-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের সূচনার সময়কালীন শক্তির বাস্তবতারই প্রতিফলন ঘটায়। সেই ক্ষমতার বাস্তবতার ভারসাম্য যেমন পরিবর্তিত হয়, তেমনই তাদের কার্যকারিতাও নানাবিধ প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। বর্তমানে আমরা সকলেই রাজনৈতিক শৃঙ্খলে একটি দ্রুত বিবর্তন প্রত্যক্ষ করছি এবং ইউনাইটেড নেশনস বা রাষ্ট্রপুঞ্জ (ইউএন) থেকে শুরু করে ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন বা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও), অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ-ইস্ট নেশনস (আসিয়ান) এবং সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) মতো প্রতিটি বহুদেশীয় প্রশাসনিক মঞ্চ ভিন্ন মাত্রা এবং প্রকৃতির সঙ্কটের সম্মুখীন। যদিও ব্রেটন উডস প্রতিষ্ঠানগুলি বর্তমান সময়ের দাবির প্রতি সাড়া দিতে সমস্যার মুখে পড়েছে, যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়টি ক্রমশ ক্ষীণতর স্মৃতি হয়ে উঠেছে এবং এসসিও-র মতো সাম্প্রতিক কালের সুপ্রতিষ্ঠিত মঞ্চগুলি নতুন শক্তি বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে বাধ্য হয়েছে। ব্রিকস গোষ্ঠীও তার ব্যতিক্রম নয়।
ব্রিকস প্রকল্প (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা) ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে একটি বিনিয়োগ ব্যাঙ্কারের উদ্ভাসিত বিশ্ব অর্থনৈতিক রূপান্তরকে বোঝার প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল। যে চারটি দেশের নেতারা প্রথমে ‘ব্রিক’ হিসেবে একত্রিত হয়েছিলেন — ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং চিন — তাঁরা ২০০৯ সালে একত্রিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই সময়ের ঘটনাপ্রবাহের সারবত্তাকে অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। যখন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং চিনের প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও ইয়েকাতেরিনবার্গে প্রথম ব্রিক সম্মেলনের আমন্ত্রণ গ্রহণ করার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের ডাকে সাড়া দেন, সেই সময়ে অর্থাৎ আট বছর আগে এই জোটটির উত্থানের সময়ে এই শব্দবন্ধটি (ব্রিক) প্রাথমিক ভাবে গৃহীত হয়।(১)
গোষ্ঠীটির প্রথম যৌথ বিবৃতিতে বিশ্বব্যাপী প্রশাসন এবং একটি বহুমেরুকৃত বিশ্বব্যবস্থায় বহুপাক্ষিক নীতি প্রণয়নের বিষয়টিকে সমর্থন জোগানো হয় এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলিতে গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার নিরিখে […]’ ব্রিক দেশগুলির প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার কথা বলা হয়।(২) বিশ্ব অর্থনীতিতে ঘটে চলা পরিবর্তনগুলিকে প্রতিফলিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট চার নেতা নিজ নিজ দেশগুলিকে প্রধান বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন: ‘সমন্বিত, উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলির আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থানগুলিতে বৃহত্তর কণ্ঠস্বর এবং প্রতিনিধিত্ব থাকা জরুরি।’
বেশ কিছু দিক থেকে এটি ছিল বহুপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার এক যুগের সূচনা, যেখানে দেশগুলির একটি এককালীন জোট বিশ্বব্যাপী আমদানি সংক্রান্ত অর্থনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের পুনর্বণ্টনের একটি অভিন্ন দাবিকে কেন্দ্র করে সচল হয়ে ওঠে। ব্রাজিলিয়ায় দ্বিতীয় ব্রিক সম্মেলনে ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা যোগ দেয়, দেশটিকে সে সময়ে একটি সদস্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্রিক (BRIC) শব্দবন্ধে ‘S’ অক্ষরটি যোগ করা হয়।
পরবর্তী বছরগুলিতে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থায় একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর অর্জনের উদ্দেশ্যে ব্রিকস-এর লক্ষ্য মূলত পাঁচটি দেশকে দু’টি সম্ভাবনা প্রদান করেছে: আন্তর্জাতিক প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করা বনাম তার সংস্কার করা। একটি প্রাতিষ্ঠানিক উদ্ভাবন, যা একই সঙ্গে দুই উচ্চাকাঙ্ক্ষাকেই ধারণ করতে পারে, তা হল ব্রিকস ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, যা ২০১৩ সালে ডারবানে শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠিত হয়। এক দিকে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ককে (এনডিবি) – যেমনটা এটির নামকরণ করা হয়েছিল - একটি চ্যালেঞ্জার হিসাবে দেখা যেতে পারে। সদস্য রাষ্ট্রগুলি এই ব্যাঙ্ককে প্রাথমিক ভাবে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ প্রদান করে সহায়তা জোগায়, যার ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি বিকল্পের সূচনা ঘটে, যেটি সেই সময়ে ৬৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ থাকার দাবি করেছিল৷ একই সময়ে ব্রিকস নেতারা এমন একটি পরিকাঠামো গ্রহণ করেছিলেন, যা বিশ্বের কাছে এনডিবিকে বিকল্প প্রস্তাব ও আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রশাসনকে গণতান্ত্রিক করে তোলার একটি উদ্যোগ হিসাবে তুলে ধরে।
নয়াদিল্লির জন্য ব্রিকসের মধ্যে চিনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক আধিপত্যের মোকাবিলা করার জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় শক্তি হিসেবে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। এবং এমন এক সময় ছিল, যখন নয়াদিল্লি এবং বেজিং একত্রে আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জগুলি সম্পর্কে সরব হতে পারত। যদিও বর্তমানে ব্রিকসের মধ্যকার চ্যুতিরেখাগুলি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে, যখন রাশিয়া এবং চিন গোষ্ঠীটির ভূ-অর্থনৈতিক অভিমুখিতাকে একটি স্পষ্টতই ভূ-রাজনৈতিক অভিমুখিতায় রূপান্তরিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে, যা এটিকে একটি পশ্চিম-বিরোধী মঞ্চ করে তোলে। এমনকি একই ছাতার নিচে ভারত ও চিনের প্রতিনিধিদের একত্রে আনার কাজটি ক্রমশ অস্বস্তিজনক হয়ে উঠছে।
ব্রিকস সদস্যপদ সংক্রান্ত বিদ্যমান সম্প্রসারণের প্রসঙ্গে গোষ্ঠীটির জন্য একটি নতুন পর্যায়ের সূচনা করেছে, যেখানে পাঁচ দেশের একটি ছোট মঞ্চ হিসাবে গোষ্ঠীটি এক অভিন্ন লক্ষ্যের সন্ধান চালাচ্ছে। ক্রমহ্রাসমান পারস্পরিক বিশ্বাস ইতিমধ্যে গোষ্ঠীটির ভঙ্গুর ভিত্তিকে ক্ষয় করতে শুরু করেছে। বর্তমানে জানা যাচ্ছে যে, এ বছর গোষ্ঠীটিতে সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইথিওপিয়া, মিশর ও আর্জেন্টিনার মতো ছ’টি আরও নতুন সদস্য দেশের যোগদানের বিষয়টি আরও কয়েকটি দেশ অনুসরণ করবে, যা ব্রিকসকে গ্লোবাল সাউথের এক সম্মিলিত কণ্ঠস্বর হিসেবে তুলে ধরবে। আন্তর্জাতিক অস্থিরতার মধ্যে যেখানে বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলি ব্যর্থ হচ্ছে এবং বহুপাক্ষিকতা বিকল্প মঞ্চ হিসাবে নিজেদের জাহির করার চেষ্টা করছে, তখন ব্রিকসের বিষয়টি নিঃসন্দেহে লক্ষ্যণীয় হয়ে উঠবে।
এই প্রতিবেদনটি ব্রিকসের মূল অংশীদারদের বিতর্কিত দাবিগুলির উপর আলোকপাত করে। কারণ একটি নতুন প্রেরণার সন্ধান রয়েছে। যেমনটা কল্পিত এ মানকিকর উল্লেখ করেছেন, চিনের জন্য ব্রিকসের মতো গোষ্ঠীগুলি তার আন্তর্জাতিক নেতৃত্বকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য এক প্রধান মঞ্চ। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, চিনের শীর্ষ নেতৃত্বের জন্য ব্রিকস ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে খাটো করা এবং গ্লোবাল সাউথের একাধিক দেশের মধ্যে পাশ্চাত্যের প্রতি ক্ষোভকে কাজে লাগানোর সুযোগ সংক্রান্ত এক বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে।’
নিবেদিতা কপুর রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি তুলে ধরেছেন এবং তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে, ‘পশ্চিমী আধিপত্য হ্রাস ও বাহ্যিক চাপ মোকাবিলা করতে সক্ষম এ হেন অ-পশ্চিমী বিশ্বের উত্থানের চিহ্ন হিসাবে ব্রিকসের সম্প্রসারণ সম্পর্কে ধারণা করা জরুরি এবং দুর্বলতা সত্ত্বেও গোষ্ঠীটি যে মূল্যবান, তেমন বৃহত্তর মনোভাব পোষণ করা দরকার।’ তিনি দাবি করেন, কেউ কেউ কাঠামোগত সংগঠনের অভাব বা গোষ্ঠীটির মূল্যবোধের স্বচ্ছতার অভাবকে দুর্বলতা হিসাবে মনে করলেও এটিকে ‘বহুপাক্ষিক পরিসরে নমনীয় জোটের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রেক্ষিতে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে মনে করা শ্রেয় নয়।’
হরি শেষশায়ী লাতিন আমেরিকার উপরে আলোকপাত করেছেন এবং ‘সামান্যতম হলেও পশ্চিম-বিরোধী প্রবণতাসম্পন্ন বহুপাক্ষিক জোটগুলির’ আঞ্চলিক দ্বিধাদ্বন্দ্বকে তুলে ধরেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, ‘ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং সম্ভবত লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশ অবশেষে ব্রিকসে যোগ দিলেও আমরা অনুমান করতে পারি যে, সেই দেশগুলি পশ্চিম এবং ব্রিকস-সম্পর্কিত যে কোনও উদ্যোগের মধ্যে নিজেদের স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রেখে চলবে।’
সমীর ভট্টাচার্য ব্রিকসের সম্প্রসারণকে আফ্রিকার জন্য অনেকাংশেই ইতিবাচক বলে মনে করেন। মিশর ও ইথিওপিয়ার মতো আফ্রিকার আরও দু’টি দেশের অন্তর্ভুক্তি মঞ্চটিকে মহাদেশের কণ্ঠস্বরকে সুদৃঢ় করতে পারলেও সমীর মনে করেন যে, ‘বেশ কিছু দেশ এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন যে, পশ্চিমী শক্তিগুলি ব্রিকস-এ সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সদস্যপদকে বিকল্প ভূ-রাজনৈতিক ব্লক বা সমন্বয় সৃষ্টির এক প্রয়াস বলে মনে করতে পারে।’ এ ছাড়াও ‘নিজেদের তাদের মতভেদকে দূরে সরিয়ে রেখে আফ্রিকার স্বার্থে সহযোগিতা করা’র নিরিখে আফ্রিকার দেশগুলির ক্ষমতাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
কবীর তানেজা পশ্চিম এশীয় দৃষ্টিকোণ থেকে মঞ্চটির উপর আলোকপাত করেছেন। এটি এমন এক ভৌগোলিক অঞ্চল, যা বর্তমানে ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং মিশরের মতো দেশগুলির অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ব্রিকসে আধিপত্য বিস্তার করছে। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে, এই দেশগুলির অধিকাংশের জন্যই মঞ্চটি একটি ‘সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রণোদনার আশায় ন্যূনতম ঝুঁকিসম্পন্ন একটি স্বল্পমেয়াদি ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান’ হয়ে রয়ে গিয়েছে। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, পশ্চিম এশীয় দেশগুলি মূলত উদীয়মান মার্কিন-চিন ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা চালাবে, যাতে তারা ‘প্রকাশ্যে কোনও পক্ষাবলম্বন না করেই ওয়াশিংটন এবং বেজিং… উভয়ের তরফেই সুবিধা ভোগ করতে পারে।’
ভূ-রাজনৈতিক চাপানউতোর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এবং বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলি আন্তর্জাতিক প্রবাহ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হওয়ার দরুন ব্রিকসের মতো মঞ্চগুলি বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করতে সমর্থ হবে। গোষ্ঠীটির প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহের কারণে আগামী বছরগুলিতেও সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবুও এই প্রতিবেদনের লেখকদের দ্বারা দর্শানো বক্তব্য অনুযায়ী, ব্রিকসের গতিপথ এই সন্ধিক্ষণে অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয়েছে, যেখানে মঞ্চটি থেকে ভিন্ন ভিন্ন অংশীদারের নানাবিধ আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা রয়েছে। এবং ঠিক এখানেই ব্রিকসের সাফল্য বা ব্যর্থতা নিহিত থাকবে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে গোষ্ঠীটি একটি দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এলেও এটি এখনও অভিন্ন উদ্দেশ্যের ধারণা খুঁজে পেতে যথেষ্ট যুঝছে।
কল্পিত এ মানকিকর
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (ইউএস) কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ভিয়েতনাম যুদ্ধের হতাহতের চেয়ে বেশি হওয়ার ঘটনা দেশটির উপর কোভিড-১৯-এর প্রভাব সম্পর্কে একটি ধারণা দেয়।(৩) প্রকৃতপক্ষে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ধনী দেশগুলি-সহ সারা বিশ্বে অতিমারির প্রভাব অনুভূত হয়েছে এবং একাধিক দেশ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের সর্বোত্তম উপায়ের সন্ধানে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এটি চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বৃহৎ শক্তি প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ভূ-রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসকে আরও জটিল করে তুলেছে, যে পরিস্থিতিকে প্রায়শই ঠান্ডা লড়াইয়ের সমতুল্য বলে মনে করা হচ্ছে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন যেমনটা করেছিল,(১) চিনও ঠিক তেমন ভাবেই ব্রিকসের মতো গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবহার করে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্মানকে ক্ষুণ্ণ করতে চাইছে এবং দেশটির আসল উদ্দেশ্যগুলিকে পরোপকারী উদ্যোগের মোড়কে রেখে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য একাধিক দেশকে আকৃষ্ট করতে চাইছে।
