Author : Soumya Bhowmick

Published on Jun 03, 2024 Updated 0 Hours ago

ব্রিকস-এর সাম্প্রতিক সম্প্রসারণের পর এটি অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গ্লোবাল সাউথের জন্য একটি সম্ভাব্য কণ্ঠস্বর হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

ব্রিকস প্লাস: বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে এগনো এবং প্রভাব বিস্তার করা

Source Image: Dilok Klaisataporn

এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ব্রিকস জোট একটি গতিশীল শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে যা নিছক সহযোগিতার বাইরেও প্রসারিত। এর মূলে রয়েছে একটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা, যেখানে দেশগুলি তাদের নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহার করে অবাধে বাণিজ্য করতে পারে, এবং এইভাবে বিদেশী সংস্থা ও মুদ্রার উপর নির্ভরতা হ্রাস করে। এই পদ্ধতিটি "ব্রিকস প্লাস" ধারণাতেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা অতিরিক্ত সদস্য দেশগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্রিকস গোষ্ঠীর সম্প্রসারণকে নির্দেশ করে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ইরান, মিশর, ইথিওপিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (ইউএই) সাম্প্রতিক অন্তর্ভুক্তি ব্রিকস-‌এর বিবর্তনে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক চিহ্নিত করে।

যদিও আর্জেন্টিনার ২০২৩ সালের শেষের দিকে সম্প্রসারিত ব্রিকস ক্লাবে যোগদান করার কথা ছিল, তবে নতুন নেতৃত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক পদক্ষেপ চিহ্নিত করে প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলির নীতিগত পরিবর্তনের কারণে তারা যোগদান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রসারণ এখন মধ্যপ্রাচ্যের তেল উৎপাদক এবং কিছু ঐতিহ্যবাহী মার্কিন মিত্রদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। যাই হোক, বর্তমানে লাতিন আমেরিকার প্রতিনিধিত্বের অভাব রয়েছে, বিশেষ করে আর্জেন্টিনা না-‌থাকায়। ব্রাজিলের নেতৃত্বের সঙ্গে আপস না করে আরও লাতিন আমেরিকার দেশকে ব্রিকসে আকৃষ্ট করা এখন চ্যালেঞ্জ।


২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ইরান, মিশর, ইথিওপিয়া, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (ইউএই) সাম্প্রতিক অন্তর্ভুক্তি ব্রিকস-‌এর বিবর্তনে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক চিহ্নিত করে।



ব্রিকসকে বোঝার ক্ষেত্রে
পশ্চিমীরা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তার জন্য এর বৈচিত্র্যময় সদস্যপদ এবং পশ্চিম-প্রধান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিকল্প প্রদানে ব্লকের ভূমিকাকে দায়ী করা হয়েছে। ব্রিকস সম্প্রসারণ অভূতপূর্ব আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, এবং যা একসময় উপেক্ষিত ছিল তা বিশ্বব্যাপী আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই সম্প্রসারণটি বর্ধিত অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বর্ধিত ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব, বৈচিত্রপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি এবং ব্রিকস কাঠামোর মধ্যে নতুন গতিশীলতার প্রতিশ্রুতি দেয়। যাই হোক, এটি যেমন বিভিন্ন স্বার্থকে সারিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করে, তেমনই বাণিজ্য ও নিরাপত্তার মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার সুযোগ তৈরি করে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সম্প্রসারণের প্রতি
সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। ভারত সর্বদাই এর পক্ষে সমর্থন জানিয়ে আসছে, এবং ভারত বিশ্বাস করে যে নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা ব্রিকসকে একটি সংগঠন হিসাবে উন্নত করবে।  ব্রিকস বিশ্বের অর্থনীতির এক-চতুর্থাংশের প্রতিনিধিত্ব করে, এটি কিছু শক্তিশালী উদীয়মান দেশ নিয়ে গঠিত, আর এই নতুন সদস্যেরা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক গতিশীলতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে আকার দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চিত্র ১: জি৭ ও সম্প্রসারিত ব্রিকস-এর মধ্যে তুলনা

