Published on Jun 20, 2023 Updated 0 Hours ago

সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে অবাধ সংযোগ গড়ে তুলতে বিমস্টেক পরিবহণ সংযোগ প্রকল্পগুলির বাধা দূর করতে হবে

সংযোগ বৃদ্ধি: বিমস্টেকের ট্রান্সপোর্টেশন মাস্টার প্ল্যানের অসম্পূর্ণতা দূর করা

পরিবহণ সংযোগের জন্য বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন-এর (বিমস্টেক) মাস্টার প্ল্যান দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সদস্য দেশগুলির জন্য বিপুল তাৎপর্য বহন করে। আঞ্চলিক সংহতির প্রসার, বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে মাস্টার প্ল্যানটি বিমস্টেক সদস্য দেশগুলির মধ্যে পরিবহণ সংযোগের বিকাশ ও তাকে শক্তিশালী করার জন্য একটি সর্বাত্মক কাঠামো উপস্থাপন করেছে।

২০২৩ সালের ২০ মার্চ ভার্চুয়ালি আয়োজিত বিমস্টেক ট্রান্সপোর্ট কানেক্টিভিটি ওয়ার্কিং গ্রুপের (বিটিসিডব্লিউজি) চতুর্থ বৈঠকে সমস্ত বিমস্টেক সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি যোগ দেন। এটি এই অঞ্চলে পরিবহণ সংযোগ জোরদার করার লক্ষ্যে তাদের সম্মিলিত অঙ্গীকারই তুলে ধরে। বৈঠকে বিমস্টেক মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

২০২২ সালের ৩০ মার্চ পঞ্চম বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে গৃহীত এই মাস্টার প্ল্যান সদস্য দেশগুলির মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ বৃদ্ধির জন্য একটি নীল নকশা হিসাবে কাজ করে। অংশগ্রহণকারীরা চিহ্নিত প্রকল্পগুলির তালিকা সংস্কার এবং হালনাগাদ করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী তৈরি করতে সম্মত হয়েছেন। এটি বিমস্টেকের তৎপরতা এবং সময়ের সঙ্গে মানিয়ে চলার সক্ষমতাই প্রমাণ করে। পরিকল্পনাটি পরিকাঠামোগত ব্যবধান পূরণ করা, নিয়ন্ত্রক  কাঠামোকে সরল করা এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। এই সক্রিয় পদ্ধতি সুনিশ্চিত করে যে, মাস্টার প্ল্যানটি প্রাসঙ্গিক থাকবে এবং আঞ্চলিক গতিশীলতার বিকাশের নিরিখে প্রয়োজন অনুযায়ী সাড়া দিতে পারবে।

আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য সহজতর করা এবং সংযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে এই চুক্তি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমন্বিতকরণ এবং ব্যবসায় একটি উল্লেখযোগ্য উৎসাহ প্রদান করবে।

এ প্রসঙ্গে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হল বিমস্টেক ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বিতীয় বৈঠক আহ্বানের সিদ্ধান্ত, যা এই বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই সমাবেশটি মোটর যানবাহন চুক্তির খসড়া নিয়ে আলোচনার উপর মনোনিবেশ করবে, যা বিমস্টেক অঞ্চলের মধ্যে সীমান্ত পার করে যানবাহন এবং পণ্য পরিবহণ সহজতর করে তোলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য সহজতর করা এবং সংযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে এই চুক্তি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সংহতি এবং ব্যবসায় একটি উল্লেখযোগ্য উৎসাহ প্রদান করবে।

মাল্টিমোডাল উপাদান

মাস্টার প্ল্যানের নির্মাণ আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং সংযোগকে জোরদার করার লক্ষ্যে বিমস্টেক সদস্য রাষ্ট্রগুলির দৃঢ় রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা প্রতিফলিত করার পাশাপাশি সংযোগ শৃঙ্খলের সর্বোচ্চ সুবিধা লাভ করতে সড়ক, রেলপথ, বন্দর, বিমানপথ এবং অভ্যন্তরীণ নৌপথ-সহ একটি মাল্টিমোডাল পরিবহণ নেটওয়ার্কের প্রয়োজনীয়তাকেও স্বীকৃতি দেয়।

বিমস্টেক অঞ্চল জুড়ে পণ্য ও মানুষের মসৃণ পরিবহণ বিভিন্ন পরিবহণ পদ্ধতি ব্যবহার করে সম্পন্ন করা যেতে পারে, যা পরিবহণের খরচ কমিয়ে দেবে। ড্রাই পোর্ট বা ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপোগুলিকে (আইসিডি) কাজে লাগানো এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কার্যকর হতে পারে। এর পাশাপাশি একটি বহুজাতিক, মাল্টিমোডাল ট্রানজিট পরিবহণ করিডোর প্রতিষ্ঠার মতো আরও উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ – যেমন ভারতের উত্তর-পূর্ব, মায়ানমার এবং অবশিষ্ট ভারতের মধ্যে সংযোগ – এই অঞ্চলের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগে আরও অবদান রাখতে পারে।