বিশ্ব রাজনীতি সম্পর্কে চিনের মূল্যায়নকে দু’টি বিকল্পের একটি সেটের মাধ্যমে তুলে ধরা যায়। ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে ব্রিকস সম্মেলনে নিজের বক্তৃতায় চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন যে, বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় চাপানউতোর এবং রূপান্তর সহাবস্থান করছে।(৪) তিনি বলেন, গ্লোবাল সাউথের দেশগুলি দু’টি বিকল্পের সম্মুখীন হবে: সমন্বিতকরণ এবং সহযোগিতা বনাম বিভাজন এবং সংঘর্ষ অর্থাৎ শান্তি বজায় রাখার জন্য বা ঠান্ডা লড়াইয়ের মোকাবিলা করার জন্য একত্রিত হওয়া।(৫) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে একাধিপত্যের দরুন সমন্বয় হ্রাসের বিপরীতে শি উন্নয়নশীল দেশগুলির কাছে উত্থাপন করেছেন যে, অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ‘সমৃদ্ধির পথ’-এ হাঁটার চাবিকাঠি রয়েছে চিনের কাছেই।(৬) এ হেন ভাবনা পিপলস ডেলি সংবাদপত্রের একটি নিবন্ধে প্রকাশিত হয়েছে, যা ‘ঔপনিবেশিক সংগ্রাম’-এর একটি অভিন্ন সাধারণ কারণকে তুলে ধরে। নিবন্ধটিতে বলা হয়েছে যে, ১৯৪০-এর দশকে বিশ্ব উত্তরাধিকার সূত্রে একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার সাক্ষী থেকেছে, সেটি উন্নয়নশীল দেশগুলির চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ হয়েছে এবং চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।(৭) এটিতে আরও বলা হয়েছে যে, ‘নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা’ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং চিনের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ককে একটি বিকল্প হিসেবে তুলে ধরেছে, যেখানে পাঁচ প্রতিষ্ঠাতা দেশের সমান অধিকার এবং ভোটাধিকার রয়েছে এবং যেটি বহুপাক্ষিক উন্নয়নমূলক আর্থিক সংস্থাগুলির জন্য একটি রোল মডেল হিসাবে কাজ করে।(৮) এই যুক্তির অন্তর্নিহিত কথাটি হল যে, চিন এমন এক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচার চালাচ্ছে, যা আরও সমতাবিশিষ্ট ও ন্যায়সঙ্গত।
ব্রিকসের কর্মসূচি বর্তমানে ‘ডলারের আধিপত্য’ ব্যাহত করার চিনা লক্ষ্যের সঙ্গে সমাপতিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। যেহেতু সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চিন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে, তাই চিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘আর্থিক আধিপত্য’-এর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ চালিয়েছে। চিনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের ভাষ্যকাররা ২০২০ সালে অতিমারি শুরু হওয়ার পর থেকে আর্জেন্টিনার (যে ঘটনাক্রমে বর্তমান সম্প্রসারণ পর্বে ব্রিকসে যোগদান করেছে) মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি এবং ঝুঁকি সৃষ্টির কারণ হিসেবে মার্কিন মুদ্রা নীতিকে দায়ী করেছেন।(৯) ১৯৯০-এর পর থেকে প্রথম বারের মতো আর্জেন্টিনায় মুদ্রাস্ফীতি ১০০ শতাংশের সীমা অতিক্রম করেছে।
তা সত্ত্বেও মার্কিন আর্থিক আধিপত্যের উপর চিনের আক্রমণ এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের প্রতি আকস্মিক সহানুভূতি প্রদর্শন কেবলমাত্র ডি-ডলারাইজেশন এবং একই সঙ্গে ইউয়ানের জায়গা সশক্ত করার লক্ষ্যে একটি প্রচেষ্টা মাত্র। সেন্ট্রাল কমিশন ফর ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত গবেষক গুয়াং জিয়াও পু-র একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে, ডলারের উপর ‘বিশ্বাসের ক্ষয়’ চিনের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিষ্পত্তিতে ইউয়ানের অনুপাতকে প্রসারিত করার একটি মোক্ষম সুযোগ।(১০) গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে যে, চিনকে অবশ্যই সাংহাইয়ের মতো আর্থিক কেন্দ্রগুলিতে মানব সম্পদের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে চিনের আমদানি ও রফতানি মেলা, পরিষেবামূলক বাণিজ্যের জন্য চিনের আন্তর্জাতিক মেলা এবং ইউয়ানকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য আন্তঃসীমান্ত ই-কমার্স অঞ্চল ব্যবহার করতে হবে। এখন এটিকে ব্রিকসের কর্মসূচির সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে, যেখানে মার্কিন ডলারের ‘আধিপত্য’কে মোকাবিলা করার জন্য আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিষ্পত্তির জন্য জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার এবং একটি সমান্তরাল ইন্টারব্যাঙ্ক পেমেন্ট সিস্টেমের কথা বলা হয়েছে।(১১) ২০২৬ সালের মধ্যে বণ্টন করা মোট তহবিলের ৩০ শতাংশে স্থানীয় মুদ্রায় ঋণ প্রদান বৃদ্ধি সংক্রান্ত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের পরিকল্পনা থেকে এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, মিত্রদেশগুলির আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিও চিনা কর্মসূচির পালে হাওয়া দিচ্ছে।(১২)
জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস অনুযায়ী, অন্যান্য ব্রিকস অর্থনীতির সঙ্গে চিনের বাণিজ্য ২০২৩ সালের জানুয়ারি-জুন মাসের মধ্যে বছর প্রতি বছরে ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে এর পরিমাণ প্রায় ৩২৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।(১৩) ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে চিনের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের ১০ শতাংশ অন্যান্য ব্রিকস দেশের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে।(১৪) এই হিসাব অনুযায়ী, চিন বিশ্বাস করে যে, বাণিজ্যের পরিমাণের ঊর্ধ্বমুখী গতিপথ এবং আরও বেশি সংখ্যক দেশের ব্রিকস গোষ্ঠীতে যোগদানের সঙ্গে সঙ্গে ডি-ডলারাইজেশনের একটি প্রবণতা শুরু হবে।(১৫)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মাঝে চিনা উদ্দেশ্য ও ঘাটতিগুলিকে মোকাবিলা করার প্রচেষ্টাকে পরার্থপরতা বলে মনে হতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, সিনহুয়ায় একটি প্রবন্ধে শি গ্লোবাল সাউথের স্থিতিশীল উন্নয়ন এবং কৃষিতে বৃহত্তর সহযোগিতার সম্ভাবনার পক্ষাবলম্বন করেছেন এবং জি-২০-তে আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দর্শিয়েছেন।(১৬) এটি এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন চিন খাদ্য নিরাপত্তা পরিসরে নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে এবং দেশের সুবিশাল জনসংখ্যার খাদ্য জোগানোর বিষয়ে শি-র ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে খরা এবং বন্যা বারবার চিনের কৃষি উৎপাদনকে প্রভাবিত করেছে। সেই প্রেক্ষিতে শি কৃষিজমিকে ‘উৎপাদনের প্রাণশক্তি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং খাদ্য উৎপাদনের জন্য উপলব্ধ জমি বৃদ্ধি করার চেষ্টা চালিয়েছেন।(১৭) উর্বর ভূমির প্রাচুর্যসম্পন্ন আফ্রিকা তাই শি-র খাদ্য নিরাপত্তা অভিযানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ব্রিকসের মতো গোষ্ঠীগুলি চিনের বিশ্ব নেতৃত্বকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য একটি মূল মঞ্চ। এই প্রচেষ্টায় গোষ্ঠীটির অভিজাত দেশগুলি বিশ্বের একটি শূন্য-সমষ্টি মূল্যায়ন বা জিরো-সাম অ্যাসেসমেন্ট তুলে ধরে - দেশগুলির সামনে কঠোর পছন্দ (পড়ুন চিন) বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বেছে নেওয়ার তীব্র দ্বন্দ্ব রয়েছে। শি-র জন্য এই পরিস্থিতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অপমান করার এবং একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করার সুযোগ প্রদান করে এই আশায় যে, চিন পশ্চিমী দেশগুলির সাপেক্ষে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলির অভিযোগগুলিরও প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় চিন দক্ষিণ এশিয়ার কিছু অংশে খরচসাপেক্ষ অবকাঠামো প্রকল্প নির্মাণের নিজস্ব রেকর্ডকে ঝেড়ে ফেলতে চায় এবং কোভিড-১৯-এর ফলে বিধ্বস্ত দেশগুলির ঋণের বাধ্যবাধকতা পুনর্বিন্যাস করার বিষয়টিকে তেমন আমল দিতে ইচ্ছুক নয়।
প্রাসঙ্গিক ভাবেই ভারত ও চিন উভয়েই গ্লোবাল সাউথ সংক্রান্ত অনুরূপ প্রচেষ্টা তুলে ধরছে। জি২০ সভাপতিত্বের অধীনে তার ঔপনিবেশিক ইতিহাসের সূত্র ধরেই ভয়েস অফ গ্লোবাল সাউথ শীর্ষ সম্মেলনের মতো মঞ্চের মাধ্যমে ভারত গ্লোবাল সাউথের প্রতি বৃহত্তর প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছে।(১৮) চিন কখনও ঔপনিবেশিকতার শিকার হয়নি, বরং তার কর্মসূচির সঙ্গে সমতা বিধান করে এ হেন ঔপনিবেশিক আখ্যানকে কাজে লাগিয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলির বৃহত্তম গোষ্ঠী জি৭৭ + চিন শীর্ষ সম্মেলনের আগে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চিনের অর্থনৈতিক কৌশলগুলিকে গ্লোবাল সাউথের উৎপাদক হয়ে ওঠার পরিবর্তে ভোক্তায় পর্যবসিত হওয়ার প্রধান কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।(১৯) তিনি গ্লোবাল সাউথ দেশগুলিকেও সতর্ক করেছিলেন যে, তারা ‘অস্বচ্ছ উদ্যোগের’ কারণে আরও বেশি পরিমাণে ঋণ সংক্রান্ত ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে।(২০) গ্লোবাল সাউথের দেশগুলির জন্য তাই বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রাজ্ঞ হওয়ার উপদেশটি যথার্থ।
নিবেদিতা কপুর
ব্রিকস সংক্রান্ত রুশ আখ্যান প্রায়শই একটি অ-পশ্চিমী সংস্থা হিসাবে মূল ব্রিক গঠনে দেশটির ভূমিকা তুলে ধরে, যা একমেরুবিশিষ্ট বিশ্ব ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কার করতে পারে। সংগঠনের বিবর্তনের সমান্তরালে ব্রিকসের সূচনাকালীন ভূমিকা ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে এই বোঝাপড়ার ধারণাটি পরিবর্তিত হয়েছে এবং বর্তমানে তা ব্রিকসের সম্প্রসারণের বিভিন্ন ব্যাখ্যায় প্রতিফলিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে, ব্রিকস গঠনের সময় রাশিয়া নিজেই এটিকে একটি ‘পূর্ণাঙ্গ বিশ্ব প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান’ বলে মনে করেনি(২১) এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় বিকশিত শক্তির সমীকরণের কারণে এই ভাবনাটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক আখ্যান
সবচেয়ে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা গিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট স্তরে প্রশাসন এবং বিদেশ মন্ত্রক থেকে আসা আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে। ২০১৬ সালের রুশ বৈদেশিক নীতি ধারণাটিতে বিশ্ব উন্নয়নের জন্য ‘ভৌগোলিক ও সভ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে’ প্রধান রাষ্ট্রগুলির প্রতিনিধিত্বের প্রসঙ্গে ব্রিকসের উল্লেখ করা হয়েছিল।(২২) আর ২০২৩ সালের ধারণা সেটিকে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা গ্রহণ ছাড়াও ‘একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থিতিশীল বিশ্ব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য’ বিভিন্ন উপকরণের অন্যতম হিসেবে তুলে ধরেছে।(২৩) রুশ বিদেশনীতির পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপট এবং উচ্চ-পদস্থ আধিকারিকদের মন্তব্যের যুগ্ম প্রেক্ষিতে এই ভাষ্য ব্রিকসের মূল চিন্তাভাবনা থেকে বিশেষ আলাদা নয় এবং এটি রূপান্তরশীল বিন্যাসকে আরও স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরে।
ব্রিকস যে ‘কারও বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না’… এ হেন মনোভাব বজায় রাখার সময় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নেতাদের সভায় তাঁর বক্তৃতায় ‘নিয়ম-ভিত্তিক ব্যবস্থা’, ‘পশ্চিমের নব্য ঔপনিবেশিকতা’(২৪) এবং এটির নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কথা উল্লেখ করে আসলে এমন একটি বিষয় তুলে এনেছেন, যা অতীতে রুশ নেতৃত্বের ব্রিকস বক্তৃতায় খুব কমই জায়গা করে নিয়েছে।(২৫) এই সুতীক্ষ্ণ রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য অ-পশ্চিমী বিকল্পগুলিকে খুঁজে বের করার উপর বর্ধিত মনোযোগের সঙ্গে সমাপতিত হয়েছে, বিশেষ করে যখন পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়ার উপর আরও বেশি করে আক্রমণ জোরদার করে চলেছে। বর্তমানে ব্রিকস মস্কোর ডি-ডলারাইজেশন, জাতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য, বিকল্প অর্থপ্রদানের ব্যবস্থা এবং গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার ভাবনা সংক্রান্ত সক্রিয় আলোচনা চালানোর জন্য একটি দরকারি ফরম্যাটে পরিণত হয়েছে। এই সংমিশ্রণটি রাশিয়ার বিদেশ নীতি এবং ব্রিকসের মধ্যে একটি সমন্বয় প্রদর্শন করতে আগ্রহী, যা বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সর্বশেষ নিবন্ধে স্পষ্ট হয়েছে।(২৬)