সূত্র:
রয়টার্স, বিশ্ব ব্যা‌ঙ্ক


বাজার সম্প্রসারণ এবং সমসাময়িক ভূ-‌রাজনীতি

ব্রিকস সম্প্রসারণ নতুন বাজারে প্রবেশাধিকার এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করে বাজারের বৃদ্ধিকে সহজতর করে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের এই সম্ভাব্য বৃদ্ধি গোষ্ঠীর মধ্যে
অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে। ঝুঁকি কমাতে এবং আরও স্থিতিস্থাপক আর্থিক বাস্তুতন্ত্র তৈরি করতে অর্থনৈতিক স্বার্থের বৈচিত্র্যকরণ গুরুত্বপূর্ণ।

তার উপর, এই নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি টেবিলে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে। প্রতিটি দেশের অনন্য অর্থনৈতিক শক্তি, চ্যালেঞ্জ এবং উদ্ভাবনী পদ্ধতি আছে। সম্প্রসারিত ব্রিকসের আনা বৈচিত্র্য অর্থনৈতিক আলোচনাকে সমৃদ্ধ করে এবং ভাগ করে–নেওয়া শিক্ষা ও সহযোগিতার সুযোগ দেয়। এই বৈচিত্র্য একটি সম্পদ, যা বিশ্বের অর্থনৈতিক সমস্যা এবং সমাধানের বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গিকে উৎসাহিত করে।

এই নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করার ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব যথেষ্ট। সম্প্রসারণ বিশ্বব্যাপী বিষয়ে ব্রিকস-‌এর সম্মিলিত প্রভাবকে শক্তিশালী করে, এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ইস্যুতে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আরও শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। ব্রিকস প্লাস-‌এর বর্ধিত ভূ-রাজনৈতিক তাৎপর্য বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক নীতি গঠনে এবং ঐতিহ্যগত শক্তি কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে আরও বেশি সুবিধা এনে দিতে পারে।


সম্প্রসারিত ব্রিকসের আনা বৈচিত্র্য অর্থনৈতিক আলোচনাকে সমৃদ্ধ করে এবং ভাগ করে–নেওয়া শিক্ষা ও সহযোগিতার সুযোগ দেয়।



উপরন্তু, এই সম্প্রসারিত ব্রিকস সম্মিলিতভাবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও ভালভাবে প্রস্তুত। জলবায়ু পরিবর্তন, অতিমারি, সন্ত্রাসবাদ এবং আঞ্চলিক সংঘাতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট প্রয়োজন। বৈচিত্র্য ও সম্মিলিত শক্তি এই চ্যালেঞ্জগুলির আরও ব্যাপক ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া দিতে সক্ষম করে। এটি সংঘাতের মধ্যস্থতা, মানবিক সহায়তার সুবিধা, এবং অশান্তির সম্মুখীন অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রচার করার জন্য গোষ্ঠীর ক্ষমতা বাড়ায়।


সামষ্টিক অর্থনৈতিক গতিশীলতা

ব্রিকস প্লাসের মধ্যে বাণিজ্য গতিশীলতা ইতিমধ্যে ইতিবাচক বৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে। অন্য ব্রিকস সদস্যদের সঙ্গে চিনের বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক পারস্পরিক নির্ভরশীলতা এবং গোষ্ঠীর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য কার্যকলাপ ব্রিকস প্লাসের অর্থনৈতিক প্রাণশক্তি এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংযোগ বৃদ্ধিতে এর ভূমিকাকে আরও জোরদার করে।

মোট কথা, ব্রিকস-এ নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি যেমন তার অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক তাৎপর্যকে প্রসারিত করে, তেমনই বাজার সম্প্রসারণ, বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক আর্থিক বিষয়ে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ প্রদান করে। এই সম্প্রসারণ ব্রিকসকে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গ্লোবাল সাউথের জন্য একটি সম্ভাব্য কণ্ঠস্বর হিসাবে তুলে ধরে।


