 Hours ago

এই গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে মালের অস্থির রাজনীতি প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ের গতিপথ এবং দেশের বড় আকারের পরিকাঠামোর ভবিষ্যৎকে এক নিমেষেই বদলে দিতে পারে।

সুতোয় ঝুলন্ত ভারসাম্য: মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট পদের লড়াই ও বড় পরিকাঠামো প্রকল্প

এই বছরের সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপে এমন একটি জটিল ও উত্তপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে চলেছে যেখানে শীর্ষ পদের চেয়ে অনেক বেশি কিছুর ভবিষ্যৎ এখন সুতোয় ঝুলছে। গত এক দশক ধরে ভারত ও চিন এই দ্বীপগুলিতে প্রভাব বাড়ানোর জন্য দড়ি টানাটানিতে লিপ্ত হয়েছে। বড় অঙ্কের বেসামরিক পরিকাঠামো ও উন্নয়নমূলক  সহায়তা, যা মালদ্বীপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা, সেই ক্ষেত্রগুলিতে এই শক্তিগুলি একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই নির্বাচনের ফলাফল ঠিক করে দেবে কার পক্ষে পাল্লা ঝুঁকবে, এবং তাই ভারত মহাসাগরের বৃহত্তর ভূ–রাজনীতির জন্য নির্বাচনের ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাম্প্রতিক মালদ্বীপ সফর আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সফরের সময় ভারত মালদ্বীপের কাছে দুটি সামুদ্রিক অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করেছে এবং তিনটি উন্নয়ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। জয়শঙ্কর আরও বলেছেন, ‘‌‘‌ভারত সর্বদা নিজের এবং বৃহত্তর অঞ্চলের জন্য মালদ্বীপের প্রয়োজন ও চাহিদা মেটাতে ইচ্ছুক।’‌’‌ এই ধরনের বিবৃতি ভারতের নিরাপত্তা ক্যালকুলাস এবং ইন্দো–প্যাসিফিক কৌশলগুলিতে মালদ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়।

বড় অঙ্কের বেসামরিক পরিকাঠামো ও উন্নয়নমূলক সহায়তা, যা মালদ্বীপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা, সেই ক্ষেত্রগুলিতে এই শক্তিগুলি একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

২০১৮ সালে মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি)‌ প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দ্বীপরাষ্ট্রের প্রতি ভারতের নতুন করে মনোযোগের মধ্যে একটি নিরাপত্তার মাত্রা যুক্ত হয়েছে। তার আগের সময়টায়, যখন মালদ্বীপের প্রগ্রেসিভ পার্টি (পিপিএম) ক্ষমতায় ছিল, আবদুল্লা ইয়ামিনের অধীনে মালদ্বীপের বিদেশনীতিতে চিনপন্থী ঝোঁক দেখা গিয়েছিল। ইয়ামিন প্রশাসন শুধু ভারতের  সমালোচকই ছিল না, চিনকে গুরুত্বপূর্ণ ছাড়ও দিয়েছিল। তাঁর মেয়াদের শেষের দিকে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ–এ মালদ্বীপ যোগ দিয়েছিল, বেজিং ও মালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরিত হয়েছিল, এবং চিন বড় পরিকাঠামোগত প্রকল্পগুলি পেয়েছিল, বিশেষত  মালদ্বীপের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন এবং মালে ও হুলহুমালে দ্বীপের সংযোগকারী একটি সেতু নির্মাণ। সব মিলিয়ে এই বিনিয়োগগুলি প্রায় ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার চিনা ঋণের দায় চাপিয়েছে, যা ৫.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট অভ্যন্তরীণ পণ্য উৎপাদক একটি দেশের জন্য উদ্বেগজনকভাবে উঁচু অঙ্ক। ইয়ামিনের পদক্ষেপগুলিকে বিরোধীরা কঠোর সমালোচনা করে প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কার দুর্দশার সঙ্গে সমান্তরাল টেনেছিলেন।