রুশ সরকার দর্শিয়েছে যে, কী ভাবে ব্রিকস একটি বহুমুখী বিশ্বব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করে। অপর একটি আধিপত্যমূলক শক্তি হয়ে ওঠার তার কোনও লক্ষ্য নেই… এমনটা জোর দিয়ে বললেও রাশিয়ার সরকারি আখ্যান এটিকে পশ্চিমের একটি ‘বিকল্প’ হিসাবে উপস্থাপন করার উপরেই জোর দিয়েছে।(২৭) এই প্রসঙ্গে ব্রিকসের শুধুমাত্র জি৭-এর বিরুদ্ধাচরণ করাই এক মাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়… এমনটা বলা হলেও(২৮) ২০২৩ সালের শীর্ষ সম্মেলনের দৌড়ে জি৭-এর সঙ্গে ব্রিকসের একাধিক তুলনা টানা হয়েছে(২৯)। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ব্রিকস কী ভাবে জি৭-কে পিপিপি-র নিরিখে পিছনে ফেলে দিয়েছে।(৩০) সামগ্রিক ভাবে, এর অর্থ হল ব্রিকস সম্প্রসারণের জন্য সরকারি পর্যায়ে সক্রিয় রাশিয়ার সমর্থন প্রক্রিয়াটিকে তার জাতীয় স্বার্থের সহায়তাকারী হিসাবে মনে করে।
রাশিয়ায় বিতর্ক
সম্প্রসারণের বিষয়ে বিশেষজ্ঞের আলোচনা আরও বৈচিত্র্যময় এবং অনেক বেশি সংযত হয়েছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ব্রিকসের বিবর্তনের সাধারণ প্রবণতা এবং নতুন সদস্যদের যোগদানের ফলে প্রক্রিয়াটির সুবিধা এবং চ্যালেঞ্জগুলি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনার উপর মনোযোগ দেওয়ার বিষয়ে রুশ কর্মসূচির পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং এটি এমন একটি প্রবণতা, যা ইতিমধ্যেই ব্রিক ২০১০ সালে ব্রিকস হয়ে ওঠার মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণে আরও সম্প্রসারিত কর্মসূচির অভিমুখে প্রথম বারের মতো ২০১৪ সালের পরে(৩১) এবং বিশেষ করে ২০২২ সালের ইউক্রেন আক্রমণের পরে এই প্রবণতা তীব্রতর হয়েছে। রাশিয়া-পশ্চিমী দেশগুলির সম্পর্কের এই অবনতির পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান মার্কিন-চিন বৈরিতাকে বেশ কিছু রুশ বিশেষজ্ঞ বিশ্বব্যাপী উন্নয়নগুলিকে উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রভাবিত করার পরিবর্তে ব্রিকস সূচনার কারণ হিসেবে দর্শিয়েছেন, যা তাঁদের কথায় ‘বিশ্বব্যবস্থার বিবর্তনের সমীকরণ এবং রাশিয়া ও চিনের তরফে এক মহান কৌশলকেই প্রতিফলিত করে।’(৩২)
বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রের জি৭-এর সঙ্গে সম্পর্কের ভিন্নতার মতোই একই সময়ে পশ্চিমীদের সঙ্গে কিছু সদস্য দেশের সম্পর্কের অর্থ একটি পশ্চিম-বিরোধী সংস্থা হিসাবে ব্রিকসের উত্থান নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, প্রত্যক্ষ ‘বিরোধিতা’ সৃষ্টির যে কোনও প্রচেষ্টা ব্রিকসের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিভাজন ঘটাতে পারে।(৩৩) ব্রিকস ঐক্যকে প্রকাশ্যে ‘সংশোধনবাদী’ তকমা না দিয়ে সরকারি বিবৃতিগুলির মতো বিশেষজ্ঞদের যুক্তিও বেশ সতর্ক মনোভাব পোষণ করেছে। এই প্রেক্ষিতে এটিকে একটি অতিরিক্ত বিকল্প হিসাবেও ব্যাখ্যা করা হয়, যা আরও ন্যায়সঙ্গত নীতির উপর ভিত্তি করে রচিত এবং নিয়ম-নির্ধারণের জন্য পশ্চিমীদের ক্ষমতা হ্রাসের কারণে ধীরে ধীরে তার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।(৩৪) রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের সমর্থন জোগানোর জন্য বিশেষজ্ঞরা পশ্চিমী দেশগুলির তরফে বাহ্যিক চাপকে প্রতিহত করার জন্য ব্রিকস রাষ্ট্রগুলির সদিচ্ছাকে ব্যাখ্যা করার বিরুদ্ধেও সতর্ক করেছেন।(৩৫)
এর সঙ্গে জড়িত নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সাংগঠনিক ঐক্য বজায় রাখার পাশাপাশি ব্রিকসের অভ্যন্তরে নিজস্ব লক্ষ্য অনুসরণ করার জন্য রাশিয়ার ভারসাম্যমূলক অবস্থানের কথা মাথায় রাখলে সম্প্রসারণকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করা হয়। অর্থনৈতিক স্তরেও এমন একটি ধারণা রয়েছে যে, ব্রিকস অবশেষে ডি-ডলারাইজেশনের পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করবে(৩৬) এবং জাতীয় মুদ্রায় প্রকল্পের অর্থায়নকে(৩৭) ত্বরান্বিত করবে। একটি একক মুদ্রা ব্যবহারের সমস্যা স্বল্পমেয়াদে সমাধান হবে বলে আশা করা হয়নি এবং এই ধরনের একটি প্রচেষ্টার জন্য রাজনৈতিক সমর্থনের অভাবই তার নেপথ্যে প্রধান কারণ।(৩৮) কেউ কেউ মনে করেন যে, সম্প্রসারণ শুধু মাত্র একটি একক মুদ্রা তৈরির কাজটিকে আরও কঠিন করে তুলবে এবং ডলারের একচেটিয়া আধিপত্যকে বিনষ্ট করা সহজ কাজ নয়।(৩৯) তা সত্ত্বেও জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার ও বিকল্প অর্থপ্রদানের পদ্ধতির মতো অন্যান্য ক্ষেত্রে ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে সতর্ক আশাবাদ রয়েছে।(৪০)
রাজনৈতিক স্তরে, ব্রিকসে যোগদানের জন্য অন্যান্য দেশের আগ্রহকে অ-পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলির সহযোগিতার বিকল্প পদ্ধতির সন্ধানের জন্য সদিচ্ছা হিসাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।(৪১) একই সঙ্গে ব্রিকস নীতিগুলির আকর্ষণ একটি পরিবর্তনশীল বিশ্বব্যবস্থার দিকে ইঙ্গিত করে।(৪২) সম্প্রসারণের পাশাপাশি এ কথাও বিশ্বাস করা হয় যে, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সংস্থাটির ভাবমূর্তি উন্নীত হবে।(৪৩) সামগ্রিক ভাবে ব্রিকস এবং তার সম্প্রসারণ নিয়ে রুশ বিতর্কে উল্লেখযোগ্য বাস্তববাদ স্পষ্ট হয়েছে, যা একটি প্রসারিত সংস্থার সামনে সুযোগ ও প্রতিবন্ধকতা… উভয় সম্পর্কেই স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করে। রুশ সরকারি অবস্থানটি ব্রিকস কর্মসূচিতে রাজনৈতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিলেও কিছু বিশেষজ্ঞ বেশির ভাগ ব্রিকস অর্থনীতির জন্য কঠিন সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক বিষয়গুলির সঙ্গে সম্পর্কিত ‘ব্যবহারিক ভাবনায় মনোযোগের অভাব’-এর জন্য সংস্থাটির সমালোচনা করেছেন।(৪৪)
প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা বিকাশের প্রয়োজনীয়তা প্রায়শই বিশেষজ্ঞদের আলোচনায় উঠে আসে, যেখানে সংস্থার ‘সম্প্রসারণ এবং সমন্বিতকরণ’-এর ভারসাম্য রক্ষার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।(৪৫) এই যুক্তিও দেওয়া হয়েছে যে, সদস্যপদের সংখ্যা বৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয় ভাবে ব্রিকসের ‘গুণগত বৃদ্ধি’কে চালিত করতে পারে না এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কাজটি আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।(৪৬) ‘মূল ক্ষেত্রগুলিতে ব্যবহারিক ফলাফল’ দর্শানোর প্রয়োজনীয়তা(৪৭) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। ব্রিকসের পশ্চিমী শক্তিগুলির বিকল্প হয়ে ওঠার ক্ষেত্রেও এমনটা আলোচনা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এই যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে, ‘বিশ্ব উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা সমস্যা সমাধান’-এর পথ খুঁজে বের করা আরও কঠিনতর হবে এবং এমনটা করার জন্য রাজনৈতিক বিবৃতির ঊর্ধ্বে উঠে প্রয়াস চালাতে হবে।(৪৮) ব্রিকসের সামনে প্রতিবন্ধকতাগুলিকে পাঁচটি বৃহৎ শক্তির আন্তঃসম্পর্কিত সমস্যা (উদাহরণস্বরূপ, ভারত ও চিনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা) এবং সম্প্রসারণের প্রভাব (ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা) থেকে উদ্ভূত হতে পারে।(৪৯) এই বিতর্কগুলিতে তেমন আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি – তা সে ব্রিকসের তরফে রাশিয়ার ‘নিরাপত্তা ক্ষেত্রের আচরণমূলক নিয়ম’-এর(৫০) প্রচার অথবা একটি ‘সাধারণ অর্থনৈতিক পরিসর’(৫১) নির্মাণের জন্য সুযোগ প্রদানের চেষ্টাই হোক – খুব কমই লক্ষ করা গিয়েছে।
সরকারি পর্যায়ে পশ্চিম-বিরোধী রুশ অবস্থান থাকা সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞদের আলোচনায় স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে, রাশিয়া এবং ইরানের বাইরে অন্যান্য সদস্য এই ধরনের আচরণের জন্য কোনও আগ্রহ প্রদর্শন করেনি।(৫২) কেউ কেউ আরও এক ধাপ এগিয়ে যুক্তি দর্শিয়েছেন যে, বিশ্বব্যবস্থাকে ধ্বংস না করে উন্নততর করে তোলা ব্রিকস সদস্যদের স্বার্থের অনুকূল। ‘বিপ্লব'-এর বিপরীতে এই ধরনের প্রচেষ্টাকে বর্ণনা করার জন্য ‘সংশোধনবাদ’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করার সময় এই যুক্তি দেওয়া হয় যে, এটি ব্রিকসকে বিভক্ত করবে এবং আখেরে পশ্চিমেরই উপকার করবে।(৫৩ )
উপসংহার
ব্রিকস সম্প্রসারণকে পশ্চিমী আধিপত্যের পতন এবং অ-পশ্চিমী বিশ্বের উত্থানের চিহ্ন হিসাবে মূল্যায়ন করলে জোটটিকে তার দুর্বলতা সত্ত্বেও বৃহত্তর মূল্যবোধসম্পন্ন বলে মনে করা হয়। একটি কাঠামোগত সংগঠনের অভাব এবং এর মূল্যবোধের নিরিখে স্বচ্ছতার অনুপস্থিতি নিয়ে যখন কেউ কেউ সমালোচনা করেন, তখন বহুপাক্ষিক পরিসরে নমনীয় জোটের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার কারণে এটিকে প্রতিবন্ধকতা হিসাবে দেখা হয় না।(৫৪)
যে প্রশ্নটি রয়ে গিয়েছে তা হল, বিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থায় সম্প্রসারিত ব্রিকস কতটা কার্যকর হবে, যখন এ কথা প্রদত্ত যে ‘শক্তির আন্তর্জাতিক ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে এটির একটি কারণ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।’(৫৫) পরিস্থিতি এখনও বিশ বাঁও জলে এবং এর উত্তরের অপেক্ষায় সকলের নজর থাকবে ২০২৩ সালে রাশিয়া আয়োজিত পরবর্তী ব্রিকস সম্মেলনের উপর।
হরি শেষশায়ী
একটি গোষ্ঠী, যেখানে একটি দেশের অর্থনীতি অন্য সব সদস্যের সম্মিলিত অর্থনীতির চেয়েও বড়, সেই গোষ্ঠী কি আদৌ কখনও সমান হতে পারে?
বিশ্লেষক, গণমাধ্যম এবং এমনকি সরকারও ক্রমবর্ধমান ভাবে গোষ্ঠীটির উল্লেখ করার জন্য ‘চিন নেতৃত্বাধীন’ রূপক ব্যবহার করায় এটিই ব্রিকসের সামনে একটি মৌলিক দ্বিধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।(৫৬) প্রকৃত পক্ষে, ব্রিকসের সাম্প্রতিক সম্প্রসারণ - আর্জেন্টিনা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো ছ’টি নতুন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য - বেজিংয়ের নেতৃত্বাধীন একটি উদ্যোগের ফলাফল, যা পাঁচ বছরেরও বেশি আগে শুরু হয়েছিল৷ মূল ব্রিকস সদস্যরা নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছলেও - যেমন এক ব্রাজিলভিত্তিক শিক্ষাবিদ দাবি করেছেন – এই সম্প্রসারণ ‘বেজিংয়ের জন্য একটি ভূ-রাজনৈতিক জয়ের কথাই তুলে ধরে।’(৫৭)
আর্জেন্টিনা ও লাতিন আমেরিকার দৃষ্টিভঙ্গি
নতুন ব্রিকস সদস্যদের অধিকাংশই ভৌগোলিক ভাবে পশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় অবস্থিত। আর্জেন্টিনার ভবিষ্যৎ সদস্যপদ — এক মাত্র লাতিন আমেরিকান দেশ, যা এই গোষ্ঠীটিতে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিল — অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। আর্জেন্টিনার আসন্ন নির্বাচনের কারণে ব্রিকসে আর্জেন্টিনার যোগদান অনিশ্চিত রয়েছে, যেখানে নির্বাচনে এগিয়ে থাকা দুই প্রেসিডেন্ট-পদপ্রার্থী প্রকাশ্যে গোষ্ঠীটির নিন্দা করেছেন। রাজনৈতিক বহিরাগত স্ব-ঘোষিত ‘নৈরাজ্য-পুঁজিবাদী' হাভিয়ের মিলেই প্রকাশ্যে চিনের বিরোধিতা করে বলেন যে, নির্বাচিত হলে তিনি ‘কমিউনিস্টদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবেন না। কারণ তারা অবাধ বাণিজ্য, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের মতো মৌলিক বিষয়গুলির সম্মান করে না।’(৫৮) আর এক পদপ্রার্থী প্যাট্রিসিয়া বুলরিচ – যিনি নিরাপত্তা বিষয়ে তাঁর কঠোর অবস্থানের জন্য পরিচিত - ঘোষণা করেছেন যে, ‘আমার সরকারের অধীনে আর্জেন্টিনা ব্রিকসে যোগদান করবে না।’(৫৯)
তবে যা মনে রাখা উচিত, তা হল উভয় প্রার্থীই এখনও নির্বাচনী প্রচারে মেতে রয়েছেন এবং জনসাধারণের উদ্দেশ্যে দেওয়া বিবৃতির লক্ষ্যই হল ভোট কুড়নো। চিনের সঙ্গে আর্জেন্টিনার ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং দেশটির কঠিন অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার পরিপ্রেক্ষিতে, যে কোনও প্রেসিডেন্টের পক্ষেই গোষ্ঠীটিতে যোগদানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা কঠিন হবে। এর পাশাপাশি আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ইরান, যাকে ব্রিকসে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ১৯৯২ সালে বুয়েনস আইরেসে ইজরায়েলি দূতাবাসে দু’টি বোমা হামলা এবং ১৯৯৪ সালে আর্জেন্টিনার ইজরায়েলাইট মিউচুয়াল অ্যাসোসিয়েশন (একটি ইহুদি সম্প্রদায় কেন্দ্র)… উভয়ই ঘটনাই হিজবুল্লা এবং তেহরানের সঙ্গে সংযুক্ত সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী দ্বারা ঘটার কারণে উপসাগরীয় দেশটির সঙ্গে আর্জেন্টিনার সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। যেখানে আর্জেন্টিনাই লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম ইহুদি সম্প্রদায়ের আবাসস্থল এবং তাঁদের মতামতের অভ্যন্তরীণ প্রভাবও যথেষ্ট, সেখানে এ হেন প্রস্তাব বিষয়টিকে আরও জটিল করে তোলে।