ব্রিকস সদস্যেরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও)  কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সম্পর্কিত বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি বিধিগুলি সাময়িকভাবে স্থগিত করার মতো উদ্যোগের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে সংহতি প্রদর্শন করেছে।



কোভিড-১৯ অতিমারিতে ব্রিকস-এর প্রতিক্রিয়ার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বলা যায়, এই বৈশ্বিক সংকট বেকারত্ব, দারিদ্র্য এবং অসমতাসহ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সূচনা করেছে। প্রতিক্রিয়া হিসাবে, ব্রিকস সদস্যেরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও)  কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সম্পর্কিত বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি বিধিগুলি সাময়িকভাবে স্থগিত করার মতো উদ্যোগের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে সংহতি প্রদর্শন করেছে। উপরন্তু,
ব্রিকস ভ্যাকসিন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ভ্যাকসিনের ক্রয়ক্ষমতা এবং ভ্যাকসিন, ডায়াগনস্টিকস ও থেরাপিউটিকসের জন্য আরও বেশি বাজারের সুযোগ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতির উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে।

এই সম্মিলিত প্রচেষ্টাগুলি প্রশংসনীয় হয়েছে, এবং সেখানে একটি স্বীকৃতি রয়েছে যে অতিমা্রি নিয়ন্ত্রণে এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে উন্নত করার জন্য অনেক কাজ সামনে রয়েছে। ২০২০ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার জিডিপি কমে যাওয়ার মধ্যে কোভিড-‌১৯-এর অর্থনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট ছিল। তবে, ২০২১ সালে একটি স্থির পুনরুদ্ধার পরিলক্ষিত হয়েছিল। অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ বৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে, এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কিছুটা পতন ঘটেছে।

এই চ্যালেঞ্জগুলির প্রতিক্রিয়া হিসাবে, ব্রিকস দেশগুলিকে পুনরুদ্ধারের সুবিধার্থে সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি সমন্বয় এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। একটি আন্তঃনির্ভর বিশ্বে আরও বিভক্তকরণ কেবল বিশ্বব্যাপী মন্দাকে আরও গভীর করবে এবং মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলবে। তাই, ব্রিকস দেশগুলিকে অবশ্যই অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে, এবং বিশ্বের অর্থনৈতিক শাসন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য জি২০, ডব্লিউটিও, বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতো কাঠামোর মধ্যে জড়িত হতে হবে। ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সি গ্লোবাল সাউথের দেশগুলির স্বার্থ ও উদ্বেগের প্রতিনিধিত্ব করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিল। প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক ফোরামের মধ্যে এই সহযোগিতা উন্নয়নশীল দেশগুলির অনন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এমন নীতি গঠনের জন্য অপরিহার্য।


যেহেতু ব্রিকস এই জটিলতাগুলির মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে, তাই কূটনৈতিক সহযোগিতা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং নিশ্চিত করে যে এটি তার বিভিন্ন সদস্যদের মধ্যে বিকশিত হচ্ছে এবং সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাবে।



এই গতিশীল এবং সদাপরিবর্তনশীল ভূচিত্রে ব্রিকস বিশ্ব বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চ্যালেঞ্জ নিঃসন্দেহে বিদ্যমান, কিন্তু সম্মিলিত শক্তি এবং ভাগ–করা উদ্দেশ্য ব্রিকসকে অপার সম্ভাবনার প্ল্যাটফর্ম করে তোলে। যেহেতু ব্রিকস এই জটিলতাগুলির মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে, তাই কূটনৈতিক সহযোগিতা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং নিশ্চিত করে যে এটি তার বিভিন্ন সদস্যদের মধ্যে বিকশিত হচ্ছে এবং সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাবে। ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উত্তেজনা এবং ঐতিহ্যবাহী বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলির সীমাবদ্ধতার মধ্যে ব্রিকস অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। চলতি সম্প্রসারণ এই গোষ্ঠীটির অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। যাই হোক, ব্রিকস-এর সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করে বৈচিত্র্যময় অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশার সমন্বয়ের ক্ষমতার উপর।




সৌম্য ভৌমিক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন সহযোগী ফেলো

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.