একটি সম্ভাব্য সময়রেখা-সহ মাস্টার প্ল্যানে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে এবং তার ধারণা দেওয়া হয়েছে। তবে বিমস্টেক মাস্টার প্ল্যানে উপস্থাপিত সময়সূচি এবং বর্তমান অগ্রগতির মধ্যে পার্থক্যও বেশ স্পষ্ট (দ্রষ্টব্য সারণি ১)।

সারণি ১: মাল্টিমোডাল এবং ইন্টারমোডাল পরিবহণ উন্নয়নের জন্য পরিকল্পিত ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প

প্রকল্পের বিবরণ

বিমস্টেক উন্নয়ন যুক্তি

২০১৮ সালের নিরিখে আনুমানিক খরচ (মিলিয়ন মার্কিন ডলারে)

অর্থায়নের সংস্থা (আনুমানিক)

আনুমানিক সমাপ্তির বছর

বর্তমান অবস্থা

দ্বিতীয় রেল-সংযুক্ত আইসিডি

ঢাকার ধীরাশ্রমে,

গাজীপুর, বাংলাদেশ

ঢাকার প্রথম আইসিডি

ক্ষমতা ছাপিয়ে যাওয়ার দরুন সড়ক ও (চট্টগ্রাম) বন্দরে সৃষ্ট যানজট থেকে মুক্তি

২০০ এডিবি এবং পিপিপি ২০২০ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ২০২৪ সালে

বাংলাদেশের বিদ্যমান সড়ক ও জাতীয় মহাসড়ক সম্প্রসারণের মাধ্যমে

অর্থনৈতিক অঞ্চল সংলগ্ন জমি ও

সমুদ্রবন্দর থেকে সড়ক শৃঙ্খলের নির্মাণ

মাল্টিমোডাল

এবং ইন্টারমোডাল

সংযোগ ব্যবস্থাকে সহজতর করে তোলা

নির্ধারণের অপেক্ষা চিহ্নিতকরণের অপেক্ষায় পরিকল্পনাসাপেক্ষ পরিকল্পনার স্তরে
ভুটানে গেলেফু ট্রান্সপোর্ট হাব নির্মাণ বিমস্টেক বাণিজ্য ও পরিবহণের জন্য প্রবেশ ও বহির্গমন পথগুলির বৈচিত্র্যকরণ এখনও পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট নয় চিহ্নিতকরণের অপেক্ষায় ২০১৮-২০২৮ ২০২২ সালে প্রস্তুতি পর্বের কাজ শুরু হয়
ইয়াঙ্গন-দাগন আইসিডি, মায়ানমার

কন্টেনার ট্রাফিক পরিচালনা করার জন্য মাল্টিমোডাল এবং

ইন্টারমোডাল ফেসিলিটি গড়ে তোলা

১৬ বেসরকারি ২০২১ কোনও তথ্য উপলব্ধ নয়

ইয়াঙ্গন অঞ্চলের ড্রাই পোর্ট

(ইয়োথাগি), মায়ানমার

ইয়াঙ্গন বিমানবন্দরকে সংযুক্ত করা,

ইয়াঙ্গন-বাগো রেল লাইন এবং

অবশেষে হান্থাওয়াদ্দি

বিমানবন্দর (ইয়াঙ্গন

অভ্যন্তরীণ জলপথ বন্দরগুলি-সহ)

৪০ পিপিপি ২০১৯ ২০১৯ সালে ড্রাই পোর্টের কাজ শেষ হয়; সংযুক্তিকরণের কাজ বাকি

মান্দালয় রিজিয়ন ড্রাই পোর্ট

(মিতেঙ্গে), মায়ানমার

মান্দালয় ও

ইয়াঙ্গন রেল লাইনের সংযুক্তিকরণ

৪০ পিপিপি ২০১৯ ২০১৯ সালে ড্রাই পোর্টের কাজ শেষ হয়; সংযুক্তিকরণের কাজ বাকি

কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট

পরিবহণ প্রকল্প, ভারত-মায়ানমার

দীর্ঘতর সড়কপথের বিকল্প হিসেবে অন্তর্দেশীয় জলপথ পরিবহণের সম্ভাব্যতা কজে লাগানো ৪৫৩ ইন্ডিয়ান মিনিস্ট্রি অফ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স ২০২০ ২০২৩ সালের মে মাসে সিতওয়ে পোর্ট কার্যক্ষম হয়ে ওঠে; ১১০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ অসম্পূর্ণ রয়েছে