এমনকি যদি পরবর্তী আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ব্রিকসে যোগ দিতে অস্বীকার করেন, তা সত্ত্বেও লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশকে গোষ্ঠীটিতে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। বলিভিয়া এবং কিউবা প্রকাশ্যে এই গোষ্ঠীটিতে যোগদানের জন্য তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং উরুগুয়ে ইতিমধ্যেই ব্রিকস ব্যাঙ্কের সদস্য হয়েছে, যা আনুষ্ঠানিক ভাবে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এনডিবি) নামে পরিচিত।(৬০) এটি প্রাথমিক ভাবে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের সঙ্গে বেজিংয়ের দৃঢ় সম্পর্কের কারণে এবং লাতিন আমেরিকার নিয়মিত নীতিমালার প্রকাশের পাশাপাশি এই অঞ্চলে চিনের বিশেষ দূত পাঠানোর প্রয়াসে ঘটেছে।(৬১) লাতিন আমেরিকায় চিনের রাজনৈতিক প্রভাব এই অঞ্চলের সঙ্গে তার অর্থনৈতিক সংযোগের নিরিখে গৌণ। সর্বোপরি চিন এখন প্রায় দু’দশক ধরে দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে উঠেছে।(৬২)
লাতিন আমেরিকায় ব্রিকস+-এর ভবিষ্যৎ
লাতিন আমেরিকার মতো সুবিশাল এবং বৈচিত্র্যময় একটি অঞ্চল অবশ্যম্ভাবী ভাবে ব্রিকস গোষ্ঠী সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব পোষণ করে। কিউবা এবং বলিভিয়ার মতো পশ্চিম-বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন সরকারগুলি ব্রিকসের প্রতিশ্রুতিতে প্রভাবিত হয়ে এবং তাদের দ্বারা আমন্ত্রিত হলে গোষ্ঠীটিতে যোগ দেবে। মেক্সিকো, কলম্বিয়া এবং মধ্য আমেরিকার অন্যান্য দেশের তাদের ভৌগোলিক নৈকট্য ও পশ্চিমের উপর অর্থনৈতিক নির্ভরতার কারণে গোষ্ঠীটিতে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করার সম্ভাবনা ক্ষীণ। লাতিন আমেরিকা ঐতিহাসিক ভাবে ব্রিকসকে পশ্চিম-নেতৃত্বাধীন মডেলের এক বিকল্প হিসেবে দেখে এসেছে এবং এই দৃষ্টিভঙ্গি গোষ্ঠীটির প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে আকার দিয়েছে। বর্তমানে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণ এবং ইরানের মতো দেশগুলিকে সংযুক্ত করার কারণে এই অঞ্চলের কিছু দেশ ব্রিকসকে পশ্চিমবিরোধী জোট হিসাবে দেখতে শুরু করেছে – যে বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো পশ্চিমী অংশীদার দ্বারা পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। এই কারণেই এমনকি মেক্সিকোর বামপন্থী প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ মানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর প্রকাশ্যে নিশ্চিত করে বলেছেন যে, তাঁর দেশ এই গোষ্ঠীটিতে যোগ দেবে না। তিনি আরও বলেন যে, ‘ঘনিষ্ঠতা ও ভূ-রাজনৈতিক কারণে আমরা উত্তর আমেরিকা এবং সমগ্র আমেরিকার সঙ্গে মৈত্রীকে জোরদার করার প্রয়াস চালাব।’(৬৩)
সামান্যতম পশ্চিমবিরোধী মনোভাবসম্পন্ন বহুপাক্ষিক গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে লাতিন আমেরিকান অঞ্চলটি দ্বিধাবিভক্ত মনোভাব পোষণ করেছে। সম্ভবত সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ হল, ১৯৬১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর মেক্সিকো সফর, যেখানে দেশকে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে (এনএএম) যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হলে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট অ্যাডলফো লোপেজ মাতেওস দ্ব্যর্থহীন ভাবে বলেছিলেন যে, ‘মেক্সিকোর ক্ষেত্রে ‘স্বাধীন আন্তর্জাতিক নীতির অভিব্যক্তির অর্থ ‘নিরপেক্ষতা' বা তৃতীয় ব্লক গঠন বা এর সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার ইচ্ছা কিংবা আকাঙ্ক্ষা… কোনওটাই নয়।’(৬৪) সর্বোপরি ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং মেক্সিকো কখনওই এনএএম-এর পূর্ণ সদস্য হয়নি। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশ অবশেষে ব্রিকসে যোগদান করলেও তারা সম্ভবত পশ্চিম এবং ব্রিকস-সম্পর্কিত যে কোনও উদ্যোগের মধ্যে তাদের স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়াস চালাবে।
ব্রিকস+-এর জন্য সামনের রাস্তা
ব্রিকসের ভবিষ্যৎ নিয়ে লাতিন আমেরিকার মধ্যে সক্রিয় বিতর্ক বিদ্যমান এবং তিনটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি কল্পনা করা যেতে পারে।
সবচেয়ে সম্ভাব্য পরিস্থিতিটি হল এই যে, জি২০, জি৭ এবং এনএএম-এর মতো আরও শত শত বর্ণসমন্বিত গোষ্ঠীর ভিড়ে ব্রিকস আর একটি গোষ্ঠী হয়ে উঠেছে, যেগুলি ভিন্ন ভিন্ন স্বার্থ ও যৎসামান্যই অভিন্ন সাধারণ ভিত্তির পাশাপাশি তাদের বৃহৎ সংখ্যক সদস্যপদের সামান্যই লক্ষ্য অর্জনে সমর্থ হয়। ২০০৯ সালে তার সূচনার পর থেকে ব্রিকস বাস্তবায়নের চেয়ে বিবৃতি প্রদানে বেশি ব্যস্ত থেকেছে। মার্কোসুর এবং আন্দিয়ান সম্প্রদায় থেকে শুরু করে প্যাসিফিক অ্যালায়েন্স এবং কমিউনিটি অব লাতিন আমেরিকান অ্যান্ড ক্যারিবিয়ান স্টেটস (যা সাধারণত সিইএলএসি নামে পরিচিত) পর্যন্ত বেশ কয়েকটি উপ-আঞ্চলিক গোষ্ঠীর একটি অঞ্চল লাতিন আমেরিকা একগুচ্ছ আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক গোষ্ঠীতে যোগদান করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
দ্বিতীয় প্রেক্ষিতটি হল সেটি, যেখানে ব্রিকস প্রাথমিক লক্ষ্যমাফিক একটি গোষ্ঠী হয়ে উঠেছে, যেখানে তার প্রক্রিয়া হল আরও বহুমেরুকৃত বিশ্বের প্রচার চালানো। বিশ্বব্যাপী এবং গোষ্ঠীটির মধ্যে চিনের বহিরাগত প্রভাবের কারণে এমনটা আরও কঠিন হয়ে উঠবে। গোষ্ঠীটির উদ্দেশ্য সফল হলে একটি অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্রিকস নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়াস চালাতে পারে। যেমন রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের সম্প্রসারণ এবং এনডিবি দ্বারা পরিচালিত ও গ্লোবাল সাউথ থেকে উদ্ভূত উন্নয়নমূলক অর্থনীতির একটি বিকল্প মডেলের সূচনা। লাতিন আমেরিকা এই পরিস্থিতিতে স্বাগত জানাবে, যেমনটা ইতিমধ্যেই ২০২১ সালে এনডিবি-তে উরুগুয়ের অন্তর্ভুক্তি দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্বব্যাঙ্কের নেতৃত্ব দ্বারা চালিত পুরনো প্রহরীর ভূমিকার বিকল্প হিসেবে এনডিবি-কে স্বাগত জানাবে।
তৃতীয় সম্ভাবনা অনুযায়ী, ব্রিকস সেটাই হয়ে উঠতে পারে, যা পশ্চিমী বিশ্লেষকরা বর্তমানে যেমনটা দাবি করছেন অর্থাৎ চিনা আন্তর্জাতিক প্রভাবের এক বাহক এবং অব্যবহিত ভাবে জি৭ ও অন্য পশ্চিমী নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীগুলির প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী একটি পশ্চিমবিরোধী ব্লক। চিনের আন্তর্জাতিক প্রভাব যথেষ্ট হলেও বেজিংয়ের কাছে তার প্রভাব প্রয়োগ করার জন্য আরও অনেক সাধনী রয়েছে। যেমন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এবং চিলি, পেরু, কোস্টা রিকা এবং ইকুয়েডরের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি-সহ দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক চুক্তি এবং ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে ইউয়ানে বাণিজ্য চুক্তি। বেজিং ব্রিকস+-কে আরও গুরুতর অগ্রাধিকার হিসেবে বেছে নেয় কি না তা অবশ্য সময় বলবে। আপাতত, তা গোষ্ঠীটির পরিকল্পনার স্তরেই রয়েছে। চিনের সঙ্গে লাতিন আমেরিকার সম্পৃক্ততা ব্রিকসের চেয়ে গভীরতর এবং বেজিংয়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে গোষ্ঠীটির উঠে আসার সম্ভাবনা কম, যা দ্বিপাক্ষিক ব্যবস্থার চেয়ে অনেক বেশি পূর্বনির্ধারিত।
সমীর ভট্টাচার্য
অগস্ট মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা তার অর্থনৈতিক রাজধানী জোহানেসবার্গে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে।(৬৫) এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ্য। কারণ বছরের পর বছর ধরে ব্রিকস পশ্চিমী দেশ এবং নীতি দ্বারা প্রভাবিত বহুপাক্ষিক মঞ্চগুলির একটি শক্তিশালী বিকল্প হয়ে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে, ব্রিকস দেশগুলি আজ সম্মিলিত ভাবে বিশ্ব জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ, জিডিপির ২৩ শতাংশ এবং বাণিজ্যের ১৮ শতাংশ জুড়ে রয়েছে।(৬৬) গত এক দশকে ব্রিকস দেশগুলির সম্মিলিত জিডিপি এবং বাণিজ্য যথাক্রমে ১৭৯ শতাংশ এবং ৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।(৬৭) ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে যখন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছিল এবং মাত্র ১ শতাংশের গড় প্রবৃদ্ধির হার রেকর্ড করছিল, তখন ব্রিকস দেশগুলি প্রায় ৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
ব্রিকসের সদস্য রাষ্ট্রগুলির ভিন্ন প্রকৃতির এবং অভিন্ন সাধারণ পরিচয় বা উদ্দেশ্যের অভাবের কারণে সংশয়বাদী এবং সাবধানী মনোভাবাপন্নরা ব্রিকসকে এক ধরনের 'আলগা জোট, একটি 'পোটেমকিন ভিলেজ'(৬৮) অথবা একটি ‘কাকতালীয় জোট'(৬৯) বলে বর্ণনা করেছেন। তা সত্ত্বেও নেতৃবৃন্দের সর্বশেষ সমাবেশটি আন্তর্জাতিক আগ্রহ অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে, যা ২০০৯ সালে গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠার পর থেকে খুব কমই পরিলক্ষিত হয়েছে।
তাই এ কথা আশ্চর্যের নয় যে, আফ্রিকায় ব্রিকসের প্রভাব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালের ব্রিকস সম্মেলনে আফ্রিকার প্রায় ৫৪টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় এই সম্মেলনে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস-সহ ৪০ জনেরও বেশি রাষ্ট্রপ্রধান এবং বেশ কয়েক জন সরকারি আধিকারিক এবং ব্যবসায়ী নেতাদের উপস্থিতি এই উচ্চাশার সঞ্চার করে যে, আফ্রিকাকেন্দ্রিক ইতিবাচক ফলাফল এই সম্মেলন থেকেই উঠে আসবে।
ব্রিকস: মূল ফলাফল
শীর্ষ সম্মেলনের দৌড়ে উদ্ভূত দু’টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগ ছিল নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলির জন্য একটি একক ব্রিকস মুদ্রার নির্মাণ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যগুলি একটি শক্তিশালী মার্কিন-বিরোধী জোট গঠনের জন্য নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ দিলেও একটি সাধারণ মুদ্রার প্রশ্নটি প্রাথমিক ভাবে মার্কিন ডলারের উপর বিশ্বব্যাপী নির্ভরতা হ্রাস করার ইচ্ছা দ্বারা চালিত হয়েছিল।
পশ্চিমী নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলির বিকল্প হিসাবে ব্রিকসের ক্রমবর্ধমান বৈধতা এই সত্য থেকে উত্থিত হয় যে, ৪০টিরও বেশি দেশ এই গোষ্ঠীটিতে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং তাদের মধ্যে অন্তত ২২টি দেশ আনুষ্ঠানিক ভাবে আবেদন জমা দিয়েছে।(৭১) মনোগ্রাহী বিবেচনার পর ২৪ অগস্ট গোষ্ঠীটি নতুন ব্রিকস সদস্য হিসেবে আর্জেন্টিনা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।(৭২) ছ’টি দেশ আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করবে এবং তাদের সদস্যপদ ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।(৭৩) এক বার এই ছ’টি দেশ গোষ্ঠীটির অংশ হয়ে উঠলে এটি বিশ্বের জনসংখ্যার ৪৬ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করবে, যা সম্মিলিত আন্তর্জাতিক জিডিপি-র ৩৭ শতাংশের জন্য দায়বদ্ধ।(৭৪)
চিন একটি সাধারণ মুদ্রার পক্ষে জোরালো ভাবে সওয়াল করে এলেও শীর্ষ সম্মেলনের সময় ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাচিও লুলা দা সিলভা মার্কিন ডলারের সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্বলতাগুলিকে হ্রাস করতে ব্রিকস সদস্যদের মধ্যে ব্যবহারযোগ্য একটি নতুন অভিন্ন সাধারণ মুদ্রা গড়ে তোলার পক্ষে মত দেন।(৭৫) এটি শীর্ষ সম্মেলনের আলোচ্যসূচির উপরের দিকে থাকলেও পাঁচটি সদস্য দেশ ডলারের একটি বিকল্পের ক্ষেত্রে কোনও ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি। একটি অভিন্ন সাধারণ অবস্থানের অনুপস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক ভাবে জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার আপাতত সবচেয়ে সম্ভাব্য বিকল্প বলে মনে করা হবে।
আফ্রিকার উপর প্রভাব
১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন আফ্রিকার জন্য ইতিবাচক ছিল। কারণ আফ্রিকার দু’টি অতিরিক্ত দেশকে পূর্ণ সদস্য হিসাবে গোষ্ঠীটিতে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। উপরন্তু, গোষ্ঠীটির সম্প্রসারণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আফ্রিকার জন্য আরও সুযোগ প্রদান করতে পারে।
মিশর এবং ইথিওপিয়ার অন্তর্ভুক্তি
আরও দু’টি আফ্রিকার দেশ অর্থাৎ মিশর এবং ইথিওপিয়ার প্রস্তাবিত সংযোজনের বিষয়ে মহাদেশে যথেষ্ট প্রত্যাশা রয়েছে এবং এটিকে আফ্রিকার একাধিক নেতা ঐতিহাসিক বলে দাবি করেছেন।(৭৬) উভয় দেশই আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মানিত ‘বিগ ফাইভ'-এর দুই উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন সদস্য, যা মহাদেশীয় স্তরে তাদের গুরুত্বকেই দেখিয়ে দেয়। উভয় দেশেরই ব্যাপক সম্ভাবনা-সহ শক্তিশালী অর্থনীতি রয়েছে, যা গোষ্ঠীটির অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।