 Hanging In The Balance
‌নোট: চিহ্নগুলি আনুমানিক। ইমেজ সোর্স: গুগল আর্থ

২০১৮ ভারত–মালদ্বীপ সম্পর্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর হিসেবে চিহ্নিত।   ইয়ামিনকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এমডিপি–র জয়ের ফলে রাজনৈতিক দিশা বিপরীতমুখী হয়। সোলি প্রশাসন  ‘‌ইন্ডিয়া ফার্স্ট’‌ নীতি নিয়ে চলতে শুরু করে এবং চিনের সঙ্গে এফটিএ থেকে বেরিয়ে আসে। মালে ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন  ডলার সহায়তা প্যাকেজ আকারে ভারতীয় সহায়তাও পেয়েছিল। এই প্যাকেজের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চুক্তিটি ছিল দেশের বৃহত্তম পরিকাঠামো প্রকল্প ‘‌বৃহত্তর মালে সংযোগ প্রকল্প’ সংক্রান্ত‌, যা সামুদ্রিক সেতু ও কজওয়ের মাধ্যমে রাজধানী মালেকে ভিলিমেলে, থিলাফুশি ও গুলহিফালহু দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। উপরন্তু, ভারত উত্তর মালদ্বীপে হানিমাধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে সহায়তা করছে, যা বছরে ১.৩ মিলিয়ন পর্যটক নিতে সক্ষম হবে। ভারতের সহায়তায় আরেকটি প্রকল্প হল দক্ষিণের শহর আদ্দুতে একটি পুলিশ অ্যাকাডেমি, সম্প্রতি যার উদ্বোধন করা হয়েছে। এবং দুই দেশ আদ্দুতে ভারতের একটি কনস্যুলেট খোলার জন্য একটি নীতিগত চুক্তিতেও পৌঁছেছে। অধিকন্তু, হাই ইমপ্যাক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট স্কিমের অধীনে নয়টি জনসম্প্রদায়–ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্প সম্প্রতি চালু করা হয়েছে, যেগুলি ভারত সরকারের ৫.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান ব্যবহার করে বিকাশ করা হবে।

 Hanging In The Balance
নোট: চিহ্নগুলি আনুমানিক। ইমেজ সোর্স: গুগল আর্থ

ভারতীয় সহায়তার বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। প্রথমত, ভারতের সহায়তা চিনের মতো নয়, এবং তা দেওয়া হয় বড় অনুদান বা কম সুদের ঋণের আকারে সাশ্রয়ী মূল্যে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদ প্রকাশ্যে ভারতের ‘‌অতি কম খরচের উন্নয়ন সহায়তা’‌ এবং ‘‌যা দেশকে ঋণে ডুবিয়ে রাখে তেমন চোখের জলের মতো ব্যয়বহুল বাণিজ্যিক ঋণের’‌ মধ্যে পার্থক্য করেছেন। দ্বিতীয়ত, মালদ্বীপের অনেক রাজনৈতিক মহলে ভারতীয় পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিকে ‘‌একজন প্রকৃত বন্ধুর সহায়তা’‌ হিসাবে দেখা হয়, কারণ ভারত মালদ্বীপের মন্ত্রক বা সংস্থাগুলিকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকল্পগুলি সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দেয়৷ বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর  ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় সুধীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জোর দিয়ে বলেছিলেন, ভারতীয় প্রকল্পগুলি ‘‌মালদ্বীপবাসীর জন্য, মালদ্বীপবাসীর দ্বারা এবং মালদ্বীপবাসীদের নিজস্ব’‌। সব শেষে উল্লেখ্য যে মালদ্বীপের উন্নয়নে সহায়তা নিয়ে ভারতের মূল্যায়ন মালে অঞ্চলের বাইরেও বিস্তৃত। উত্তর ও দক্ষিণ মালদ্বীপে এর বড় অঙ্কের প্রকল্পগুলি এই ধরনের বিবৃতির প্রমাণ, এবং প্রতিবেশীর উন্নয়নে নয়াদিল্লির আন্তরিক প্রতিশ্রুতির প্রদর্শক।

যাই হোক, সাম্প্রতিক মাসগুলিতে মালদ্বীপে পরিবেশগত ক্ষতির জন্য ভারত–সমর্থিত কয়েকটি প্রকল্পের সমালোচনা হয়েছে। অতি সম্প্রতি ভারতীয় সংস্থা অ্যাফকনস  ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে ভিলিমালে রিফের ক্ষতি করার জন্য ৬৯ মিলিয়ন এমভিআর জরিমানা করা হয়েছে। এই ঘটনার পাশাপাশি চিন মালের সঙ্গে কয়েকটি সৌর শক্তি চুক্তি করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও সংবেদনশীল বাস্তুতন্ত্রের ক্ষেত্রে অরক্ষিত মালদ্বীপ জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। এই ঘটনাগুলি ইঙ্গিত দেয় যে ভারত সফলভাবে মালদ্বীপে হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করতে পারলেও চিনারা এখনও অপেক্ষা করে আছে এবং নয়াদিল্লি যে কোনও ভুল করলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও সংবেদনশীল বাস্তুতন্ত্রের ক্ষেত্রে অরক্ষিত মালদ্বীপ জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।