ওয়ার্তায়ার ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে

(উত্তর-পশ্চিম ইয়াঙ্গন) লজিস্টিক হাব এবং ট্রাক/ট্রেলার টার্মিনাল স্থাপনা

কন্টেনার ট্রাফিক পরিচালনা করার জন্য মাল্টিমোডাল এবং

ইন্টারমোডাল ফেসিলিটি গড়ে তোলা

১৫-২০ পিপিপি পরিকল্পনা সাপেক্ষ ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যায় (কোনও কারণ দর্শানো হয়নি)

মায়ানমারে নিরবচ্ছিন্ন মাল্টিমোডাল এবং ইন্টারমোডাল

চলাচলের জন্য সফটওয়্যার বিন্যাসের গঠন

(যেমন, সুরক্ষিত সিল ব্যবহার, প্রোটোকল, অনলাইন ক্লিয়ারেন্সের জন্য ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন অথবা আইসিডি এবং বন্দরগুলির মধ্যে ইডিআই সংযোগ

মাল্টিমোডাল

এবং ইন্টারমোডাল

সংযোগ ব্যবস্থা

চিহ্নিত হয়নি অনির্ধারিত তথ্য উপলব্ধ নয়

সূত্র: পরিবহণ সংযোগের উপর বিমস্টেক মাস্টার প্ল্যানের উপর ভিত্তি করে লেখকদের নিজস্ব

যেসব বাধা রয়ে গেছে

আর্থিক সীমাবদ্ধতা, নিয়ন্ত্রক প্রতিবন্ধকতা, সমন্বয়ের অভাব, রাজনৈতিক সমস্যা বা প্রযুক্তিগত অসুবিধার মতো বেশ কয়েকটি কারণ তালিকাভুক্ত প্রকল্পের সময়সীমা বিলম্বিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

  • ধীরাশ্রম আইসিডি

পরিকল্পিত প্রকল্পগুলির মধ্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ২০১৩ সাল থেকে বিলম্বের পর গাজীপুরের ধীরাশ্রমে বাংলাদেশের বৃহত্তম ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপো (আইসিডি) নির্মাণের কাজ ২০২৪ সালে শুরু হতে চলেছে৷ বাংলাদেশ সরকার সফল ভাবে প্রকল্পের জন্য অর্থায়নের ব্যবস্থা করেছে। এর জন্য খরচ হবে প্রায় ৭৭৪.৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কমলাপুর আইসিডি বাংলাদেশে রেল সংযোগ-সহ একমাত্র আইসিডি এবং এই চত্বরে ও তার সংলগ্ন অঞ্চলের রাস্তা যানজটের সম্মুখীন হচ্ছে। এই সমস্যা দূর করার জন্য ধীরাশ্রম আইসিডি প্রকল্পের লক্ষ্য হল রেলের মাধ্যমে কন্টেনার পরিবহণ ক্ষমতা বাড়ানো।

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঢাকার কাছাকাছি ধীরাশ্রম আইসিডির কৌশলগত অবস্থান এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল করিডোর এটিকে একটি রিজিয়োনাল ট্রেড লজিস্টিক হাব হওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সুবিধা প্রদান করেছে।

বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারত সক্রিয় ভাবে দুই দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক কন্টেনার ট্রেন চালু করার ব্যবস্থা করছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সহজতর করার ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি মৌলিক গুরুত্ব বহন করে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে সড়ক পরিবহণেরই প্রাধান্য, যা মোট ওজনের প্রায় ৭০ শতাংশ বহন করে। এ ক্ষেত্রে রেল পরিবহণের একটি ন্যূনতম অংশ রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক কন্টেনার মালবাহী ট্রেনের নিয়মিত পরিচালনার অভাবও বিদ্যমান। বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারত সক্রিয় ভাবে দুই দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক কন্টেনার ট্রেন চালু করার ব্যবস্থা করছে।

  • পালেতোয়া থেকে জোরিনপুইয়ের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ পথ

মায়ানমারে অসংখ্য প্রকল্প যথেষ্ট বাধার সম্মুখীন হয়েছে এবং তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে উপলব্ধ তথ্যের অভাব স্পষ্ট। ২০২৩ সালের মে মাসে সিটওয়ে বন্দরের উদ্বোধন ভারতের উত্তর-পূর্বে দক্ষ পণ্য চলাচলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ করিডোর স্থাপন করে। কালাদান প্রকল্পের মাল্টিমোডাল উপাদানকে সম্পূর্ণ রূপে কাজে লাগানোর জন্য মায়ানমারের পালেতোয়া থেকে ভারতের জোরিনপুই পর্যন্ত রাস্তার অংশটি সম্পূর্ণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও দুর্ভাগ্যবশত নানা প্রতিবন্ধকতা এর অগ্রগতিতে বাধা দিচ্ছে।

এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধকতাগুলির মধ্যে রয়েছে সীমান্তের উভয় পাশে সংস্থাগুলির মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা, উঁচুনিচু ভূখণ্ড, জমির ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত সমস্যা এবং আঞ্চলিক জঙ্গি সমস্যার কারণে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ। মায়ানমারে ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং কোভিড-১৯ অতিমারি প্রকল্পের অগ্রগতিকে আরও ব্যাহত করেছে। চিন স্টেট, যার কাছাকাছি এই নির্মাণ কাজ চলছে, বর্তমানে সেটিকে একটি নো-সেফ জোন বা বিপজ্জনক অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং ফলে কাজ চালিয়ে যাওয়া একটি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে (এনইআর) পণ্য, গ্যাস বা তেল পরিবহণের ক্ষেত্রে, মায়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য সহজতর করার জন্য সিতওয়ে বন্দরের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা থাকলেও এনইআর-এ পৌঁছনোর খরচ পুষিয়ে যাওয়ার মতো একটি নিয়মিত পরিবহণ পথ হিসাবে এর কার্যকারিতা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। এই অনিশ্চয়তা প্রধানত ঘন ঘন বাল্ক ব্রেকিং এবং ট্রান্স-শিপমেন্ট কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্ভাব্য উচ্চ খরচ থেকে উদ্ভূত। সর্বোপরি, পালেতোয়া টার্মিনাল কার্যকর করা সিতওয়ে ও পালেতোয়ার সংযোগকারী কালাদান নদীর ড্রেজিং সম্পূর্ণ করার উপর নির্ভরশীল। ড্রেজিং সম্পূর্ণ হলেই পণ্যবাহী জাহাজগুলি সিতওয়ে বন্দরে পণ্য পরিবহণ করবে এবং পালেতোয়া টার্মিনালের কার্যকারিতার সুযোগ সীমিত করবে।

পরিবহণ পরিকাঠামো উন্নয়নে নিযুক্ত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, জ্ঞান এবং ক্ষমতা জোরদার করার জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় বিনিয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ।

সামনের পথ

প্রতিবন্ধকতাগুলি অব্যাহত থাকলেও বিমস্টেক অঞ্চলের মধ্যে সংযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে, পরিবহণ ব্যয় কমাতে এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বিদ্যমান উদ্যোগের তাৎপর্য স্বীকার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই লক্ষ্যে বিমস্টেক সদস্য দেশ এবং পরিবহণ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রাসঙ্গিক অংশীদারদের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। এর পাশাপাশি পরিবহণ পরিকাঠামো এবং উদ্যোগের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত আর্থিক, প্রযুক্তিগত এবং মানব  সম্পদের লভ্যতা সুনিশ্চিত করাও অত্যাবশ্যক।

পরিবহণ পরিকাঠামো উন্নয়নে নিযুক্ত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, জ্ঞান এবং ক্ষমতা জোরদার করার জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় বিনিয়োগ করাও একই রকম গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষতার ফাঁক এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাগুলি মোকাবিলা করা সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, কর্মশালা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে সম্ভব হতে পারে।

পরিকল্পিত সবকটি মাল্টিমোডাল সংযোগ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত উপলব্ধি এবং বাস্তবতার মধ্যে ব্যবধানকে বোঝাও  প্রয়োজনীয়। সময় মতো তথ্য আদান-প্রদান, নিয়মিত আলাপ-আলোচনা, বৈঠক এবং যৌথ পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া প্রকল্প বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে, সর্বোত্তম অনুশীলন ভাগ করে নিতে এবং অংশীদারদের মধ্যে আস্থা বাড়াতে সক্ষম হবে। বিমস্টেক সদস্য রাষ্ট্রগুলি নানা প্রতিবন্ধকতার মোকাবিলা, সমন্বয় বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক গতিশীলতার সঙ্গে অভিযোজিত হওয়ার মাধ্যমে একটি সুসংযুক্ত এবং সমৃদ্ধ অঞ্চল তৈরির উদ্দেশ্যে তাদের অভিন্ন লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারে।


শ্রীপর্ণা ব্যানার্জি অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের জুনিয়র ফেলো

অনসূয়া বসু রায়চৌধুরী অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Anasua Basu Ray Chaudhury

Anasua Basu Ray Chaudhury

Anasua Basu Ray Chaudhury is Senior Fellow with ORF’s Neighbourhood Initiative. She is the Editor, ORF Bangla. She specialises in regional and sub-regional cooperation in ...

Read More +
Sreeparna Banerjee

Sreeparna Banerjee

Sreeparna Banerjee is an Associate Fellow in the Strategic Studies Programme. Her work focuses on the geopolitical and strategic affairs concerning two Southeast Asian countries, namely ...

Read More +