১০৪ মিলিয়ন জনসংখ্যা এবং ৪০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জিডিপিসম্পন্ন মিশর বর্তমানে উত্তর আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতি। এর মাথাপিছু জিডিপি ৩৮৮০ মার্কিন ডলার, যা ২০২৩ সালের শেষে ৪.২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। মিশর ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাঙ্কটিতে যোগদানের ফলে ইতিমধ্যেই ব্রিকস ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের এক সদস্য হয়ে উঠেছে।(৭৯) অন্য দিকে, ইথিওপিয়া আফ্রিকার ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি। দেশটির জনসংখ্যা ১২০ মিলিয়ন এবং জিডিপি ১১১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।(৮০) উভয় দেশেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে যুব জনসংখ্যা এবং একটি শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণি বিদ্যমান।
এই দু’টি দেশের অন্তর্ভুক্তি ভৌগোলিক অন্তর্ভুক্তিকেও প্রতিফলিত করে। দক্ষিণ আফ্রিকাই একমাত্র আফ্রিকার দেশ, যেটি ব্রিকস এবং জি২০ উভয়ের অন্তর্গত। এখান থেকে পূর্ব আফ্রিকার ইথিওপিয়া এবং উত্তর আফ্রিকার মিশর আঞ্চলিক চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরে আফ্রিকার স্বার্থকে আরও সূক্ষ্ম পর্যায়ে উপস্থাপন করতে সক্ষম হবে। সর্বোপরি আফ্রিকার দু’টি দেশের অন্তর্ভুক্তি আফ্রিকার কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার অটল প্রতিশ্রুতিকেই দর্শায়।
অন্যান্য সদস্যের অন্তর্ভুক্তি
অন্য চারটি নতুন সদস্যের মধ্যে সৌদি আরব আফ্রিকাকে বর্তমান ক্রমবর্ধমান বহুমেরুকৃত বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে মনে করে। বেশ কিছুদিন ধরে সাব-সাহারান আফ্রিকা জুড়ে তার কূটনৈতিক শক্তির আবেদনকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য সে তার আর্থিক শক্তি প্রদর্শন করেছে। বাদশাহ সালমান এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আফ্রিকার একাধিক রাষ্ট্রপ্রধান রাজধানী সফরে গিয়েছেন, যা সৌদি আরব এবং আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতারই প্রদর্শন করে। আফ্রিকার দেশগুলিতে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্পগুলি পরিচালনাকারী সৌদি উন্নয়ন তহবিল সৌদি-আফ্রিকান সহযোগিতার অন্যতম উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।(৮১) ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কেরও - সৌদি আরব যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক - আফ্রিকাতেও একাধিক উন্নয়নমূকক প্রকল্প রয়েছে।(৮২)
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে রিয়াধ আফ্রিকার জ্বালানি ও খনি ক্ষেত্রের পাশাপাশি কৃষি ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে। বর্তমানে সৌদি আরবের সম্পৃক্ততা প্রাথমিক ভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলিতে (মাগরেব, পশ্চিম আফ্রিকা এবং হর্ন অফ আফ্রিকায়) কেন্দ্রীভূত।(৮৩) এই আসন্ন সদস্যপদের মাধ্যমে সমগ্র মহাদেশটি সৌদি আরবের বিনিয়োগ থেকে উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সৌদি আরবের একটি ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং একটি সহকর্মী জিসিসি সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (ইউএই) ইতিমধ্যেই একটি উল্লেখযোগ্য শক্তি এবং আফ্রিকায় বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারীও বটে। উন্নয়নের জন্য আবুধাবি তহবিল শুধু মাত্র ২০১৮ সালে আফ্রিকার ২৮টি দেশে ৬৬টিরও বেশি প্রকল্পের জন্য ১৬.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল প্রদান করেছে।(৮৪) বন্দর সম্প্রসারণ এবং সামুদ্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আবুধাবি ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা দর্শিয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা দুবাই পোর্টস ওয়ার্ল্ড (ডিপি ওয়ার্ল্ড) বর্তমানে আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, জিবুতি, মিশর, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া,
রুয়ান্ডা, সেনেগাল, সোমালিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নানাবিধ প্রকল্প পরিচালনা করে।(৮৫) চিন, ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এখন আফ্রিকার চতুর্থ বৃহত্তম বিনিয়োগকারী।(৮৬)
অবশেষে ইরান গত এক দশক ধরে সাব-সাহারান আফ্রিকায় অনুপ্রবেশ করার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ঘোষণা করেছিলেন যে, আফ্রিকার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা তেহরানের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।(৮৭) বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিও সেই আবেগ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এই বছরের শুরুর দিকে রাইসি তিন দেশের আফ্রিকা সফর করেন এবং তা মাহমুদ আহমাদিনেজাদের পর ১১ বছরের মধ্যে এক জন ইরানি প্রেসিডেন্টের প্রথম আফ্রিকা সফর।(৮৮) আফ্রিকা তার উন্নয়নশীল অর্থনীতি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্যতার কারণে ইরানের নেতৃত্বের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আফ্রিকার সরকারগুলির সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক তেহরানকে ইরানের ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির উপর মার্কিন ও ইইউ নিষেধাজ্ঞার প্রভাব হ্রাস করার উপায় প্রদান করে। কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক স্থাপন ইরানকে আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতার হুমকি থেকে বাঁচতেও সাহায্য করবে।
সামনের পথ
এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১৫টি ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের মধ্যে বর্তমান শীর্ষ সম্মেলনটি বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।(৮৯) যাইহোক, ব্রিকস থেকে ব্রিকস+ অথবা অনেকের মতে ব্রিকস ২.০-এ রূপান্তর(৯০) আফ্রিকার জন্য বেশ কিছু সমস্যার উত্থাপন করে। নিঃসন্দেহে, এই দুই নতুন সদস্য যুক্ত হওয়ার বিষয়টি আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহে আফ্রিকার কণ্ঠকে শক্তিশালী করবে। তবে প্রাসঙ্গিক উদ্বেগও বিদ্যমান। প্রথমটি হল, মিশর এবং ইথিওপিয়া কি - যারা সম্প্রতি গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসাঁ ড্যামকে কেন্দ্র করে মতপার্থক্যে জড়িয়েছে(২) – নিজেদের মতপার্থক্যকে দূরে সরিয়ে রেখে আফ্রিকার কল্যাণের জন্য সহযোগিতায় সম্মত হবে? এ কথা সর্বজনবিদিত যে, ব্রিকস ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করে এবং আগামিদিনে প্রতিটি দেশের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ এবং উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই জাতীয় ঐকমত্য তৈরির কাজটি কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
বেশ কিছু দেশ এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন যে, পশ্চিমী শক্তিগুলি একটি বিকল্প ভূ-রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা জোটের প্রচেষ্টা হিসাবে ব্রিকসে তাদের সদস্যপদকে বিবেচনা করতে পারে। এটি আখেরে অবিশ্বাসের জন্ম দিতে পারে এবং সাহায্য ও বিনিয়োগের পরিমাণ হ্রাস করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি সহায়তাপ্রাপ্ত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে মিশর, যেটি চিন এবং রাশিয়া উভয়ের সঙ্গেই ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রেখে চলে। সম্ভবত ১ জানুয়ারি নির্ধারিত যোগদানের তারিখের আগে বিস্তারিত অধ্যয়নের জন্য সৌদি আরবের অনুরোধের বিষয়টি খতিয়ে দেখার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে।(৯১)
বিশ্ব একটি রূপান্তরমূলক পর্যায়ের মধ্যে রয়েছে, যেখানে পশ্চিমের আধিপত্যবাদী মনোভাব একটি বহুমেরুকৃত বিশ্বের জন্য পথ তৈরি করতে যথেষ্ট বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। এ কথা স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মতো বিদ্যমান আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি ক্রমশ অপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে। এই ক্রমবর্ধমান বহুমেরুকৃত বিশ্বে ব্রিকসের বৃদ্ধি আফ্রিকার জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে। আফ্রিকার আরও দু’টি দেশের অন্তর্ভুক্তি মহাদেশের পাশাপাশি তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়। জোহানেসবার্গে শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তেজিত ভাবে আগামী বছরের শীর্ষ সম্মেলনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন, যা রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা অনুযায়ী, পরবর্তী ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন কাজানে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। তত দিন পর্যন্ত আফ্রিকার বাকি অংশগুলি ব্রিকসে যোগদানের বাস্তব সুবিধাগুলির ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন করবে।
কবীর তানেজা
পশ্চিম এশিয়ার চারটি নতুন দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্রিকস নামে পরিচিত বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার একটি সম্প্রসারণ এবং ব্রিকস+ হিসাবে এর পুনর্বিন্যাসকে দ্রুত পরিবর্তনশীল আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার সম্মুখীন হওয়া প্রতিবন্ধকতাগুলির প্রতিকার হিসাবে মনে করা হচ্ছে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, মিশর এবং ইরান আনুষ্ঠানিক ভাবে ২০২৪ সালে গোষ্ঠীটিতে যোগদান করলেও এবং গোষ্ঠীটির সম্প্রসারণ ঘটালেও এই দেশগুলি আদতে কী অর্জন করতে চায়, সে সম্পর্কেও প্রশ্ন রয়ে যায়।
নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় যে, একাধিক বিশ্লেষক মনে করেন, ব্রিকস+ হল একটি উদীয়মান ‘পশ্চিম-বিরোধী' বাস্তুতন্ত্র, যা চিন এবং রাশিয়ার দ্বারা সমর্থিত এবং অন্য দেশগুলি কেবল মাত্র সেখানে নীরব ভূমিকা পালন করছে।(৯২) যাই হোক, ব্রিকস+-এ পশ্চিম এশীয় রাষ্ট্রগুলির, বিশেষ করে ইরানের সাফল্য চিনের বিদেশনীতির নকশা এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও অভ্যন্তরীণ অশান্তির বিরুদ্ধে তেহরানের স্থিতিস্থাপকতামূলক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে দেখা যেতে পারে।(৯৩) সৌদি আরবও ব্রিকস+-এর ছ’টি নতুন সদস্যের মধ্যে একটি হয়ে উঠলে বেজিংয়ের মধ্যস্থতায় ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবের সঙ্গে একটি সময়োপযোগী বোঝাপড়ার কারণে ইরানের অন্তর্ভুক্তি সম্ভব হয়েছিল।(৯৪) ইরান ও সৌদি আরবের সঙ্গে মিশর ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি পশ্চিম এশিয়ার তরফে মঞ্চটিতে যথেষ্ট প্রতিনিধিত্ব প্রদান করবে। পশ্চিম এশিয়া এমন একটি অঞ্চল, যা দ্রুত মার্কিন-চিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নয়, বরং যে সব আঞ্চলিক দেশ এই ভূ-রাজনৈতিক সংঘর্ষকে ব্যবহার করে ওয়াশিংটন ডিসি ও বেজিং(৯৫) উভয়ের কাছ থেকে সুবিধা লাভ করার জন্য প্রকাশ্যে কোনও পক্ষ অবলম্বন করছে না, তাদের জন্যও এক ক্ষমতার ভরকেন্দ্র হয়ে উঠছে।
ব্রিকস-এর সম্প্রসারণ – ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার যোগদানের সময়ে সর্বশেষ সম্প্রসারণের পর যে গোষ্ঠীটি বিশেষ সাফল্যের মুখ দেখেনি - বিশ্ব বাণিজ্য, অর্থনীতিতে পশ্চিমী রাষ্ট্র এবং প্রতিষ্ঠানগুলির একচেটিয়া কর্তৃত্ব বিনষ্ট করার লক্ষ্যে বৃহৎ শক্তি প্রতিযোগিতার আর একটি উল্লেখযোগ্য মঞ্চ হয়ে উঠেছে। জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ঘোষণা করেন, ‘ইরান ডি-ডলারাইজেশনের অভিমুখে ব্রিকসের প্রচেষ্টাকে সিদ্ধান্তমূলক ভাবে সমর্থন করে... জাতীয় মুদ্রা ব্যবহার করে এবং গোষ্ঠীর প্রক্রিয়াকে শক্তিশালীতর করে তোলে।’(৯৬) ডি-ডলারাইজেশন বিতর্ক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন ইরানের পাশাপাশি যুদ্ধে জর্জরিত রাশিয়া এবং গ্লোবাল সাউথের অন্যান্য জায়গাতেও প্রাসঙ্গিক। ২০২২ সালের মার্চ মাসে ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পশ্চিমীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরপরই(৩) অর্থনীতিবিদ সচ্চিদানন্দ শুক্লা(৪) ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির বিকাশ থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রাখতে ব্যাঙ্কগুলি দ্বারা আসন্ন ডি-ডলারাইজেশন সম্পর্কে বক্তব্য পেশ করেছেন।(৯৭)(৯৮) সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিকস - যাকে বিশ্লেষক নীতিন পাই একটি ‘অর্থহীন’ গোষ্ঠী হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং যা ‘অর্থহীনতার সম্প্রসারণ’কেই পরিচালনা করে - তার নিজস্ব ভূ-রাজনৈতিক জটিলতাগুলি উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেছে।(৯৯)