মালদ্বীপের বর্তমান রাজনৈতিক হাওয়া ভারতের পক্ষে থাকতে পারে, কিন্তু এমডিপি প্রেসিডেন্টের পদ ধরে না–রাখতে পারলে পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। পিপিএম ও তার মিত্রেরা জয়ী হলে ২০১৮ সাল থেকে চিনের যে অবস্থা হয়েছে ভারতেরও তা হতে পারে, অর্থাৎ হঠাৎ করেই ভারত ‘‌আউট অফ ফেভার’‌ হয়ে যেতে পারে। ইয়ামিন ও বিরোধীরা  ‘‌ইন্ডিয়া আউট’‌ প্রচার চালাচ্ছে, যা হল ভারতবিরোধী মনোভাবকে উস্কে দেওয়ার ও ব্যবহার করার প্রয়াস। প্রচারাভিযানটি মালদ্বীপে ভারতের বিনিয়োগের বৈশিষ্ট্য, প্রতিরক্ষা অংশীদারি এবং ভারতের সামগ্রিক নিরাপত্তা বিধানের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে দাবি করে যে নয়াদিল্লি মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করছে। যদিও আন্দোলনটি কিছুটা রাজনৈতিক সুবিধাবাদের দ্বারা চালিত হয়, তবে এটি দেখায় যে চিন কীভাবে পিপিএম–এর ক্ষেত্রে তার এলিট পাকড়াও করার লক্ষ্যে সফল হয়েছে। প্রচারে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ে বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া আউট’ শব্দবাজি আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মালদ্বীপে ভারতের প্রকল্প  নিরাপত্তা বিধানের রাজনীতিকরণের  ইতিহাস রয়েছে, যা আগে ভারত–মালদ্বীপ সম্পর্কের উপর চাপ তৈরি করেছে। এই ধরনের রাজনৈতিক চোরাস্রোত নয়াদিল্লিতে কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।

অর্থপাচার ও দুর্নীতির মামলায় আবদুল্লা ইয়ামিন সম্প্রতি দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে, যা ভারতের কিছু উদ্বেগ দূর করবে। যাইহোক, পিপিএম–এর বিকল্প প্রার্থী দিতে অস্বীকৃতি এবং উচ্চ আদালতে অভিযোগের বিরুদ্ধে আপিল    করার সংকল্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন করে তোলে। যদি ইয়ামিন তাঁর মনোনয়ন দাখিল করার জন্য সময়মতো খালাস পান, তাহলে বিরোধীরা তাদের প্রচারাভিযানে ব্যাপক উৎসাহ  পাবে।

অন্যদিকে এমডিপি’রও বেহাল দশা। প্রেসিডেন্ট সোলি আবার প্রার্থী হলেও তিনি এবং  তাঁর এক সময়ের পরামর্শদাতা ও দলের প্রধান মোহাম্মদ নাশিদ প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থীপদের জন্য দলীয় প্রাইমারির প্রতিযোগিতায় তিক্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।   উভয়ের মধ্যে বাধানিষেধবিহীন প্রতিযোগিতা এমডিপি’‌র মধ্যে ফাটল দেখিয়ে   দিয়েছে। নাশিদ গোষ্ঠী নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করে ভোটার জালিয়াতি ও ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনেছিল। এই প্রেক্ষাপটে নাশিদের দল  থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বতন্ত্রভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অসম্ভব নয়। বিরোধী দলগুলোর সুবিধার্থে এমডিপি’‌র ভোটার ভিত্তির বিভাজন নিয়ে সঠিক ভাবেই উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। যদিও এই উভয় প্রতিযোগী ভারতের প্রতি একই রকম ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে, তাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব সম্ভবত নয়াদিল্লির স্বার্থের ক্ষতি  করতে পারে।

প্রেসিডেন্ট সোলি আবার প্রার্থী হলেও তিনি এবং তাঁর এক সময়ের পরামর্শদাতা ও দলের প্রধান মোহাম্মদ নাশিদ প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থীপদের জন্য দলীয় প্রাইমারির প্রতিযোগিতায় তিক্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, ভারতীয় বেসামরিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি মালেতে চিনা সাহায্যের তুলনায় সামান্য এগিয়ে আছে, কারণ গত পাঁচ বছরে ভারতের প্রচেষ্টা মালদ্বীপের মধ্যে তার সুনাম বাড়িয়েছে। তবে এই অঞ্চলে চিনের ছায়াকে ছাড় দেওয়া ভুল হবে। বেজিং পিপিএম–এর সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগের মাধ্যমে দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পেতে সফল হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে মালের অস্থির রাজনীতি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য দৌড়ের গতিপথ এবং জাতির বড় আকারের  পরিকাঠামোর ভবিষ্যৎকে এক নিমেষেই বদলে দিতে পারে। নয়াদিল্লি ও বেজিং  এবারের প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থীদের মতোই অধীর আগ্রহে আশা করবে যে সেপ্টেম্বরে তাদের পক্ষে পাল্লা আরও ভারী হবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.