ভারত ও চিনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পশ্চিম এশিয়ার প্রতিনিধিত্ব
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের মতে, সৌদি অর্থনীতির ভবিষ্যৎ দু’টি প্রবণতার উপর নির্ভর করে। প্রথমটি হল আঞ্চলিক নিরাপত্তা, যেখানে ছ’টি অশান্তিপূর্ণ বছরের পর সৌদি-ইরান উত্তেজনা হ্রাস পেয়েছে, বিশেষ করে ইয়েমেন এবং সিরিয়ার মতো সূক্ষ্ম সংঘর্ষ বিন্দুর নিরিখে কার্যকর হয়েছে। দ্বিতীয়টি হল হাইড্রোকার্বন পরবর্তী অর্থনীতির বিকাশ, যার সাফল্য কেবল মাত্র আঞ্চলিক নিরাপত্তা থাকলেই সুনিশ্চিত করা যেতে পারে। সৌদির দীর্ঘমেয়াদে পেট্রো-ডলারের উপর নির্ভরতা হ্রাস করার অর্থ হল দেশটি বর্তমানে কী ভাবে তার কার্যাবলি পরিচালনা করে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ। ইরান পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে তার সর্বোচ্চ পরিমাণ তেল রফতানি করলেও এ হেন স্থিতিশীলতা থেকেও উপকৃত হবে, যদি দেশটি অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার পাশাপাশি কিছুটা হলেও অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা বিকাশে মনোনিবেশ করতে পারে।(১০০) ইতিমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি – যার বিশ্বব্যাপী আর্থিক সাফল্যের আখ্যান দুবাই ও আবু ধাবির মতো অর্থনৈতিক কেন্দ্র-প্রতিষ্ঠিত দেশগুলির পছন্দগুলি-এর ব্যাপক ভূ-রাজনৈতিক নকশার নিরিখে এক ধাপ পিছিয়ে এসেছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ২০১৯ সালে ইয়েমেনের যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসে এবং লিবিয়ার মতো অন্য সংঘাতের মঞ্চগুলিতে একটি বাহ্যিক শক্তি হিসাবে খুব কমই সম্পৃক্ত থেকেছে।(১০১)(১০২)
গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র এবং কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রগুলির একটি কোলাহল-সহ ব্রিকস একটি ‘পশ্চিম-বিরোধী’ জোটে রূপান্তরিত হওয়ার নিরিখে তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে এবং এর নতুন, অভ্যন্তরীণ বিচ্যুতিগুলি নতুন সদস্যদের জন্য সুযোগের চেয়ে বেশি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। সৌদি-ইরান সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ সত্ত্বেও শিয়া এবং সুন্নি ইসলামের ক্ষমতার আসনগুলির মধ্যে সম্পর্ককে জর্জরিত করে এ হেন একাধিক আঞ্চলিক সমস্যা এখনও অমীমাংসিতই রয়ে গিয়েছে। এ ভাবে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের পুনর্নবীকরণ স্বাভাবিকতার ঊর্ধ্বে উঠেছে এবং দুই রাষ্ট্র একাধিক বিষয়ে প্রত্যক্ষ আলাপ-আলোচনা চালাবে বলে মনে হয় না, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মার্কিন ডলারের ঊর্ধ্বে উঠে অভিন্ন সাধারণ মুদ্রার ব্যবহার, একটি নতুন প্রক্রিয়ার নীলনকশা নির্মাণ। ইরানের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্রমাগত আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও চিনও তার অর্থনৈতিক প্রসারের কারণে ইরানে জনপ্রিয়তা অর্জনে সমর্থ হয়েছে।(১০৩)
নতুন পশ্চিম এশীয় সদস্যদের জন্য ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের পর গোষ্ঠীটিতে দু’টি বৃহত্তম অর্থনীতির রাজনৈতিক বিভাজনের প্রেক্ষিতে চিন-ভারত চাপানউতোর বৃহৎ শক্তির প্রতিযোগিতার ঊর্ধ্বে উঠেও একটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।(১০৪) বেজিং-নয়াদিল্লি সমীকরণ ব্রিকস+-এর সাফল্য বা ব্যর্থতার মাঝে তুরুপের তাস হয়ে উঠতে উঠতে পারে।
ভূ-রাজনীতি এবং ভূ-অর্থনীতিতে সুযোগ
বাস্তব রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ভূ-অর্থনীতি এখনও মঞ্চটির মধ্যে দেশগুলির একত্রিত হওয়ার সুযোগ প্রদান করতে পারে। গোষ্ঠীটিতে ইরান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির অন্তর্ভুক্তির ফলে ব্রিকস+ বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী সংস্থা দ্বারা চালিত কার্টেলের মতো সংস্থা অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ-এর (ওপিইসি) তিন মূল সদস্য রয়েছে। ২০১৬ সালে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জ্বালানির ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার পাশাপাশি জ্বালানির নেট-রফতানিকারক হওয়ার চেষ্টা করে, তখন সৌদি আরবের নেতৃত্বে ওপিইসি শেষ পর্যন্ত ওপিইসি+ গঠন করে। এটি রাশিয়া এবং অন্য দশটি ছোট তেল-উৎপাদনকারী দেশকে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের দিকে চালিত করে, যার ফলে বিশ্বব্যাপী তেল উৎপাদন এবং তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক জ্বালানি মূল্য নির্ধারণ প্রভাবিত হয়।(১০৫) ২০২২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওপিইসি+-এর পাশাপাশি রিয়াধের পর বন্ধুসম সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে ‘পরিণতি’ ভাল না হওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন এবং মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ বৃদ্ধি করতে তেলের রফতানি ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন, যখন ইউরোপের সংঘাতের কারণে দরিদ্র দেশগুলি খাদ্য ও জ্বালানির ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছিল।(১০৬)
ব্রিকস+ বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ উৎপাদনকারী দেশটিকে বিশ্বের অন্তত দুই বৃহত্তম ভোক্তা অর্থাৎ চিন ও ভারতের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। ২০১৮ সালে পারস্য উপসাগরের বিতর্কিত হরমুজ প্রণালীর মধ্য দিয়ে পরিবাহিত সমস্ত অপরিশোধিত তেলের ৭৬ শতাংশ এশীয় বাজারের উদ্দেশ্যে সরাবরাহ করা হত।(১০৭) ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত আমদানি করা অপরিশোধিত তেলের উপর ভারতের নির্ভরতা - পরিশোধিত রফতানির পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য – ৮৭.৩ শতাংশের রেকর্ড মাত্রা ছুঁয়েছিল। এটি একটি সুস্থ অর্থনীতির লক্ষণ হলেও তা বহিরাগত পণ্যের উপর নির্ভরশীল হওয়ার ঝুঁকিকেও তুলে ধরে।(১০৮)
একই সময়ে জ্বালানি সুরক্ষার প্রেক্ষিতে এই নতুন নৈকট্যকে প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয় – যেমনটা করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সমস্যায় পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের আলোকে জ্বালানি পরিবর্তনের প্রতি ঝোঁক থাকা সত্ত্বেও আগামী দুই দশকে তেলের বৃহত্তম উৎপাদক এবং গ্রাহকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভূ-রাজনৈতিক সারিবদ্ধতা এশীয় অর্থনীতির জন্য অত্যাবশ্যক হয়ে উঠবে। একটি সম্প্রসারিত ব্রিকস বহুপাক্ষিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ হেন বিতর্কের অবসান ঘটাবে, সরবরাহ এবং চাহিদার সমস্যাগুলির প্রতি আরও বেশি করে মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ করে দেবে এবং সম্ভবত আরও উল্লেখযোগ্য ভাবে হাইড্রোকার্বনের ভবিষ্যতের মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত সাধারণ ভিত্তির সন্ধান পাবে।
ব্রিকস+ জ্বালানি এবং খাদ্য নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে, বিশেষ করে আফ্রিকার মতো অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিতর্কের ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী ভরকেন্দ্রের ভূমিকা পালন করতে পারে। ইথিওপিয়া নতুন সদস্যদের অন্যতম হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ সদস্য হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তর্দেশীয় এবং আন্তঃ-মতাদর্শগত প্রকৃতি এবং জল ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বিষয়গুলিতে মতানৈক্যের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠে আন্তঃসহযোগিতার সুযোগ করে দিতে পারে। ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং মিশরের মতো দেশগুলি সম্মিলিত ভাবে ২০৫০ সালের মধ্যে মাথাপিছু ভিত্তিতে জলের প্রাপ্যতার ৫০ শতাংশ হ্রাসের সম্মুখীন হতে পারে, যা একটি উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তামূলক হুমকি এবং রাজনৈতিক দুর্বলতার কারণ হয়ে উঠবে।(১০৯)
ব্রিকস-এ পশ্চিম এশিয়া থেকে নতুন সদস্যদের প্রবেশের একটি ইতিবাচক এবং বিপণনযোগ্য ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষিত থাকলেও গোষ্ঠীটির পূর্বসূরি বা এমনকি সমসাময়িকদের মতো আর একটি বাগাড়ম্বরমূলক মঞ্চ হয়ে ওঠারও ঝুঁকি রয়েছে। প্রতিটি রাষ্ট্রই তার নিজস্ব কর্মসুচি নিয়ে একটি মঞ্চে যোগদান করে এবং বেশির ভাগ বহুপাক্ষিক গোষ্ঠীর জন্য এমনটা সত্যি হলেও এ ক্ষেত্রে সামান্যই মতাদর্শগত, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রণোদনা রয়েছে, যা সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে একত্রে সমন্বিত রাখতে পারে। ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং মিশরের মতো দেশগুলির জন্য এই মুহূর্তে তাদের ব্রিকস+ সদস্যপদ সম্ভাব্য অর্থনৈতিক লাভের আশায় ন্যূনতম ঝুঁকিতে স্বল্পমেয়াদি ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ব্যতীত অন্য কিছুই নয়।
1. সমীর ভট্টাচার্য বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট।
2. নিবেদিতা কপুর রাশিয়ার ন্যাশনাল রিসার্চ ইউনিভার্সিটি হায়ার স্কুল অফ ইকোনমিক্সের ইন্টারন্যাশনাল ল্যাবরেটরি অন ওয়ার্ল্ড অর্ডার স্টাডিজ অ্যান্ড দ্য নিউ রিজিওনালিজমের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো।
3. কল্পিত এ মানকিকর অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ফেলো।
4. হর্ষ ভি পন্থ ওআরএফ-এর স্টাডিজ অ্যান্ড ফরেন পলিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট।
5. হরি শেষশায়ী ওআরএফ-এর ভিজিটিং ফেলো এবং ফরেন মিনিস্ট্রি অব পানামার উপদেষ্টা।
6. কবীর তানেজা ওআরএফ-এর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ফেলো।
১) সোভিয়েত ইউনিয়ন দেশগুলিকে সমাজতান্ত্রিক আওতায় নিয়ে আসতে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পশ্চিমীদের জমি শক্ত করা থেকে বিরত রাখতে পারস্পরিক অর্থনৈতিক সহায়তা পরিষদ বা কাউন্সিল ফর মিউচুয়াল ইকোনমিক অ্যাসিস্ট্যান্স-এর মতো উদ্যোগ ব্যবহার করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। আরও জানতে দ্রষ্টব্য: উইলিয়ামস ভি ওয়ালেস এবং রজার এ ক্লার্ক, কমেকন, ট্রেড অ্যান্ড দ্য ওয়েস্ট (১৯৮৬)।
২) দ্য গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসাঁ ড্যাম (জিইআরডি), যা ইথিওপিয়ার নীল নদের উপর অবস্থিত, ২০১১ সাল থেকে নির্মাণাধীন অবস্থায় রয়েছে। মিশর এবং সুদান দীর্ঘ দিন ধরে এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেছে। কারণ নীল নদ মিশর ও সুদানে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনরেখাসম। অন্য দিকে ইথিওপিয়া প্রকল্পটিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করে।
৩) এর মধ্যে সুইফট আর্থিক ব্যবস্থার ‘অস্ত্রায়ন’ও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
৪) ভারতের বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার প্রধান অর্থনীতিবিদ।
১) ব্রিকস-এর বিবর্তন ও গতিপথ নিয়ে বিশদে জানার জন্য দ্রষ্টব্য – হর্ষ ভি পন্থ ও টোবিয়াজ স্কোলজ, ‘ব্রিকস- এক্সপায়ারিং পলিটিক্যাল রেলিভ্যান্স অ্যান্ড ইন্সপায়ারিং নিউ কোয়ালিশনস’, হ্যান্ডবুক অন গ্লোবাল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড রিজিওনালিজম, সম্পাদনা- জার্গন রোল্যাঁ এবং অ্যাস্ট্রিড কারাপোতোজো (শেল্টেনহ্যাম, ইউকে অ্যান্ড নর্থহ্যাম্পস্টন, এমএ, ইউএসএ- এডওয়ার্ড এলগার পাবলিশিং, ২০২২), ১৪৯-৬০
২) ব্রিকস ইনফর্মেশন পোর্টাল (২০০৯), জয়েন্ট স্টেটমেন্ট অব দ্য ব্রিক কান্ট্রিজ লিডারস, ইয়েকাতেরিনবার্গ, রাশিয়া, জুন ১৬, ২০০৯, http://infobrics.org/document/3 (দেখা হয়েছিল ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩)
৩) ডেভিড ওয়েলনা, ‘করোনাভাইরাস হ্যাভ নাও কিলড মোর আমেরিকানস দ্যান ভিয়েতনাম ওয়ার’, এনপিআর ডট ওআরজি, এপ্রিল ২৮, ২০২০, https://www.npr.org/sections/coronavirus-live-updates/2020/04/28/846701304/pandemic-death-toll-in-u-s-now-exceeds-vietnam-wars-u-s-fatalities
৪) “习近平在2023年金砖国家工商论坛闭幕式上的致辞” (২০২৩ সালের ব্রিকস বিজনেস ফোরামে দেওয়া শি জিনপিং-এর উপসংহারমূলক বক্তৃতা, জিনহুয়া, অগস্ট ২৩, ২০২৩, http://www.news.cn/politics/leaders/2023-08/23/c_1129817742.htm
৫) মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স, দ্য পিপল’স রিপাবলিক অব চায়না, https://www.fmprc.gov.cn/web/zyxw/202308/t20230823_11130905.shtml
৬) মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স, দ্য পিপল’স রিপাবলিক অব চায়না, https://www.fmprc.gov.cn/web/zyxw/202308/t20230823_11130905.shtml
৭) “让世界听到更多的金砖声音、见证更大的金砖作用” (লেট দি ওয়ার্ল্ড হিয়ার মোর ব্রিকস ভয়েসেজ, সি গ্রেটার ইমপ্যাক্ট অব ব্রিকস), পিপল’স ডেলি, অগস্ট ২২, ২০২৩, http://paper.people.com.cn/rmrb/html/2023-08/22/nw.D110000renmrb_20230822_2-02.htm
৮) “让世界听到更多的金砖声音、见证更大的金砖作用” (লেট দি ওয়ার্ল্ড হিয়ার মোর ব্রিকস ভয়েসেজ, সি গ্রেটার ইমপ্যাক্ট অব ব্রিকস), পিপল’স ডেলি
৯) “操弄美元 收割世界” (ম্যানিপুলেটিং ইউএস ডলার টু হারভেস্ট দি ওয়ার্ল্ড), জিনহুয়া, এপ্রিল ৩, ২০২৩, http://www.news.cn/world/2023-04/03/c_1129491246.htm
১০) সেন্ট্রাল কমিশন ফর ডিসিপ্লিন ইনস্পেকশন, দি পিপল’স রিপাবলিক অব চায়না, https://www.ccdi.gov.cn/toutiaon/202204/t20220405_184214.html
১১) ‘ব্রিকস সেট টু ডিপেন ফিন্যান্সিয়াল কোঅপারেশন, সিকিং টু রিডিউস রিল্যায়েন্স অন ইউএস ডলার ইন আপকামিং সামিট’, গ্লোবাল টাইমস, অগস্ট ২১, ২০২৩, https://www.globaltimes.cn/page/202308/1296689.shtml
১২) ‘ব্রিকস সেট টু ডিপেন ফিন্যান্সিয়াল কোঅপারেশন, সিকিং টু রিডিউস রিল্যায়েন্স অন ইউএস ডলার ইন আপকামিং সামিট’, গ্লোবাল টাইমস
১৩) “前7个月我国与其他金砖国家进出口同比增长19.1%” (চায়না, ব্রিকস নেশনস ট্রেড ইনক্রিজড ১৯.১% ইয়ার-অন-ইয়ার) ২১জিনজি ডট কম, অগস্ট ২১, ২০২৩, https://www.21jingji.com/article/20230821/herald/be3438c32fdcf28af77845ba0b0c518f.html
১৪) “前7个月我国与其他金砖国家进出口同比增长19.1%,” ২১জিনজি ডট কম
১৫) ‘ব্রিকস সেট টু ডিপেন ফিন্যান্সিয়াল কোঅপারেশন, সিকিং টু রিডিউস রিল্যায়েন্স অন ইউএস ডলার ইন আপকামিং সামিট’, গ্লোবাল টাইমস
১৬) “习近平在南非媒体发表署名文章” (দক্ষিণ আফ্রিকার গণমাধ্যমে শি জিনপিংয়ের প্রবন্ধ),
জিনহুয়া, অগস্ট ২১, ২০২৩, http://www.news.cn/politics/leaders/2023-08/21/c_1129813967.htm
১৭) ম্যান্ডি ঝুও, ‘চায়না আপস ফুড সিকিউরিটি ড্রাইভ অ্যাজ শি জিনপিং কলস ‘ফার্মল্যান্ড দ্য লাইফব্লাড অব ফুড প্রোডাকশন’,’ এসসিএমপি, জুলাই ২১, ২০২৩, https://www.scmp.com/economy/china-economy/article/3228526/china-ups-food-security-drive-xi-jinping-calls-farmland-lifeblood-food-production
১৮) প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরো, গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া, https://pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=1891153
১৯) ‘ওপাক ইনিশিয়েটিভ স্যাডলিং গ্লোবাল সাউথ’, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, অগস্ট ২৮, ২০২৩, https://timesofindia.indiatimes.com/india/global-south-now-saddled-with-unviable-debt-eam-dig-at-china/articleshow/103112053.cms
২০) ‘ওপাক ইনিশিয়েটিভ স্যাডলিং গ্লোবাল সাউথ’
২১) তিমোফেই বোর্দাশেভ, ভিক্তোরিয়া পানোভা এবং দিমিত্রি সাসলভ, ‘ব্রিকস অ্যান্ড দ্য রাইভ্যালরি প্যান্ডেমিক’, ভাল্ডাই ডিসকাশন ক্লাব, এপ্রিল ২৩, ২০২০, https://valdaiclub.com/a/reports/brics-and-the-rivalry-pandemic/
২২) ‘ফরেন পলিসি কনসেপ্ট অব দ্য রাশিয়ান ফেডারেশন’, কমিটি অন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অব দ্য স্টেট ডুমা, ডিসেম্বর ১, ২০১৬, https://interkomitet.com/foreign-policy/basic-documents/foreign-policy-concept-of-the-russian-federation-approved-by-president-of-the-russian-federation-vladimir-putin-on-november-30-2016/
২৩) ‘দ্য কনসেপ্ট অব দ্য ফরেন পলিসি অব দ্য রাশিয়ান ফেডারেশন’, দ্য মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অব দ্য রাশিয়ান ফেডারেশন, মার্চ ৩১, ২০২৩, https://mid.ru/en/foreign_policy/fundamental_documents/1860586/
২৪) ‘মিটিং ইন দ্য ব্রিকস প্লাস/ আউটরিচ ফরম্যাট’, দ্য ক্রেমলিন, অগস্ট ২৪, ২০২৩, http://en.kremlin.ru/events/president/news/72096
২৫) ‘ব্রিকস লিডারস’ মিটিং’, দ্য ক্রেমলিন, নভেম্বর ১৪, ২০১৯, http://en.kremlin.ru/catalog/keywords/13/events/62045। দ্রষ্টব্য ‘স্পিচ অ্যাট দ্য ব্রিকস লিডারস’ মিটিং ইন এক্সপ্যান্ডেড ফরম্যাট’, দ্য ক্রেমলিন, জুলাই ৯, ২০১৫, http://en.kremlin.ru/events/president/transcripts/49895
২৬) “Статья Министра иностранных дел Российской Федерации С.В.Лаврова для южноафриканского журнала Убунту” (সের্গেই ভি লাভরভ-এর সাউথ আফ্রিকান জার্নাল উবুন্তু-তে লেখা প্রবন্ধ), দ্য মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অব রাশিয়ান ফেডারেশন, ২১ অগস্ট, ২০২৩, https://www.mid.ru/ru/foreign_policy/news/1901054/
২৭) কনস্টানটাইন কোশাশেভ, ‘Итоговая декларация Саммита БРИКС – своего рода манифест незападного мира (ফাইনাল ডিক্লেয়ারেশন অব দ্য ব্রিকস সামিট- কাইন্ড অব ম্যানিফেস্টো ফর নন-ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড),’ রাশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://russiancouncil.ru/analytics-and-comments/comments/itogovaya-deklaratsiya-sammita-briks-svoego-roda-manifest-nezapadnogo-mira/
২৮) ‘Косачев: миссия БРИКС – дать всем комфортные условия нового миропорядка (কোশাশেভ: মিশন অব ব্রিকস ইজ টু গিভ এভরিওয়ান কমফর্টেবল কন্ডিশনস ফর নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার)’, রেডিয়ো স্পুটনিক, অগস্ট ২২, ২০২৩, https://radiosputnik.ria.ru/20230822/briks-1891476805.html
২৯) ‘Лавров выступил против переименования БРИКС (লাভরভ অপোজড টু রিনেমিং ব্রিকস), কমেরসাঁ, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://www.kommersant.ru/doc/6174648?from=top_main_2
৩০) ‘ভিডিয়ো অ্যাড্রেস টু দ্য পার্টিসিপেন্টস ইন দ্য ব্রিকস বিজনেস ফোরাম’, দ্য ক্রেমলিন, অগস্ট ২২, ২০২৩, http://en.kremlin.ru/events/president/news/72085
৩১) দিমিত্রি নভিকভ এবং আন্দ্রেই স্ক্রিবা, ‘দি ইভোলিউশন অব রাশিয়ান স্ট্র্যাটেজি টুওয়ার্ডস ব্রিকস’, স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালিসিস ৪৩, নম্বর ৬ (২০১৯): ৫৮৫-৫৯৬
৩২) ইগর দেনিজভ, আন্দ্রেই কাজান্তসেভ, ফিয়োদর লুকিয়ানভ এবং ইভান সাফ্রানচুক, ‘শিফটিং স্ট্র্যাটেজিক ফোকাস অব ব্রিকস অ্যান্ড গ্রেট পাওয়ার কম্পিটিশন’, স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালিসিস ৪৩, নম্বর ৬ (২০১৯): ৪৮৭-৪৯৮
৩৩) বোর্দাশেভ, পানোভা এবং সাসলভ, ‘ব্রিকস অ্যান্ড দ্য রাইভ্যালরি প্যান্ডেমিক’
৩৪) তিমোফেই বোর্দাশেভ, ‘ব্রিকস অ্যাট আ হিস্টোরিক্যাল পয়েন্ট- আনএক্সপেক্টেড চ্যালেঞ্জেস’, ভাল্ডাই ডিসকাশন ক্লাব, জুন ২৯, ২০২৩, https://valdaiclub.com/a/highlights/brics-at-a-historical-turning-point-unexpected/
৩৫) ফিয়োদর লুকিয়ানভ, ‘দ্য পসিবিলিটি অব সৌদি আরবিয়া জয়েনিং দ্য ব্রিকস শোজ দি ওয়ার্ল্ড ইজ মুভিং অন ফ্রম ওয়েস্টার্ন ডমিন্যান্স’, রাশিয়া ইন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স, অক্টোবর ২৬, ২০২২, https://eng.globalaffairs.ru/articles/saudi-arabia-joining-brics/
৩৬) ‘Экономисты назвали выгоду для России от расширения БРИКС (ইকোনমিস্টস নেমড বেনেফিটস ফর রাশিয়া ফ্রম এক্সপ্যানশন অব ব্রিকস),’ রেগনাম ডট আরইউ, অগস্ট ২৮, ২০২৩, https://regnum.ru/news/3828483?utm_source=yxnews&utm_medium=desktop&utm_referrer=https://dzen.ru/news/search?text
৩৭) ‘Эксперты оценили вступление шести новых стран в состав БРИКС (এক্সপার্টস অ্যাসেসড দি এন্ট্রি অব সিক্স নিউ কান্ট্রিজ ইন ব্রিকস),’ রোজিস্কায়া গাজেতা, অগস্ট ২৮, ২০২৩, https://rg.ru/2023/08/24/eksperty-ocenili-vstuplenie-shesti-novyh-stran-v-sostav-briks.html?utm_source=yxnews&utm_medium=desktop&utm_referrer=https%3A%2F%2Fdzen.ru%2Fnews%2Fsearch%3Ftext%3D
৩৮) ‘ব্রিকস টু আনভেইল দ্য মেন ক্রাইটেরিয়া ফর দি এক্সপ্যানশন: ইন্টারভিউ উইথ ইয়ারোস্লাভ লিসোভোলিক’, রাশিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল, অগস্ট ২৩, ২০২৩, https://russiancouncil.ru/en/analytics-and-comments/comments/brics-to-unveil-the-main-criteria-for-the-expansion-interview-with-yaroslav-lissovolik/
৩৯) দিমিত্রি দ্রাইজ, ‘о саммите БРИКС (ব্রিকস সামিট প্রসঙ্গে), কোমেরসাঁ, অগস্ট ২১, ২০২৩, https://www.kommersant.ru/doc/6172671?query=%D0%B1%D1%80%D0%B8%D0%BA%D1%81
৪০) ইয়ারোস্লাভ লিসোভোলিক, ‘ব্রিকস এক্সপ্যানশন: আ ওয়াটারশেড মোমেন্ট ফর দ্য গ্লোবাল ইকোনমি’, অগস্ট ২২, ২০২৩, https://russiancouncil.ru/en/analytics-and-comments/comments/brics-expansion-a-watershed-moment-for-the-global-economy/
৪১) ‘Страны БРИКС пытаются перехватить мировую повестку
(কান্ট্রিজ অব ব্রিকস আর ট্রায়িং টু ইন্টারসেপ্ট দি ওয়ার্ল্ড অ্যাজেন্ডা)’, কোমেরসাঁ, অগস্ট ২০, ২০২৩, https://www.kommersant.ru/doc/6172131
৪২) কিরিল বাবেভ এবং সের্গেই লাভরভ, ‘И вширь, и вглубь (বোথ ইন ব্রিদথ অ্যান্ড ডেপথ), রাশিয়া ইন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://globalaffairs.ru/articles/vglub-i-vshir-brics/#_ftnref1
৪৩) সের্গেই মিখনেভিচ, ‘দ্য ব্রিকস পাথ: কি অ্যাস্পেক্টস অ্যান্ড টাস্কস অফ এক্সপ্যান্ডিং মেম্বারশিপ’, ভাল্ডাই ডিসকাশন ক্লাস, জুন ১, ২০২৩, https://valdaiclub.com/a/highlights/the-brics-path-key-aspects-and-tasks-of-expanding/
৪৪) ‘ব্রিকস টু আনভেইল দ্য মেন ক্রাইটেরিয়া’, রাশিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল
৪৫) আন্দ্রেই কর্তুনভ, ‘ব্রিকস: বিটুইন ব্রডেনিং অ্যান্ড ডিপেনিং’, রাশিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল, অগস্ট ২১, ২০২৩, https://russiancouncil.ru/en/analytics-and-comments/analytics/brics-between-broadening-and-deepening/
৪৬) ফিয়োদর লুকিয়ানভ, ‘Лучше меньше? Нет, больше! (ইজ লেস বেটার? নো, মোর)’, রাশিয়া ইন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স, অগস্ট ২৫, ২০২৩, https://globalaffairs.ru/articles/luchshe-menshe-net-bolshe/
৪৭) মিখনেভিচ, ‘দ্য ব্রিকস পাথ’
৪৮) বোর্দাশেভ, ‘ব্রিকস অ্যাট আ হিস্টোরিক্যাল টার্নিং পয়েন্ট’
৪৯) মিখনেভিচ, ‘দ্য ব্রিকস পাথ’
৫০) বোর্দাশেভ, পানোভা এবং সাসলভ, ‘ব্রিকস অ্যান্ড দ্য রাইভ্যালরি প্যান্ডেমিক’
৫১) বাবেভ এবং লাভরভ, ‘বোথ ইন ব্রিদথ অ্যান্ড ডেপথ’
৫২) লুকিয়ানভ, ‘ইজ লেস বেটার?’
৫৩) বোর্দাশেভ, ‘ব্রিকস অ্যাট আ হিস্টোরিক্যাল টার্নিং পয়েন্ট’
৫৪) ফিয়োদর লুকিয়ানভ, ‘Бренд с франшизой (ফ্র্যাঞ্চাইজড ব্র্যান্ড),’ রাশিয়া ইন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স, অগস্ট ২৮, ২০২৩, https://globalaffairs.ru/articles/brend-s-franshizoj/. দ্রষ্টব্য কোর্তুনভ, ‘ব্রিকস: বিটুইন ব্রডেনিং অ্যান্ড ডিপেনিং’
৫৫) বাবেভ এবং লাভরভ, ‘বোথ ইন ব্রিদথ অ্যান্ড ডেপথ’
৫৬) থিয়াগো দে আরাগাও, ‘ব্রিকস: আ চায়না-লেড গ্রুপ লুকিং ফর রেলেভ্যান্স’, দ্য ডিপ্লোম্যাট, অগস্ট ২৮, ২০২৩, https://thediplomat.com/2023/08/brics-a-china-led-group-looking-for-relevance/
৫৭) অলিভার স্তাঙ্কেল, ‘হাউ ব্রিকস এক্সপ্যানশন উইল ইমপ্যাক্ট সাউথ আমেরিকা’, আমেরিকাজ কোয়ার্টার্লি, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://americasquarterly.org/article/how-brics-expansion-will-impact-south-america/
৫৮) এএফপি, ‘আর্জেন্তিনাজ ব্রিকস মেম্বারশিপ ইন ডাউট অ্যাজ অপোজিশন রিজেক্টস মুভ’, বুয়েনস আয়েরেস টাইমস, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://www.batimes.com.ar/news/argentina/argentinas-brics-membership-in-doubt-as-opposition-rejects-move.phtml
৫৯) মানুয়েলা টোবিয়াজ, ‘আর্জেন্তিনা’জ টপ প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যান্ডিডেটস রিজেক্ট ব্রিকস মেম্বারশিপ’, ব্লুমবার্গ, অগস্ট ২৫, ২০২৩, https://news.yahoo.com/argentina-top-presidential-candidates-reject-202947963.html
৬০) ভার্গব আচার্য, ‘হোয়াট ইজ ব্রিকস, হুইচ কান্ট্রিজ ওয়ান্ট টু জয়েন অ্যান্ড হোয়াই?’ রয়টার্স, অগস্ট ২২, ২০২৩, https://www.reuters.com/world/what-is-brics-who-are-its-members-2023-08-21/
৬১) জিনহুয়া, ‘ফুল টেক্সট অব চায়না’জ পলিসি পেপার অন লাতিন আমেরিকা অ্যান্ড দ্য ক্যারিবিয়ান’, জিনহুয়া, সর্বশেষ সংস্করণ নভেম্বর ২৪, ২০১৬, https://english.www.gov.cn/archive/white_paper/2016/11/24/content_281475499069158.htm
৬২) ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার, ‘ট্রেড ম্যাপ’, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার, https://www.trademap.org/Index.aspx
৬৩) অনলাইন নিউজ এডিটর, ‘মেক্সিকো ওন্ট জয়েন ব্রিকস, প্রেসিডেন্ট সে’, লা প্রেনজা লাতিনা, অগস্ট ৮, ২০২৩, https://www.laprensalatina.com/mexico-wont-join-brics-president-says/
৬৪) গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া, মিনিস্ট্রি অফ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স ‘ফরেন অ্যাফেয়ার্স রেকর্ড ১৯৬২’, (http://mealib.nic.in/?pdf2550?000).
৬৫) শিশির গুপ্ত, ‘পিএম মোদী টু অ্যাটেন্ড ব্রিকস সামিট ইন জোহানেসবার্গ অন অগস্ট ২২’, হিন্দুস্থান টাইমস, অগস্ট ৩, ২০২৩, https://www.hindustantimes.com/india-news/pm-narendra-modi-to-attend-brics-summit-in-johannesburg-on-aug-22-101691077312022.html
৬৬) ‘হাউ ব্রিকস ওয়াজ বর্ন, হাউ ইট ওভারটুক জি৭, অ্যান্ড হোয়্যার ইট ইজ হেডেড’, দি ইকোনমিক টাইমস, অগস্ট ২১, ২০২৩,
৬৭) জো হার্পার, ‘হোয়েন ব্রিকস হিট আ ওয়াল’, ডি ডব্লিউ, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
৬৮) উইলিয়াম পোমেরাঞ্জ, হোয়াই রাশিয়া নিডস দ্য ব্রিকস, গ্লোবাল পাবলিক স্কোয়্যার, ২০১৩
৬৯) সমীর সরন, ইন্ডিয়া’জ কনটেম্পোরারি প্লুরিল্যাটেরালিজম, ইন ডি ই মালোনে, সি আর মোহন এবং এস রাঘবন (সম্পাদনা), দি অক্সফোর্ড হ্যান্ডবুক অফ ইন্ডিয়ান ফরেন পলিসি, ২০১৫, অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস
৭০) ‘ব্রিকস লিডারস’ ডিক্লেয়ারেশন’, মডার্ন ডিপ্লোমেসি, অগস্ট ২৫, ২০২৩,
https://moderndiplomacy.eu/2023/08/25/brics-leaders-declaration/
৭১) জো বাভিয়ার, ‘ব্রিকস এক্সপ্যানশন হোপফুলস সিক টু রিব্যালান্স ওয়ার্ল্ড অর্ডার', রয়টার্স, অগস্ট ২১, ২০২৩,
৭২) ক্লদিয়া কিয়াপ্পা, ‘সিক্স নিউ কান্ট্রিজ টু জয়েন ব্রিকস, ইনক্লুডিং ইরান অ্যান্ড সৌদি আরবিয়া’, পলিটিকো, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://www.politico.eu/article/brics-summit-south-africa-six-new-countries-join-alliance/
৭৩) সুমায়া ইসমাইল, ‘আ ওয়াল অব ব্রিকস: দ্য সিগনিফিক্যান্স অফ অ্যাডিং সিক্স নিউ মেম্বারস টু দ্য ব্লক’, আল জাজিরা, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://www.aljazeera.com/news/2023/8/24/analysis-wall-of-brics-the-significance-of-adding-six-new-members
৭৪) রাক্সান্দ্রা আয়োরদাশে, ‘ইমার্জিং ইকোনমিজ গ্রুপ ব্রিকস ইনভাইটস সিক্স নিউ মেম্বারস, ইনক্লুডিং সৌদি আরবিয়া অ্যান্ড ইরান’, সিএনবিসি, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://www.cnbc.com/2023/08/24/emerging-markets-group-brics-invites-6-new-members-including-saudi-arabia-and-iran.html
৭৫) রাচেল স্যাভেজ, ‘হোয়াট ইজ আ ব্রিকস কারেন্সি অ্যান্ড ইন দি ইউ এস ডলার ইন ট্রাবল?’, রয়টার্স, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://www.reuters.com/markets/currencies/what-is-brics-currency-could-one-be-adopted-2023-08-23/
৭৬) থুসো খুমালো, ‘ব্রিকস এক্সপ্যানশন স্পার্কস জয় ইন আফ্রিকা’, ডি ডব্লিউ, অগস্ট ২৫, ২০২৩, https://www.dw.com/en/brics-expansion-sparks-joy-in-africa/a-66633777
৭৭) লেফেন্তসে নোকানেং, ‘ব্র্যান্ড সাউথ আফ্রিকা ইভ্যালুয়েটস ফিফটিন্থ ব্রিকস সামিট’, বিজনেস পোস্ট, অগস্ট ২৮, ২০২৩, https://businesspost.ng/featureoped/brand-south-africa-evaluates-15th-brics-summit/
৭৮) ‘ইজিপ্ট বিকামস আ মেম্বার অব দ্য ব্রিকস নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক’, সিল্ক রোড ব্রিফিং, মার্চ ২৩, ২০২৩, https://www.silkroadbriefing.com/news/2023/03/23/egypt-becomes-a-member-of-the-brics-new-development-bank/
৭৯) দীপাঞ্জন রায়চৌধুরী, ‘ইজিপ্ট জয়েনস ব্রিকস ব্যাঙ্ক অ্যাজ নিউ মেম্বার উইকস আফটার প্রেসিডেন্ট সিসি’জ ইন্ডিয়া ভিজিট’, দি ইকোনমিক টাইমস, মার্চ ২৩, ২০২৩, https://economictimes.indiatimes.com/news/international/world-news/egypt-joins-brics-bank-as-new-member-weeks-after-president-sisis-india-visit/articleshow/98946635.cms?utm_source=contentofinterest&utm_medium=text&utm_campaign=cppst
৮০) ইথিওপিয়া ২০৩০: আ কান্ট্রি ট্রান্সফর্মড? অপশনস ফর আ নেক্সট জেনারেশন অব রিফর্মস, ওয়ার্কিং পেপার সিরিজ, নম্বর ২, ২০২২, ইউএনডিপি, ডিসেম্বর ২০২২, https://www.undp.org/sites/g/files/zskgke326/files/2023-03/UNDP%20Ethiopia_Working%20paper%20series%202.pdf
৮১) ‘সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট হাইলাইটস অ্যাচিভমেন্টস অ্যাট আফ্রিকান সাউথ-সাউথ ফোরাম’, আরব নিউজ, জানুয়ারি ২১, ২০২৩, https://www.arabnews.com/node/2236381/business-economy
৮২) ‘ইজ ডিবি অ্যান্ড এএফডিবি প্রেসিডেন্ট আই ফার্দার কোঅপারেশন টু ট্যাকল গ্লোবাল চ্যালেঞ্জেস’, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, মে ১১, ২০২৩, https://www.isdb.org/news/isdb-and-afdb-presidents-eye-further-cooperation-to-tackle-global-challenges
৮৩) জোনাথন ফেন্টন-হার্ভে, ‘সৌদি ইনভেস্টমেন্ট ইন আফ্রিকা সার্জেস অ্যাজ ইরান’স ইনফ্লুয়েন্স স্পাটারস’, গালফ ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম, জানুয়ারি ৫, ২০২৩, https://gulfif.org/saudi-investment-in-africa-surges-as-irans-influence-sputters/
৮৪) গুলাম বালিম, ‘গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল পয়েজড টু প্লে বিগ রোল ইন আফ্রিকা’স ফিউচার’, বিজনেস ডে, জুলাই ১৭, ২০২৩
৮৫) জয় চেপটু, ‘তানজানিয়া টু এন্টার ইনটু অ্যান এগ্রিমেন্ট উইথ ডিপি ওয়ার্ল্ড ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব দার এস সালাম পোর্ট’, মোয়ানজো টিভি, জুন ৬, ২০২৩, https://mwanzotv.com/2023/06/06/tanzania-to-enter-into-an-agreement-with-dp-world-for-the-development-of-dar-es-salaam-port/
৮৬) শেরিফ তারেক, ‘মেরিটাইম ইনভেস্টমেন্ট টাইটেনস ইউএই’জ গ্রিপ অন দ্য কন্টিনেন্ট’, দি আফ্রিকা রিপোর্ট, জুলাই ১৪, ২০২২, https://www.theafricareport.com/222929/africa-maritime-investment-tightens-uaes-grip-on-the-continent/
৮৭) ‘প্রেসিডেন্ট: প্রোমোশন অব টাইজ উইথ আফ্রিকা টপ প্রায়োরিটি’, ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৪, https://en.irna.ir/news/2637793/President-Promotion-of-ties-with-Africa-top-priority
৮৮) ডক্টর মোহাম্মদ আল-সুলামি, ‘হাউ ইরান ইজ কোর্টিং আফ্রিকা টু কনফ্রন্ট দি ওয়েস্ট’, আরব নিউজ, অগস্ট ৭, ২০২৩, https://www.arabnews.com/node/2351026
৮৯) রাজীব ভাটিয়া, ‘ব্রিকস ২.০: অ্যাডিশন অব নিউ মেম্বারস উইল মেক মোর রুম ফর ডায়লগ’, দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, অগস্ট ২৮, ২০২৩, https://indianexpress.com/article/opinion/columns/brics-2-0-summit-johannesburg-g7-emerging-economies-covid-galwan-clashes-8912182/
৯০) ভাটিয়া, ‘ব্রিকস ২.০: অ্যাডিশন অব নিউ মেম্বারস উইল মেক মোর রুম ফর ডায়লগ’
৯১) ‘সৌদি আরবিয়া অ্যাপ্রিশিয়েটস ব্রিকস’ ইনভেশন, উইল টেক ‘অ্যাপ্রোপ্রিয়েট ডিসিশন’,’ রয়টার্স, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://www.reuters.com/article/brics-summit-saudi-invitation-idINS8N39I02P
৯২) এলিস গাইয়েভোরি, ‘হাউ ব্রিকস ইজ লুকিং টু চ্যালেঞ্জ দি ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড অর্ডার ইন দ্য মিডল ইস্ট’, মিডল ইস্ট আই, অগস্ট ২৪, ২০২৩, https://www.middleeasteye.net/news/brics-challenge-western-order-middle-east-how
৯৩) ফারনাজ ফাসিহি, ‘উইথ ব্রিকস ইনভাইট, ইরান শ্রাগস অফ আউটকাস্ট স্টেটাস ইন দি ওয়েস্ট’, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস, অগস্ট ২৫, ২০২৩, https://www.nytimes.com/2023/08/25/world/middleeast/iran-brics.html
৯৪) হুসেইন মুবারক, ‘সৌদি আরবিয়া অ্যান্ড ইরান রিস্টোর রিলেশনস: আ ভিক্টরি অব নেসেসিটি’, দি উইলসন সেন্টার, জুন ৫, ২০২৩, https://www.wilsoncenter.org/article/saudi-arabia-and-iran-restore-relations-victory-necessity
৯৫) সামার সইদ, শা হুয়া এবং ডিয়ন নিসসেনবাম, ‘সৌদি আরবিয়া আইজ চাইনিজ বিড ফর নিউক্লিয়ার প্লান্ট’, দি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, অগস্ট ২৫, ২০২৩, https://www.wsj.com/world/middle-east/saudi-arabia-eyes-chinese-bid-for-nuclear-plant-e4a56f
৯৬) ‘রাইসি পুশেস অ্যান্টি-ইউএস অ্যাজেন্ডা ইন ব্রিকস অ্যাজ ইরান সেলিব্রেটস অ্যাসেনশন’, আল মনিটর, অগস্ট ২৬, ২০২৩, https://www.al-monitor.com/originals/2023/08/raisi-pushes-anti-us-agenda-brics-iran-celebrates-ascension
৯৭) সচ্চিদানন্দ শুক্লা, ‘হোয়াই ‘ডি-ডলারাইজেশন’ ইজ ইমিনেন্ট’, দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, মার্চ ১৭, ২০২২, https://indianexpress.com/article/opinion/columns/why-de-dollarisation-is-imminent-us-dollar-russia-7823308/
৯৮) ক্রিস্টিন পেরেজ, ‘হোয়াট ডাজ রাশিয়া’জ রিমুভাল ফ্রম সুইফট মিন ফর দ্য ফিউচার অব গ্লোবাল কমার্স’, ফরেন পলিসি, মার্চ ৮, ২০২২, https://foreignpolicy.com/2022/03/08/swift-sanctions-ukraine-russia-nato-putin-war-global-finance/
৯৯) নীতিন পাই অন টুইটার, অগস্ট ২৬, ২০২৩, https://twitter.com/acorn/status/1695330789586780661?s=20
১০০) অ্যালেক্স ললার, ‘ইরান’স অয়েল এক্সপোর্টস হিট ফাইভ-স্টার হাই অ্যাজ ইউএস হোল্ডস নিউক্লিয়ার টকস’, রয়টার্স, জুন ১৭, ২০২৩, https://www.reuters.com/markets/commodities/irans-oil-exports-output-hit-five-year-highs-us-holds-nuclear-talks-2023-06-16/
১০১) প্যাট্রিক উইন্টুর এবং বেথান ম্যাককারনান, ‘ইয়েমেন: ইউএই কনফার্মস উইথড্রয়াল ফ্রম পোর্ট সিটি অব হোদেইদাহ’, দ্য গার্ডিয়ান, জুলাই ৯, ২০১৯, https://www.theguardian.com/world/2019/jul/09/yemen-uae-confirms-withdrawal-from-port-city-of-hodeidah
১০২) ইমাদেদ্দিন বাদি, ‘দি ইউএই ইজ মেকিং আ প্রিকারিয়াস শিফট ইন ইটস লিবিয়া পলিসি: হিয়ার’জ হোয়াই’, দি আটলান্টিক কাউন্সিল, অক্টোবর ২৭, ২০২২, https://www.atlanticcouncil.org/blogs/menasource/the-uae-is-making-a-precarious-shift-in-its-libya-policy-heres-why/
১০৩) নাসির হাদিয়ান, ‘ইরান অ্যান্ড চায়না: অ্যান ইরানিয়ান ভিউ’, ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট ফর পিস, জুন ২৮, ২০২৩, https://iranprimer.usip.org/blog/2023/jun/27/iran-china-iranian-view
১০৪) ‘ইন্ডিয়া, চায়না হোল্ড নাইন্টিনথ রাউন্ড কর্পোরালস কম্যান্ডার লেভেল টকস টু এন্ড এলএসি স্ট্যান্ড অফ’, দ্য হিন্দু, অগস্ট ১৪, ২০২৩, https://www.thehindu.com/news/national/india-china-hold-19th-round-of-corps-commander-level-talks-to-end-lac-stand-off/article67195006.ece
১০৫) রবার্ট র্যাপিয়ের, ‘ইউএস এনার্জি ইন্ডিপেন্ডেন্স সোরস টু হাইয়েস্ট লেভেল ইন ওভার ৭০ ইয়ার্স’, ফোর্বস, মে ২, ২০২৩, https://www.forbes.com/sites/rrapier/2023/05/02/us-energy-independence-soars-to-highest-levels-in-over-70-years/?sh=68bb58c977fd
১০৬) নাতাশা তুরাক, ‘বাইডেন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আস্কড সৌদি টু পোস্টপন ওপিইসি ডিসিশন বাই আ মান্থ, সৌদি সেজ’, সিএনবিসি, অক্টোবর ১৩, ২০২২, https://www.cnbc.com/2022/10/13/biden-admin-asked-saudi-arabia-to-postpone-opec-cut-by-a-month-saudis-say.html
১০৭) খালেদ হামাদে, ‘হোয়াট ইজ বিহাইন্ড ওয়াশিংটন’স স্টেপড-আপ গালফ প্রেজেন্স’, আল মাজাল্লা, অগস্ট ২১, ২০২৩, https://en.majalla.com/node/297871/politics/what-behind-washingtons-stepped-gulf-presence
১০৮) সুকল্প শর্মা, ‘ইন্ডিয়া রিল্যায়ান্স অন ইমপোর্টেড ক্রুড অয়েল অ্যাট রেকর্ড হাই অব ৮৭.৩% ইন এফওয়াই২৩’, দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এপ্রিল ২৫, ২০২৩, https://indianexpress.com/article/business/commodities/india-reliance-on-imported-crude-oil-at-record-high-of-87-3-in-fy23-8573996/
১০৯) জাস্টিন দারগিন, ‘বিয়ন্ড ‘গ্রিন প্লেজেস’: সৌদি আরবিয়া অ্যান্ড সোসাইটি-সেন্টারড ক্লাইমেট রিফর্মস’, কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস, জুলাই ৬, ২০২৩
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Professor Harsh V. Pant is Vice President – Studies and Foreign Policy at Observer Research Foundation, New Delhi. He is a Professor of International Relations ...
Read More +Samir Bhattacharya is an Associate Fellow at ORF where he works on geopolitics with particular reference to Africa in the changing global order. He has a ...
Read More +Nivedita Kapoor is a Post-doctoral Fellow at the International Laboratory on World Order Studies and the New Regionalism Faculty of World Economy and International Affairs ...
Read More +Kalpit A Mankikar is a Fellow with Strategic Studies programme and is based out of ORFs Delhi centre. His research focusses on China specifically looking ...
Read More +Kabir Taneja is a Deputy Director and Fellow, Middle East, with the Strategic Studies programme. His research focuses on India’s relations with the Middle East ...
Read More +Hari Seshasayee is a visiting fellow at ORF, part of the Strategic Studies Programme, and is a co-founder of Consilium Group. He previously served as ...
Read More +